অনেক সময় ছোট ছোট ভুলের কারণে পার্সোনাল লোন বাতিল হয়ে যায়। ব্যাংক লোন অনুমোদনের আগে আবেদনকারীর ক্রেডিট স্কোর, চাকরির স্থায়িত্ব, বয়স এবং বিদ্যমান ঋণের অবস্থা যাচাই করে। যদি এই বিষয়গুলি খেয়াল রাখা হয়, তাহলে লোন সহজেই পাস হতে পারে এবং ক্রেডিট স্কোরের উপরও কোনো খারাপ প্রভাব পড়ে না।
পার্সোনাল লোন প্রত্যাখ্যান: পার্সোনাল লোন প্রায়শই ক্রেডিট স্কোর বা আয়ের স্থিতিশীলতার মতো কারণে বাতিল হয়ে যায়। ব্যাংক লোন দেওয়ার আগে আবেদনকারীর চাকরি, বয়স এবং বিদ্যমান ইএমআই পরিস্থিতি পরীক্ষা করে। 750-এর বেশি ক্রেডিট স্কোর, নিয়মিত আয়, কম ঋণ এবং একটি বড় কোম্পানিতে স্থায়ী চাকরি থাকলে লোন পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এই বিষয়গুলি বিবেচনা করে লোন অনুমোদনের অসুবিধা কমানো যেতে পারে।
ক্রেডিট স্কোরের প্রতি বিশেষ মনোযোগ দিন
পার্সোনাল লোন অনুমোদনের ক্ষেত্রে ক্রেডিট স্কোরের প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে। ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান সবার আগে যাচাই করে আপনার ক্রেডিট স্কোর কত। যদি আপনার স্কোর 750 বা তার বেশি হয়, তাহলে আপনার লোন অনুমোদনের সম্ভাবনা অনেকটাই বেড়ে যায়। অন্যদিকে, যদি এটি 700-এর নিচে হয়, তাহলে ব্যাংক আপনাকে ঝুঁকির চোখে দেখে। অনেক সময় মানুষ স্কোর পরীক্ষা না করেই সরাসরি লোনের জন্য আবেদন করে এবং তাদের আবেদন বাতিল হয়ে যায়। তাই লোনের জন্য আবেদন করার আগে আপনার ক্রেডিট স্কোর পরীক্ষা করে নেওয়া এবং প্রয়োজনে সেটি উন্নত করার দিকে মনোযোগ দেওয়া ভালো।
ক্রেডিট স্কোর উন্নত করার জন্য আপনার পুরোনো ইএমআই এবং ক্রেডিট কার্ড বিল সময়মতো পরিশোধ করা জরুরি। যেকোনো ধরনের ডিফল্ট হিস্টরি আপনার স্কোরকে নিচে নামিয়ে দিতে পারে। এছাড়াও, বারবার বিভিন্ন জায়গায় লোনের জন্য আবেদন করাও ক্রেডিট রিপোর্টে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
চাকরি এবং আয় থাকা জরুরি
পার্সোনাল লোন কোনো সুরক্ষা ছাড়াই পাওয়া যায়। এই কারণে ব্যাংক বা লোন কোম্পানির জন্য এটি দেখা জরুরি যে গ্রাহকের আয় স্থিতিশীল কিনা। যদি আপনি কোনো কোম্পানিতে দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করে থাকেন এবং আপনার আয় নিয়মিত হয়, তাহলে ব্যাংক নিশ্চিত থাকে যে আপনি লোনের কিস্তি সময়মতো পরিশোধ করতে পারবেন।
যারা বারবার চাকরি পরিবর্তন করেন বা যাদের আয় অনিয়মিত, ব্যাংক তাদের কম অগ্রাধিকার দেয়। বিশেষ করে প্রাইভেট চাকরিজীবীদের জন্য জরুরি যে তারা তাদের স্যালারি স্লিপ, ব্যাংক স্টেটমেন্ট এবং আইটি রিটার্ন প্রস্তুত রাখেন যাতে আবেদনের সময় কোনো অসুবিধা না হয়। যদি আপনি সরকারি চাকরি করেন বা কোনো প্রতিষ্ঠিত কোম্পানিতে দীর্ঘ সময় ধরে কর্মরত থাকেন, তাহলে আপনার লোন অনুমোদনের সম্ভাবনা আরও বেড়ে যায়।
