কিম জং উন আগামী সপ্তাহে চীনের রাজধানী বেইজিং যাবেন এবং সামরিক কুচকাওয়াজে অংশ নেবেন। এই অনুষ্ঠানে পুতিনও উপস্থিত থাকবেন। আমেরিকা ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে এই সফরটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
China: উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন আগামী সপ্তাহে চীনের রাজধানী বেইজিং সফরে যাচ্ছেন। এই সফরটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ কিম সাধারণত খুব কমই বিদেশ ভ্রমণ করেন। এবার তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তির ৮০তম বার্ষিকী উপলক্ষে চীনের একটি জমকালো সামরিক কুচকাওয়াজে অংশ নেবেন। চীন ও উত্তর কোরিয়ার সরকারি মিডিয়া বৃহস্পতিবার এটি নিশ্চিত করেছে। এই কুচকাওয়াজটি ৩ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে বিভিন্ন দেশের নেতারা অংশ নেবেন।
পুতিনও থাকবেন
এই সামরিক কুচকাওয়াজে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও উপস্থিত থাকবেন। রাশিয়া ও চীনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের মধ্যে পুতিনের উপস্থিতি আগে থেকেই আলোচনার বিষয়। এখন কিম জং উনের উপস্থিতি এই আয়োজনকে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ করে তুলবে। চীনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, মোট ২৬টি দেশের নেতারা এই কুচকাওয়াজে অংশ নেবেন। এই আয়োজনটি চীনের জন্য আন্তর্জাতিক স্তরে তাদের শক্তি প্রদর্শনের একটি বড় মঞ্চ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
শি জিনপিংয়ের আমন্ত্রণ
উত্তর কোরিয়ার সরকারি বার্তা সংস্থা জানিয়েছে যে, কিম জং উনকে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের পক্ষ থেকে বিশেষ আমন্ত্রণ পাঠানো হয়েছে। এই আমন্ত্রণের পরে কিম কুচকাওয়াজে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আরও লক্ষণীয় যে, ২০১৯ সালের পর কিম জং উনের এটি প্রথম চীন সফর হবে। এমন পরিস্থিতিতে তার উপস্থিতি এই অনুষ্ঠানে উত্তর কোরিয়া-চীন সম্পর্কের নতুন দিগন্তের ইঙ্গিত দেয়।
আমেরিকার জন্য বাড়তি উদ্বেগ
কিম জং উনের এই সফর এমন এক সময়ে হচ্ছে, যখন উত্তর কোরিয়া ও আমেরিকার মধ্যে সম্পর্ক খুবই উত্তেজনাপূর্ণ। উত্তর কোরিয়া ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, আমেরিকা বা দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে কোনো ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের কোনো ইচ্ছা তাদের নেই। তা সত্ত্বেও, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে म्युং বারবার আলোচনার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। কিন্তু চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার ক্রমবর্ধমান ঘনিষ্ঠতা আমেরিকার জন্য কূটনৈতিক ক্ষেত্রে নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
চীন-উত্তর কোরিয়া সম্পর্কের দৃঢ়তা
চীন দীর্ঘদিন ধরে উত্তর কোরিয়ার বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার এবং প্রধান সহায়ক দেশ। কিম জং উনের এই সফর উভয় দেশের সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করার ইঙ্গিত দেয়। চীন ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে বাণিজ্যিক ও সামরিক সহযোগিতা আগে থেকেই শক্তিশালী, কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমেরিকা ও পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে এই অংশীদারিত্ব আরও গভীর হতে দেখা যাচ্ছে।
পশ্চিমা দেশগুলোর দূরত্ব
চীনের পক্ষ থেকে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে আমেরিকা বা কোনো বড় পশ্চিমা ইউরোপীয় দেশের নেতার অংশ নেওয়ার সম্ভাবনা নেই। ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে রাশিয়া ও পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে ক্রমাগত মতভেদ রয়েছে। এই কারণে পশ্চিমা দেশগুলো এই কুচকাওয়াজ থেকে নিজেদের দূরে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে চীন, রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার একতা আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ তৈরি করতে পারে।