বিরোধী দলের হট্টগোলের মধ্যেই সোমবার সংসদে আটটি বিল পাশ হয়েছে। কিরেন রিজিজু স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন যে, সরকার বিরোধী দলের অংশগ্রহণ ছাড়াই আইন প্রণয়ন সংক্রান্ত কর্মসূচি এগিয়ে নিয়ে যাবে।
পাশ হওয়া বিল: সংসদের বাদল অধিবেশনে ক্রমাগত বাধা সত্ত্বেও, সরকার সোমবার আটটি গুরুত্বপূর্ণ বিল পাশ করেছে। কেন্দ্রীয় সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু স্পষ্ট করে বলেছেন যে, বিরোধী দলের অংশগ্রহণ না থাকলেও সরকার তার আইন প্রণয়ন সংক্রান্ত কর্মসূচি এগিয়ে নিয়ে যাবে। তিনি এটিকে প্রয়োজনীয় উল্লেখ করে বলেন যে, সংসদের সময় নষ্ট হতে দেওয়া হবে না।
রিজিজুর পক্ষ থেকে বিরোধীদের কাছে শেষ আবেদন
সোমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় রিজিজু বিরোধী দলগুলোর কাছে শেষ আবেদন জানান, তারা যেন আলোচনায় অংশ নেয় এবং সংসদকে সুষ্ঠুভাবে চলতে দেয়। তিনি বলেন, সরকার সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনার জন্য প্রস্তুত, কিন্তু বিরোধীদের মনোভাব সহযোগিতামূলক নয়। তিনি আরও ইঙ্গিত দেন যে, বাদল অধিবেশন নির্ধারিত সময়ের আগেই শেষ হয়ে যেতে পারে, কারণ বিরোধীরা সংসদ চলতে দেওয়ার ক্ষেত্রে আগ্রহ দেখাচ্ছে না।
বাদল অধিবেশনে বার বার ব্যাঘাত
বাদল অধিবেশন ২১ জুন শুরু হয়েছিল এবং এটি ২১ আগস্ট পর্যন্ত চলার কথা। তবে, এখন পর্যন্ত অধিবেশনের বেশিরভাগ সময় বিরোধীদের প্রতিবাদ এবং হট্টগোলের মধ্যে কেটে গেছে। শুধুমাত্র ‘অপারেশন সিন্দুর’ এবং ‘পহেলগাম জঙ্গি হামলা’ নিয়ে দুই দিনের আলোচনা সুষ্ঠুভাবে হতে পেরেছে। বাকি দিনগুলোতে সংসদের কার্যক্রম বার বার স্থগিত করতে হয়েছে।
লোকসভায় পাশ হওয়া চারটি বিল
বিরোধীদের প্রতিবাদ সত্ত্বেও লোকসভা চারটি গুরুত্বপূর্ণ বিল পাশ করেছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে –
- জাতীয় ক্রীড়া প্রশাসন বিল – ক্রীড়া ব্যবস্থাপনার সাথে জড়িত সংস্কারের জন্য
- জাতীয় ডোপিং বিরোধী (সংশোধন) বিল – খেলাধুলায় ন্যায্যতা নিশ্চিত করার জন্য
- আয়কর (সংখ্যা 2) বিল – কর সংস্কার এবং রাজস্ব বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে
- করাধান আইন (সংশোধন) বিল – কর বিধানাবলীতে সংশোধনীর জন্য
রাজ্যসভায় পাশ হওয়া বিল
রাজ্যসভাও গুরুত্বপূর্ণ বিল পাশ করেছে, যেগুলোর মধ্যে রয়েছে –
- গোয়া বিধানসভা কেন্দ্রগুলোতে তফসিলি উপজাতিদের প্রতিনিধিত্বের পুনর্বিন্যাস বিল
- মার্চেন্ট শিপিং বিল
- মণিপুর বরাদ্দ বিল
- মণিপুর পণ্য ও পরিষেবা কর (সংশোধন) বিল (লোকসভা কর্তৃক পূর্বে পাশকৃত)
রিজিজুর পক্ষ থেকে বিরোধীদের উপর অভিযোগ
রিজিজু বলেন যে, বিরোধীরা জনস্বার্থের বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করার পরিবর্তে প্রতিদিন শুধু একটি বিষয় নিয়েই হট্টগোল করে। তিনি অভিযোগ করেন যে, বিরোধীরা গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর ভরসা করে না এবং শুধুমাত্র রাজনৈতিক লাভের জন্য সংসদের সময় নষ্ট করছে।
সরকারের অবস্থান
সরকারের স্পষ্ট অবস্থান হলো, জনগণের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বিলগুলোর উপর সময় মতো সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি। রিজিজু বলেন যে, বিরোধীদের ক্রমাগত বিরোধিতা সত্ত্বেও সরকার তার আইনি কার্যক্রম সম্পন্ন করবে, যাতে উন্নয়ন সংক্রান্ত কাজ প্রভাবিত না হয়। বিরোধীদের ক্রমাগত অনুপস্থিতি এবং বাধার কারণে বাদল অধিবেশন নির্ধারিত সময়ের আগে শেষ হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ছে। যদিও, এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আগামী দিনে নেওয়া হবে।