বয়সেরও প্রভাব থাকে
ব্যাংক লোন অনুমোদনের আগে আপনার বয়সকেও বিবেচনা করে। সাধারণত 21 থেকে 60 বছর বয়সী আবেদনকারীরা সহজেই পার্সোনাল লোন পেয়ে থাকেন। ব্যাংক এই বয়সসীমার মানুষকে অগ্রাধিকার দেয় কারণ তাদের আয়ের একটি স্থিতিশীল উৎস থাকে এবং ঋণ পরিশোধের জন্য পর্যাপ্ত সময়ও পাওয়া যায়।
যদি আবেদনকারীর বয়স খুব কম হয় বা অবসরের কাছাকাছি হয়, তাহলে ব্যাংক ঝুঁকি বেশি অনুভব করে। এমন পরিস্থিতিতে ব্যাংক হয় লোন বাতিল করে দেয় অথবা খুব কম পরিমাণের অফার দেয়। তাই পার্সোনাল লোনের জন্য আবেদন করার সময় এটি নিশ্চিত করুন যে আপনার বয়স ব্যাংকের নির্ধারিত মানদণ্ডের মধ্যে পড়ে।
ইএমআই এবং বিদ্যমান ঋণের প্রতি মনোযোগ দিন
প্রায়শই মানুষ এই ভুলটি করে যে, পুরোনো লোনের ইএমআই চলা সত্ত্বেও তারা নতুন পার্সোনাল লোন নিয়ে নেয়। ব্যাংক যখন লোনের আবেদন পরীক্ষা করে, তখন তারা আপনার আয়ের তুলনায় ইএমআই অনুপাত দেখে। যদি আপনার মাসিক আয়ের 40 থেকে 50 শতাংশ ইতিমধ্যেই ইএমআইতে চলে যায়, তাহলে ব্যাংক মনে করে যে আপনি নতুন ঋণ সামলাতে পারবেন না। এমন পরিস্থিতিতে আপনার আবেদন বাতিল হতে পারে।
ব্যাংকের আরেকটি মানদণ্ড হলো, আপনার আয়ের একটি অংশ সঞ্চয় হিসেবে থাকা উচিত যাতে কোনো জরুরি পরিস্থিতিতে ঋণ পরিশোধে অসুবিধা না হয়। তাই লোন নেওয়ার আগে পুরোনো ঋণ কমানোর বা সময়মতো পরিশোধ করার চেষ্টা করুন। এতে আপনার লোন পাওয়ার যোগ্যতা বেড়ে যায় এবং ব্যাংকের উপর ভালো প্রভাব পড়ে।
যদি আপনি কোনো সুপরিচিত এবং স্থিতিশীল কোম্পানিতে কাজ করেন, তাহলে এটিও আপনার পক্ষে যায়। ব্যাংক মনে করে যে এমন কোম্পানিতে যারা কাজ করেন তাদের আয় স্থিতিশীল থাকে, যার ফলে ঋণ পরিশোধে ব্যর্থতার ঝুঁকি কম হয়।
নথি এবং সঠিক তথ্য জরুরি
অনেক সময় লোন বাতিল হওয়ার কারণ অসম্পূর্ণ বা ভুল নথিও হয়। আবেদনের সময় যদি প্যান কার্ড, আধার কার্ড, স্যালারি স্লিপ বা ব্যাংক স্টেটমেন্টে কোনো ভুল থাকে, তাহলে ব্যাংক তাৎক্ষণিকভাবে আবেদন প্রত্যাখ্যান করে দেয়। তাই সমস্ত নথি আগে থেকে প্রস্তুত রাখুন এবং নিশ্চিত করুন যে দেওয়া তথ্য সম্পূর্ণ সঠিক।
ব্যাংকের বিশ্বাস অর্জন করার জন্য আপনার আর্থিক প্রোফাইলকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা জরুরি। ভালো ক্রেডিট হিস্টরি, স্থিতিশীল চাকরি এবং নিয়মিত ইএমআই পরিশোধের মাধ্যমে আপনার পার্সোনাল লোন সহজেই অনুমোদিত হতে পারে।