৯ই মে সহিংসতার মামলায় ইমরান খানের দলের ৭ নেতার ১০ বছর কারাদণ্ড

৯ই মে সহিংসতার মামলায় ইমরান খানের দলের ৭ নেতার ১০ বছর কারাদণ্ড

লাহোরের সন্ত্রাস দমন আদালত ইমরান খানের দলের ৭ জন বর্ষীয়ান নেতাকে ৯ই মে সহিংসতার মামলায় ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে। পিটিআই এই রায়কে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেছে।

Pakistan: পাকিস্তানের লাহোরে অবস্থিত সন্ত্রাস দমন আদালত (Anti-Terrorism Court - ATC) প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (PTI)-এর সাত জন বর্ষীয়ান নেতাকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছে। ২০২৩ সালের ৯ই মে শারপা‌ও ব্রিজের ওপর হওয়া দাঙ্গায় জড়িত থাকার অভিযোগে এই সাজা দেওয়া হয়েছে। আদালতের এই রায়ে পাকিস্তানের রাজনীতিতে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।

কাদের সাজা হয়েছে

এটিসি কর্তৃক সাজাপ্রাপ্ত নেতাদের মধ্যে রয়েছেন সিনেটর এজাজ চৌধুরী, পাঞ্জাবের প্রাক্তন গভর্নর ওমর সরফরাজ চিমা, প্রাক্তন প্রাদেশিক মন্ত্রী ইয়াসমিন রশিদ এবং মাহমুদুর রশিদ, অ্যাডভোকেট আজিম পাহাট। এদের সকলের ওপর সন্ত্রাসবাদের গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছিল। আদালত তাঁদের প্রত্যেককে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে।

৯ই মে-র হিংসার ঘটনা

ঘটনাটি সেই সময়ের, যখন ২০২৩ সালের ৯ই মে ইমরান খানকে গ্রেফতার করার পর পাকিস্তানের বিভিন্ন শহরে হিংসাত্মক বিক্ষোভ হয়েছিল। পিটিআই কর্মী ও সমর্থকেরা সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করে এবং রাস্তায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। এরই ধারাবাহিকতায় শারপা‌ও ব্রিজের ঘটনা নিয়ে এই মামলা দায়ের করা হয়েছিল। এই সহিংসতার পর বিপুল সংখ্যক দলীয় নেতা ও কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।

কিছু নেতা স্বস্তি পেয়েছেন

যেখানে একদিকে সাত জন নেতাকে সাজা দেওয়া হয়েছে, সেখানে আদালত প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি সহ অন্য পাঁচ জন নেতাকে অভিযোগ থেকে মুক্তি দিয়েছে। এর কারণ হিসেবে বলা হয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এই রায় পিটিআই-এর জন্য স্বস্তি ও ধাক্কার মিশ্রণ।

সরকার রায়ের স্বাগত জানিয়েছে

পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার আদালতের এই রায়কে সমর্থন করে এটিকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করেছে। সরকারের বক্তব্য, আইন ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি, তাঁরা যে দলেরই হোন না কেন।

পিটিআই নেতাদের প্রশ্ন

তবে, পিটিআই এই রায়ের সমালোচনা করেছে। দলের বর্ষীয়ান নেতা আলিয়া হামজা, বাবর আওয়ান এবং আসাদ কায়সার বলেছেন, এই মামলায় না তো স্বচ্ছতা বজায় রাখা হয়েছে, না আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, রায়ে রাজনৈতিক চাপের প্রভাব ছিল এবং কোনও বিশ্বাসযোগ্য সাক্ষী আদালতে পেশ করা হয়নি।

শুনানিতে দ্রুততা, প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন

পিটিআই-এর মুখপাত্র সৈয়দ জুলফিকার বুখারি লন্ডন থেকে বিবৃতি জারি করে বলেছেন, এই মামলাগুলির শুনানিতে অস্বাভাবিক দ্রুততা দেখা গেছে। প্রতিদিন শুনানি ছাড়াও শনিবারও গভীর রাত পর্যন্ত আদালতের কাজকর্ম চলেছে। তিনি এটিকে "পদ্ধতিগত অনিয়ম এবং সাংবিধানিক লঙ্ঘনের উদাহরণ" বলে উল্লেখ করেছেন। তাঁর আরও বক্তব্য, পুরো বিষয়টি একটি রাজনৈতিক তামাশা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ইমরান খান আগে থেকেই জেলে বন্দি

প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ২০২৩ সালের অগাস্ট মাস থেকে বিভিন্ন দুর্নীতি মামলায় জেলে বন্দি রয়েছেন। পিটিআই-এর অভিযোগ, এই সমস্ত মামলাই রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে। ইমরান খানের সমর্থকদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁদের মিডিয়া কভারেজের ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে এবং দলের অনেক নেতাকে জেলে পাঠানো হয়েছে।

Leave a comment