প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে মণিপুর সফরে রয়েছেন। দুই বছর আগে, ২০২৩ সালে মণিপুরে জাতিগত হিংসা ছড়িয়ে পড়ার পর এটি তাঁর প্রথম সফর। প্রধানমন্ত্রী এই সফরটি একটি সংবেদনশীল সময়ে শান্তি ও পুনর্গঠনের বার্তা দেওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
PM Modi in Manipur: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ, ১৩ সেপ্টেম্বর মণিপুর সফরে থাকবেন। দুই বছর আগে, ২০২৩ সালে জাতিগত হিংসা ছড়িয়ে পড়ার পর এটি তাঁর মণিপুরের প্রথম সফর হবে। এই সময়ে তিনি চুরাচাঁদপুর এবং ইম্ফলে অভ্যন্তরীণভাবে স্থানান্তরিত হওয়া মানুষের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের সমস্যার কথা শুনবেন। এছাড়াও, প্রধানমন্ত্রী মণিপুরের জনগণের জন্য ৮,৫০০ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের উপহার দেবেন এবং বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। এই সফরটি রাজ্যে শান্তি, পুনর্বাসন এবং উন্নয়নের দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
হিংসা-পীড়িত মানুষের সঙ্গে আলাপচারিতা
প্রধানমন্ত্রী দুপুর প্রায় ১২:৩০ নাগাদ কুকি-জো অধ্যুষিত চুরাচাঁদপুরে পৌঁছাবেন, যেখানে তিনি হিংসার কারণে বাস্তুচ্যুত হওয়া মানুষের সঙ্গে কথা বলবেন। এরপর তিনি প্রায় আড়াইটে নাগাদ ইম্ফলে পৌঁছে মেইতেই অধ্যুষিত উপত্যকার ত্রাণ শিবিরগুলিতে থাকা বাস্তুচ্যুতদের সঙ্গে দেখা করবেন। মণিপুরে মেইতেই এবং কুকি-জো সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষের কারণে রাজ্যে ২৮০টির বেশি ত্রাণ শিবির পরিচালিত হচ্ছে, যেখানে প্রায় ৫৭,০০০ মানুষ বাস্তুচ্যুত জীবন যাপন করছেন।
প্রধানমন্ত্রী এই সফরটি সেই সমালোচনার মধ্যে হচ্ছে, যেখানে বলা হয়েছিল যে কেন্দ্র সরকার মণিপুরের জটিল পরিস্থিতিতে যথেষ্ট মনোযোগ দেয়নি। এখন প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি আলাপচারিতা শান্তি প্রক্রিয়াকে গতি দিতে এবং ক্ষতিগ্রস্ত সম্প্রদায়গুলির মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনার দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
₹৮,৫০০ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প
প্রধানমন্ত্রী মোদী মণিপুরের অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের জন্য বেশ কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। চুরাচাঁদপুরে তিনি ৭,৩০০ কোটি টাকার বেশি প্রকল্পের সূচনা করবেন, যেখানে ইম্ফলে ১,২০০ কোটি টাকার বেশি প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। প্রধান প্রকল্পগুলির মধ্যে রয়েছে:
- मणिपुर इन्फोटेक डेवलपमेंट (MIND) परियोजना – ৫৫0 কোটি টাকা ব্যয়ে ডিজিটাল এবং প্রযুক্তি ক্ষেত্রে সম্প্রসারণ।
- জল নিষ্কাশন ও সম্পদ ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন প্রকল্প – ৩,৬৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে পরিকাঠামোর আধুনিকীকরণ।
- मणिपुर पुलिस मुख्यालय, मंत्रीपुखरी – ১০১ কোটি টাকা ব্যয়ে আধুনিক নিরাপত্তা পরিকাঠামো।
- নাগরিক সচিবালয়, मंत्रीपुखरी – ৫৩৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত প্রশাসনিক পরিকাঠামো।
এই প্রকল্পগুলির উদ্দেশ্য শুধুমাত্র পুনর্বাসন নয়, দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক উন্নয়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সুরক্ষা এবং প্রশাসনিক সংস্কার নিশ্চিত করা।
আসাম, বিহার ও বাংলাকে উপহার
মণিপুর সফরের পর প্রধানমন্ত্রী আসাম, বিহার এবং পশ্চিমবাংলায়ও বেশ কয়েকটি প্রকল্পের সূচনা করবেন। শনিবার সন্ধ্যায় তিনি গুয়াহাটিতে ভারতরত্ন ভূপেন হাজারিকার শতবর্ষ পূর্তি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। এরপর তিনি বাংলায় সামরিক কমান্ডারদের যৌথ সম্মেলনে উদ্বোধন করবেন এবং বিহারে মাখনা বোর্ডের সূচনা করবেন।
প্রধানমন্ত্রী ১৪ সেপ্টেম্বর আসামে ১৮,৫৩০ কোটি টাকার বেশি প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। এর মধ্যে রয়েছে দারাং মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, জিএনএম স্কুল, বি.এসসি. নার্সিং কলেজ এবং নুমালিগড় রিফাইনারিতে আসাম বায়োইথানল প্ল্যান্ট। অন্যদিকে, ১৫ সেপ্টেম্বর কলকাতায় অনুষ্ঠিত ১৬তম যৌথ কমান্ডার সম্মেলনে উদ্বোধন করে তিনি সামরিক নেতৃত্বকে সম্বোধন করবেন। এই সম্মেলনটি ১৫ থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে এবং ভারতের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য এটি একটি কৌশলগত আলোচনার মঞ্চ হবে।