শিশুদের ডিহাইড্রেশন: কারণ, লক্ষণ ও প্রতিরোধের উপায়

শিশুদের ডিহাইড্রেশন: কারণ, লক্ষণ ও প্রতিরোধের উপায়

ছোট বাচ্চাদের, বিশেষ করে ১ বছরের কম বয়সী শিশুদের ডিহাইড্রেশনের ঝুঁকি বেশি থাকে। ডায়রিয়া, বমি, জ্বর বা পর্যাপ্ত দুধ না পাওয়ার কারণে শরীর দ্রুত তরল পদার্থ হারাতে পারে। এতে শিশু খিটখিটে হয়ে যেতে পারে, মুখ শুষ্ক হয়ে যেতে পারে এবং ডায়াপার দীর্ঘ সময় ধরে শুকনো থাকতে পারে। সময় মতো চিকিৎসা না করালে এই অবস্থা গুরুতর হতে পারে।

Dehydration: ডিহাইড্রেশন অর্থাৎ শরীরে জল এবং প্রয়োজনীয় তরল পদার্থের অভাব, ছোট বাচ্চা এবং বিশেষ করে ১ বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। তাদের শরীর দ্রুত জল এবং মিনারেল হারায় এবং ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হওয়ার কারণে পরিস্থিতি দ্রুত খারাপ হতে পারে। ডায়রিয়া, বমি, तेज জ্বর বা গরম আবহাওয়া এই সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। ডিহাইড্রেশনের লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে - শিশুর কান্না, ঠোঁট ও মুখ শুকিয়ে যাওয়া, চোখ থেকে জল না বেরোনো, ডায়াপার দীর্ঘ সময় ধরে শুকনো থাকা এবং মাথার নরম অংশ দেবে যাওয়া। এই ধরনের লক্ষণ দেখা গেলে দ্রুত ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করা জরুরি।

শিশুদের ডিহাইড্রেশনের সমস্যা কেন হয়?

ডিহাইড্রেশন মানে হল শরীরে জল এবং প্রয়োজনীয় তরল পদার্থের অভাব হওয়া। এই সমস্যা ছোট বাচ্চাদের মধ্যে বেশি হয় কারণ তাদের শরীর জল এবং মিনারেল বেশি সময় ধরে ধরে রাখতে পারে না। যখন বাচ্চাদের বার বার ডায়রিয়া হয়, বমি হয় বা तेज জ্বর আসে, তখন শরীর থেকে তরল পদার্থ দ্রুত বেরিয়ে যায়। এছাড়াও, যদি বাচ্চাকে পর্যাপ্ত দুধ বা জল না দেওয়া হয়, তাহলেও ডিহাইড্রেশনের সমস্যা হতে পারে।

গরম আবহাওয়া এই পরিস্থিতিকে আরও গুরুতর করে তুলতে পারে। রোদ এবং গরমে শিশুর শরীর ঘামের মাধ্যমে প্রচুর পরিমাণে জল হারায়। এছাড়াও সংক্রমণ হলেও তরল পদার্থের অভাব হতে পারে। এই কারণেই ছোট বাচ্চাদের ডিহাইড্রেশনের ঝুঁকি সবসময় থাকে।

ডিহাইড্রেশন কেন বিপজ্জনক?

শিশুদের শরীর দুর্বল থাকে এবং তাদের ইমিউন সিস্টেম সম্পূর্ণরূপে বিকশিত হয় না। যখন শরীরে জল এবং মিনারেলের অভাব হয়, তখন রক্ত ঘন হয়ে যেতে শুরু করে। এর ফলে শরীরের বিভিন্ন অংশে অক্সিজেন এবং পুষ্টিকর উপাদান সঠিক ভাবে পৌঁছাতে পারে না।

এই পরিস্থিতিতে শিশু দুর্বল হয়ে পড়ে এবং বার বার কাঁদতে শুরু করে। যদি এই অবস্থা দীর্ঘ সময় ধরে চলতে থাকে, তাহলে কিডনির উপরেও প্রভাব পড়তে পারে। কিডনি ঠিক মতো কাজ না করলে প্রস্রাব তৈরি হওয়া কমে যায়। একটানা ডিহাইড্রেশন থাকলে শিশুর বিকাশ বন্ধ হয়ে যেতে পারে এবং মস্তিষ্কের কার্যকারিতাও প্রভাবিত হতে পারে। গুরুতর পরিস্থিতিতে এই সমস্যা প্রাণঘাতীও হতে পারে।

শিশুদের ডিহাইড্রেশনের লক্ষণ

ছোট বাচ্চাদের মধ্যে ডিহাইড্রেশনের কিছু লক্ষণ দেখা যায়, যা বাবা-মায়ের উপেক্ষা করা উচিত নয়।

  • শিশু বার বার কাঁদে এবং খুব খিটখিটে হয়ে যায়।
  • ঠোঁট এবং মুখ শুকনো লাগে।
  • কাঁদতে কাঁদতে শিশুর চোখ থেকে জল বের হয় না।
  • ডায়াপার দীর্ঘ সময় ধরে শুকনো থাকে, অর্থাৎ শিশু কম প্রস্রাব করে।
  • মাথার উপরের নরম অংশ দেবে যায়।
  • শিশুর চোখ ভেতরের দিকে ঢুকে যেতে পারে।
  • ত্বক ঢিলেঢালা ও প্রাণহীন মনে হয়।

যদি শিশু দুধ পান করতে না চায়, খুব বেশি দুর্বলতা দেখায় বা নিস্তেজ হয়ে যায়, তবে এটি গুরুতর ডিহাইড্রেশনের লক্ষণ হতে পারে। কখনও কখনও तेज জ্বর বা लगातार ডায়রিয়াও এর লক্ষণ হতে পারে।

প্রতিরোধের সহজ উপায়

  • শিশুদের ডিহাইড্রেশন থেকে বাঁচানো কঠিন নয়, শুধু একটু সতর্ক থাকতে হবে।
  • শিশুকে বার বার বুকের দুধ খাওয়ান যাতে সে পর্যাপ্ত তরল পদার্থ পায়।
  • গরমের দিনে শিশুদের হালকা এবং আরামদায়ক পোশাক পরান।
  • যদি শিশুর ডায়রিয়া বা বমি হয়, তাহলে দ্রুত ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
  • শিশুকে সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এবং নিরাপদ পরিবেশে রাখুন যাতে সংক্রমণের ঝুঁকি কম থাকে।
  • যে শিশুদের বুকের দুধ খাওয়ানো যায় না, তাদের ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফর্মুলা দুধ দিন।
  • যদি শিশুর মধ্যে দুর্বলতা, অলসতা বা অন্য কোনো অস্বাভাবিক লক্ষণ দেখা যায়, তাহলে দ্রুত ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

ছোট বাচ্চাদের ডিহাইড্রেশনের সমস্যা দ্রুত গুরুতর হতে পারে। তাই বাবা-মায়ের উচিত প্রাথমিক লক্ষণগুলো চিনে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া। সময় মতো ध्यान এবং उचित যত্ন নিলে बच्चों को এই সমস্যা থেকে सुरक्षित রাখা যেতে পারে।

Leave a comment