শ্রী প্রেমানন্দ গোবিন্দ শরণ জি একজন মহান রাধাবল্লভ সন্ত, যিনি বৈরাগ্য, ভক্তি এবং সাধনার পথে সমাজে আধ্যাত্মিক সচেতনতা ছড়িয়েছেন।
Premanand Maharaj: ভারতের ভূমি সন্ত, ঋষি এবং তপস্বীদের ভূমি হিসেবে পরিচিত। এখানে অনেক সন্ত জন্ম নিয়ে সমাজকে আধ্যাত্মিক নির্দেশনা দিয়েছেন। এমনই একজন মহান সন্তের নাম – শ্রী প্রেমানন্দ গোবিন্দ শরণ জি মহারাজ, যাঁকে তাঁর অনুগামীরা 'প্রেমানন্দ মহারাজ' নামে চেনেন। তাঁর জীবন ব্রহ্মচর্য, সাধনা এবং ভক্তিতে পরিপূর্ণ।
প্রাথমিক জীবন: শৈশব থেকে বৈরাগ্যের পথে
শ্রী প্রেমানন্দ জি ৩০ মার্চ, ১৯৬৯ সালে উত্তর প্রদেশের কানপুর জেলার সরসৌল ব্লকের আখরি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর জন্ম নাম ছিল অনিরুদ্ধ কুমার পাণ্ডে। তাঁর বাবা-মা - শ্রী শম্ভু পাণ্ডে এবং শ্রীমতী রমা দেবী - ধার্মিক প্রকৃতির ছিলেন। ১৩ বছর বয়সেই তিনি সাংসারিক মোহ ত্যাগ করে সন্ন্যাসের পথ বেছে নেন। এই সিদ্ধান্তটি তাঁর দাদাজির পদাঙ্ক অনুসরণ করে নেওয়া হয়েছিল, যিনি নিজেও সন্ন্যাস জীবন যাপন করতেন।
আত্মানুসন্ধানের যাত্রা: গঙ্গা তীর থেকে বৃন্দাবন পর্যন্ত
সন্ন্যাস গ্রহণের পর তাঁকে 'আনন্দস্বরূপ ব্রহ্মচারী' নাম দেওয়া হয়। কিছু সময় পরে তিনি 'স্বামী আনন্দাশ্রম' নামে পরিচিত হন। তিনি গঙ্গার তীরে অবস্থিত বারাণসীতে দীর্ঘ সময় ধরে সাধনা, ধ্যান এবং আত্মানুসন্ধানে সময় কাটান। এখানেই একদিন অশ্বত্থ গাছের নীচে ধ্যানমগ্ন অবস্থায় বসে থাকা কালীন, পণ্ডিত স্বামী শ্রী রাম শর্মা তাঁকে রাসলীলা দেখার জন্য আমন্ত্রণ জানান। বহুবার প্রত্যাখ্যান করার পর অবশেষে তিনি এটিকে ঈশ্বরের ইচ্ছা মনে করে গ্রহণ করেন। এই মুহূর্তটিই ছিল যা তাঁর জীবনের দিক পরিবর্তন করে দেয়।
রাধাবল্লভ সম্প্রদায়ে দীক্ষা
এই দিব্য অভিজ্ঞতার পরে, প্রেমানন্দ জি মহারাজ রাধাবল্লভ সম্প্রদায়ে প্রবেশ করেন। একজন রাধাবল্লভী গোস্বামী তাঁকে 'শরণাগতি মন্ত্র' প্রদান করেন, যা এই সম্প্রদায়ে দীক্ষার প্রথম ধাপ। এর পরে তিনি শ্রী হিত গৌরাঙ্গী শরণ জি মহারাজের (যাঁকে 'বড়ে গুরুজি' বলা হয়) সাথে সাক্ষাৎ করেন। বড় গুরুজি তাঁকে 'নিজ মন্ত্র' প্রদান করেন, যার মাধ্যমে 'সহচরী ভাব' এবং 'নিত্য বিহার রস' এর অনুভূতি লাভ হয়। এই মুহূর্ত থেকেই প্রেমানন্দ জি মহারাজ রসিক সন্তদের শ্রেণীতে অন্তর্ভুক্ত হন।
গুরুদেব: শ্রী হিত গৌরাঙ্গী শরণ জি মহারাজ
শ্রী হিত গৌরাঙ্গী শরণ জি মহারাজ সহচরী ভাবের সর্বোচ্চ জ্ঞানী হিসেবে বিবেচিত হন। তিনি একজন বিশিষ্ট সন্ত, যিনি তাঁর শিষ্যদের প্রেম রস, ভক্তি ভাব এবং আধ্যাত্মিক শৃঙ্খলায় পারদর্শী করেছেন। প্রেমানন্দ জি তাঁর জীবনের আধ্যাত্মিক পথে বড় গুরুজির সান্নিধ্য লাভ করেন, যা তাঁকে একজন সন্ত হিসেবে প্রতিষ্ঠা দেয়।
শ্রী হিত রাধা কেলি কুঞ্জ ট্রাস্ট: সেবা ও সমর্পণের কেন্দ্র
