পেট্রোল-ডিজেল সস্তা হওয়ার সম্ভাবনা! মধ্যবিত্তের মুখে হাসি ফেরাতে কেন্দ্র কি শেষমেশ নরম পথে?

পেট্রোল-ডিজেল সস্তা হওয়ার সম্ভাবনা! মধ্যবিত্তের মুখে হাসি ফেরাতে কেন্দ্র কি শেষমেশ নরম পথে?

৬৫ ডলার ব্যারেল মূল্যেই ভবিষ্যৎ নির্ধারণ! কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রীর আশাবাদে নতুন আশার আলো

দীর্ঘদিন ধরে যে প্রশ্নটা মধ্যবিত্ত ভারতীয়ের ঘরে ঘরে ঘুরছে—এই দাম আর কতদিন? এবার সেই প্রশ্নের জবাবে আলোর রেখা দেখালেন কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, যদি অপরিশোধিত তেলের আন্তর্জাতিক দাম দীর্ঘ সময় ধরে প্রতি ব্যারেল ৬৫ ডলারে স্থির থাকে, তবে পেট্রোল-ডিজেলের দাম কমানোর বিষয়টি সরকারের সক্রিয় বিবেচনায় রয়েছে।ভারতের মত দেশ, যেখানে অধিকাংশ নাগরিক সঞ্চয়ের ওপর বাঁচেন, সেখানে তেলের দাম বাড়া মানেই প্রতিদিনের খরচে চাপ। ফলে, আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম যখন এমনভাবে পড়ে যাচ্ছে, তখন সরকারের তরফে দায় পড়ে—সেই সাশ্রয় সাধারণ মানুষের পকেটেও পৌঁছে দেওয়ার।এই অংশে মূলত কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্য ও তার তাৎপর্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে। পাঠকের মনে আশা তৈরি হয়—দাম কমার সম্ভবনা বাস্তব।

২-৩ মাসের মধ্যে পাম্পে স্বস্তি? পুরীর ভাষণে আশ্বাস, তবুও ভূ-রাজনৈতিক ঝুঁকির ইঙ্গিত

দিল্লিতে একটি সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে হরদীপ পুরী জানান, আগামী ২ থেকে ৩ মাসের মধ্যেই পেট্রোল ও ডিজেলের দাম কিছুটা হ্রাস পেতে পারে। তবে এই সম্ভাবনার সঙ্গে জুড়ে আছে এক গূঢ় শর্ত—আন্তর্জাতিক ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি যদি স্থিতিশীল থাকে।বিশেষত, ইরান ও ইজরায়েলের মধ্যকার উত্তেজনা, যা দ্রুত জ্বালানি বাজারকে প্রভাবিত করতে পারে। কারণ, এই অঞ্চল থেকেই প্রচুর অপরিশোধিত তেল বিশ্ববাজারে সরবরাহ হয়। ফলে সামান্য অস্থিরতাও তেলের দাম বাড়াতে পারে, যার প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়বে ভারতীয় বাজারে।এখানে দাম কমার বাস্তবসম্মত সুযোগ ও আন্তর্জাতিক রাজনীতির প্রভাব ব্যাখ্যা করা হয়েছে। পাঠক বুঝবেন যে আশার মধ্যেও শর্ত জড়িত।

মুনাফার পাহাড়ে সংস্থা, সাশ্রয়ের রাস্তা দেখছে সরকার! কীভাবে মধ্যবিত্ত উপকৃত হতে পারেন?

মন্ত্রীর মতে, বর্তমানে অপরিশোধিত তেলের দাম যেহেতু ৬৫ ডলারের আশেপাশে ঘোরাফেরা করছে এবং তেল বিপণন সংস্থাগুলির মুনাফাও বাড়ছে, তাই কেন্দ্র সরকার জনগণকে স্বস্তি দিতে দাম হ্রাসের সিদ্ধান্ত নিতে পারে।বর্তমানে, প্রতিটি লিটার পেট্রোলে সংস্থাগুলি ১২-১৫ টাকা লাভ করে, ডিজেলে ৬.১২ টাকা। এই বিপুল মুনাফার কিছুটা সাধারণ মানুষের পকেটে ফেরানোই সরকারের পরিকল্পনা। তবে, এটি শুধুই "ভাল আবহাওয়ার অর্থনীতি"—ঝড় এলেই পরিকল্পনা ভেস্তে যেতে পারে। এই অনুচ্ছেদে সংস্থার লাভ, সরকারের কর নীতি এবং সেই প্রেক্ষিতে সম্ভাব্য রেট হ্রাসের ভিত্তি আলোচনা করা হয়েছে।

কতটা কর নেওয়া হয় প্রতি লিটারে? সাধারণ মানুষ জানলে অবাক হবেন!

বর্তমানে পেট্রোলে প্রতি লিটারে কেন্দ্র ২১.৯০ টাকা কর নেয়। দিল্লিতে এই করের সঙ্গে সেস যোগ হয়ে দাঁড়ায় ৩৭.৩০ টাকা! ডিজেলের ক্ষেত্রেও একই ছবি—কেন্দ্র নেয় ১৭.৮০ টাকা, দিল্লি সরকার নেয় ১২.৮৩ টাকা, মিলিয়ে প্রায় ৩০.৬৩ টাকা।এই কর কাঠামো যে কতটা বিরাট—তা বোঝাতে গেলে একটা চমকপ্রদ তথ্যই যথেষ্ট। ভারতে মাথাপিছু প্রতি মাসে গড়ে পেট্রোল ব্যবহার হয় ২.৮০ লিটার এবং ডিজেল ৬.৩২ লিটার। এর মানে প্রতি নাগরিক গড়ে ২৯৮ টাকা কর দেন শুধুমাত্র তেলের উপরেই!এখানে সরকার কতটা ট্যাক্স আদায় করে, তার পরিসংখ্যানসহ বিশ্লেষণ করা হয়েছে। পাঠকের মনে স্বচ্ছতা তৈরি হয়—তাঁর অর্থ কোথায় যাচ্ছে।

রাজ্যভেদে রেটে আকাশ-পাতাল তফাত! কোথায় পেট্রোল সবথেকে দামি?

বর্তমানে দেশে সবথেকে বেশি পেট্রোলের দাম অন্ধ্রপ্রদেশে—১০৮ টাকা প্রতি লিটার! কেরলে ১০৭ টাকা, মধ্যপ্রদেশে ১০৬ টাকা। বিহারে পেট্রোলের দাম ১০৫ টাকা, ডিজেল ৯৬ টাকা।দেশজুড়ে তেলের ব্যবহার বিস্ময়কর। প্রতিবছর ১০,৭০০ কোটি লিটার তেল খরচ হয়, যার মধ্যে মাথাপিছু ৩৩.৭ লিটার পেট্রোল ও ৭৫.৮৮ লিটার ডিজেল ব্যবহার করেন সাধারণ নাগরিক। এই পরিসংখ্যান স্পষ্ট করে দেয়—তেলের দাম বাড়া মানেই সব কিছুর দাম বাড়া। এই অনুচ্ছেদে রাজ্যভিত্তিক রেট ও জাতীয় জ্বালানি খরচের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। পাঠক বুঝতে পারবেন—এই ইস্যু কতটা বিস্তৃত।

Leave a comment