প্রধানমন্ত্রী মোদীর ব্রিটেন সফর: মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির পথে ভারত ও ব্রিটেন

প্রধানমন্ত্রী মোদীর ব্রিটেন সফর: মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির পথে ভারত ও ব্রিটেন

প্রধানমন্ত্রী মোদী ব্রিটেন সফরে যাচ্ছেন। এই সফরে ভারত-ব্রিটেনের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। চুক্তির ফলে ২০৩০ সাল নাগাদ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ১২০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছানোর আশা করা হচ্ছে।

PM Modi Visit: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ব্রিটেন সফরে রওনা হচ্ছেন। এই সফরকে ভারত-ব্রিটেন সম্পর্কের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে মনে করা হচ্ছে। এই সময়ে, দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনার টেবিলে থাকা মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (FTA) স্বাক্ষরিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই চুক্তির মাধ্যমে ২০৩০ সাল পর্যন্ত দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ১২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছে।

ভারত-ব্রিটেন FTA চূড়ান্ত করার প্রস্তুতি

ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামীর মতে, এই চুক্তিটি এখন তার চূড়ান্ত আইনি পর্যায়ে রয়েছে। ৬ মে তারিখে দুই দেশের মধ্যে অনুষ্ঠিত আলোচনার ভিত্তিতে নির্ধারিত শর্তাবলীকে চূড়ান্ত রূপ দেওয়া হচ্ছে। মনে করা হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমারের মধ্যে সাক্ষাতের সময় এই চুক্তিটি আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাক্ষরিত হবে।

এই চুক্তির উদ্দেশ্য কী

এই মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির উদ্দেশ্য শুধুমাত্র শুল্ক হ্রাস করা নয়, বরং এর মধ্যে বাণিজ্য নিয়ম, কাস্টমস ব্যবস্থা, উৎপাদিত পণ্যের উৎস নির্ধারণ, সরকারি ক্রয় এবং পরিষেবা খাতের সাথে জড়িত অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই চুক্তি ভারত ও ব্রিটেনের বাণিজ্যিক সম্পর্ককে একটি সুস্পষ্ট দিকনির্দেশ এবং স্থিতিশীলতা দেবে।

ব্যবসায়ীরা আরও ভালো কাঠামো পাবে

যখন এই চুক্তিটি উভয় দেশের সংসদ দ্বারা অনুমোদিত হবে, তখন ব্যবসায়ীরা একটি সুস্পষ্ট এবং অনুমানযোগ্য কাঠামো পাবে। এতে নিয়মকানুন আরও স্বচ্ছ হবে এবং ব্যবসা করা সহজ হবে। এর ফলে উভয় দেশের শিল্প উপকৃত হবে এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে উন্নতি দেখা যাবে।

প্রধানমন্ত্রী মোদীর ব্রিটেন সফরের কর্মসূচি

প্রধানমন্ত্রী মোদী স্থানীয় সময় অনুযায়ী বুধবার সন্ধ্যায় লন্ডনে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। এরপর বৃহস্পতিবার তিনি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্টারমারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। এই বৈঠকের সময় উভয় দেশের প্রতিনিধিরা চূড়ান্ত চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে পারেন।

ব্রিটেনে ভারতীয় সম্প্রদায়ের জন্য গর্বের মুহূর্ত

ভারতীয় হাইকমিশনার জানিয়েছেন যে প্রধানমন্ত্রীর এই সফর যদিও মাত্র ২৪ ঘণ্টার, তবে এর গুরুত্ব অনেক বেশি। এটি दर्शाता যে ভারত এই কৌশলগত অংশীদারিত্বকে কতটা গুরুত্ব দেয়।

প্রধানমন্ত্রী মোদীর এই সফর এমন এক সময়ে হচ্ছে যখন সংসদের অধিবেশনও চলছে। তবুও এই সফরকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে, যা ইঙ্গিত দেয় যে ভারত তার ঐতিহ্যবাহী অংশীদারদের সাথে সম্পর্ক জোরদার করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

কিং চার্লসের সঙ্গেও হবে সাক্ষাৎ

প্রধানমন্ত্রী মোদীর এই সফরের সময় ব্রিটেনের রাজা চার্লস তৃতীয়ের সাথেও তার সাক্ষাৎ হওয়ার কথা রয়েছে। ২০১৮ সালের সফরে তিনি তৎকালীন প্রিন্স অফ ওয়েলসের সাথে मिलकर একটি আয়ুর্বেদিক সেন্টার অফ এক্সিলেন্স শুরু করেছিলেন। এইবারও দুই নেতার মধ্যে স্বাস্থ্য, পরিবেশ এবং জীবনযাত্রার মতো বিষয় নিয়ে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর এই সফরের সময় একটি উচ্চ-পর্যায়ের বাণিজ্যিক প্রতিনিধিদলও তাঁর সাথে থাকবে। এই প্রতিনিধিদলটি ব্রিটেনের বাণিজ্যিক সম্প্রদায়ের সাথে সম্ভাব্য অংশীদারিত্ব এবং বিনিয়োগের সুযোগ নিয়ে আলোচনা করবে।

মালদ্বীপ সফরও অন্তর্ভুক্ত

ব্রিটেন সফরের পর প্রধানমন্ত্রী মোদী মালদ্বীপের সফরে যাবেন। সেখানে ২৬ জুলাই স্বাধীনতা দিবসের ৬০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি 'গেস্ট অফ অনার' হিসেবে অংশ নেবেন।

প্রধানমন্ত্রীর এই সফর ভারত-ব্রিটেন সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি নতুন মোড় আনতে পারে। এই সফরের মাধ্যমে উভয় দেশের মধ্যে কৌশলগত অংশীদারিত্বকে নতুন দিকনির্দেশ দেওয়ার আশা করা হচ্ছে। বাণিজ্য, বিনিয়োগ, স্বাস্থ্য, পরিবেশ এবং সংস্কৃতির ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরও শক্তিশালী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

Leave a comment