২০১৬ সালে শ্রী প্রেমানন্দ জি মহারাজ দ্বারা 'শ্রী হিত রাধা কেলি কুঞ্জ ট্রাস্ট' প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি একটি অলাভজনক সংস্থা, যার উদ্দেশ্য হল সমাজে সেবা, উন্নয়ন এবং ধর্মের প্রচার করা। এই ট্রাস্টের মাধ্যমে বৃন্দাবনে যাত্রীদের জন্য আবাস, খাদ্য, বস্ত্র, চিকিৎসা সুবিধা, সৎসঙ্গ, ভজন এবং কথার সুবিধা প্রদান করা হয়। এই ট্রাস্ট একটি আধ্যাত্মিক আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে, যেখানে ভক্তরা শান্তি, সেবা এবং সাধনার পরিবেশে সময় কাটাতে পারেন।
প্রেমানন্দ জীর শিক্ষা ও দর্শন
প্রেমানন্দ জি মহারাজের শিক্ষা অত্যন্ত সরল, প্রভাবশালী এবং জীবনের প্রতিটি স্তরে উপযোগী। তিনি মনে করেন যে, আধ্যাত্মিকতা জীবনের সার এবং গুরু জীবনের পথপ্রদর্শক। তাঁর মতে:
- ব্রহ্মচর্য পালন মানসিক, শারীরিক ও আত্মিক স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। এটি জীবনকে संतुलित, সাত্ত্বিক ও উন্নত করে তোলে।
- চরিত্রই মানুষের সবচেয়ে বড় সম্পদ। দুষ্ট প্রবৃত্তি জীবন ও সমাজ উভয়ের জন্যই ক্ষতিকর।
- গুরু জীবনে দিকনির্দেশনা, শৃঙ্খলা এবং অনুপ্রেরণা দান করেন।
- আধ্যাত্মিক শক্তি দিয়ে কেবল আত্মার বিকাশ হয় না, সামাজিক সংহতিও বজায় থাকে।
সাহিত্যিক অবদান
শ্রী প্রেমানন্দ জি মহারাজ কেবল একজন সন্ত নন, একজন লেখকও। তিনি আধ্যাত্মিক বিষয়ের উপর অনেক গুরুত্বপূর্ণ বই লিখেছেন, যা ভক্তদের সাধনার পথে অগ্রসর হতে সহায়ক:
- ব্রহ্মচর্য (২০১৯) – জীবনে ব্রহ্মচর্যের গুরুত্বের উপর একটি গভীর चिंतन।
- একান্তিক वार्तालाप (২০১৯) – एकांत में आत्मा से संवाद का मार्गदर्शन।
- हित सद्गुरु देव के वचनामृत (২০২০) – गुरु वचनों का संग्रह, जो साधक को दिशा प्रदान करता है।
- अष्टयाम सेवा पद्धति (২০২০) – राधा-वल्लभ सम्प्रदाय की सेवा पद्धति का विस्तृत वर्णन।
- Spiritual Awakening – Vol. 1 (২০২৪) – ইংরেজি ভাষায় প্রকাশিত, जिसमें आध्यात्मिक जागरण के आयामों की विवेचना की गई है।
সন্তর দৃষ্টিকোণ: সমাজের জন্য বার্তা
প্রেমানন্দ জি বিশ্বাস করেন যে, আধ্যাত্মিকতার উদ্দেশ্য কেবল ব্যক্তিগত মুক্তি নয়, সমাজেরও উন্নতি। তিনি सांसारिक आडंबर থেকে দূরে থেকে ভক্তি, সেবা এবং চরিত্র গঠনের উপর জোর দেন। তাঁর জীবন যুবকদের জন্য একটি অনুপ্রেরণা যে কীভাবে সংযম, সাধনা এবং সেবার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি সমাজে আলোর স্তম্ভ হতে পারে।
শ্রী প্রেমানন্দ গোবিন্দ শরণ জি মহারাজ একজন সন্ত, শিক্ষক, পথপ্রদর্শক এবং সেবক হিসেবে সমাজের সামনে আদর্শ উপস্থাপন করেন। তাঁর জীবন ত্যাগ, তপস্যা, প্রেম এবং সেবার প্রতীক। তিনি কেবল ধর্মীয় পথে চলা লোকদের জন্যই নন, उन सभी के लिए प्रेरणा हैं जो जीवन में शांति, संतुलन और सच्चाई की खोज में हैं। তাঁর শিক্ষা, প্রতিষ্ঠান এবং সাহিত্যিক কীর্তি তাঁকে এক যুগপুরুষের শ্রেণীতে প্রতিষ্ঠিত করে। তিনি আজকের যুগে ভক্তি ও ব্রহ্মচর্যের পুনরুজ্জীবনের প্রতীক।