গুরুগ্রামে টেনিস খেলোয়াড় রাধিকা যাদবের মর্মান্তিক হত্যা: পিতার জড়িত থাকার অভিযোগ

গুরুগ্রামে টেনিস খেলোয়াড় রাধিকা যাদবের মর্মান্তিক হত্যা: পিতার জড়িত থাকার অভিযোগ

গুরুগ্রামে ন্যাশনাল টেনিস খেলোয়াড় রাধিকা যাদবের হত্যা তাঁর পিতার দ্বারা সংঘটিত হয়েছে। এক বছর আগের একটি ভাইরাল ভিডিও তদন্তের গুরুত্বপূর্ণ সূত্র হতে পারে। পুলিশ সব দিক থেকে তদন্ত করছে।

Radhika Yadav Murder: হরিয়ানার গুরুগ্রামের সেক্টর ৫৭-এ ন্যাশনাল লেভেলের টেনিস খেলোয়াড় রাধিকা যাদবকে তাঁর বাবা গুলি করে হত্যা করার পরে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। এই ঘটনাটি শুধু শহর নয়, সারা দেশের ক্রীড়া জগতের সঙ্গে যুক্ত মানুষের জন্য একটি ধাক্কা হিসাবে প্রমাণিত হয়েছে। রাধিকা সেক্টর ৫৭-এ একটি টেনিস একাডেমি চালাতেন, যেখানে প্রায় ৫০ জন খেলোয়াড় প্রশিক্ষণ নিত।

প্রতিবেশীদের প্রতিক্রিয়া এবং পারিবারিক আচরণ

প্রতিবেশীদের মতে, রাধিকার বাবা খুব রাগী ছিলেন এবং সামান্য বিষয়েই রেগে যেতেন। যদিও পরিবারের অন্য সদস্যরা শান্ত স্বভাবের ছিলেন এবং রাধিকাও হাসিখুশি ও মিশুক প্রকৃতির ছিলেন। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, রাধিকা প্রায়ই হেসে কথা বলতেন, তবে তাঁর বাড়িতে আসা-যাওয়ার সংখ্যা কম ছিল।

একাডেমি খোলার পেছনে পিতার সহযোগিতা

জানা যায়, রাধিকার টেনিস একাডেমি খুলতে তাঁর বাবা ১.২৫ কোটি টাকা খরচ করেছিলেন। রাধিকা জমি লিজ নিয়ে এই একাডেমি শুরু করেছিলেন। মাত্র দেড় মাস আগে চালু হওয়া এই একাডেমিতে শিশু এবং কিশোররা বিপুল সংখ্যায় টেনিস শিখতে আসছিল।

শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়া: একটি অসম্পূর্ণ প্রশিক্ষণ

রাধিকার একাডেমিতে টেনিস শিখতে আসা খেলোয়াড়দের জন্য এই ঘটনাটি একটি আঘাতের চেয়ে কম নয়। অনেক ছাত্র বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাঁর বাড়িতে পৌঁছে জানায় যে, তারা এখনও বিশ্বাস করতে পারছে না যে এমন কিছু ঘটতে পারে। তারা গত কয়েক দিন ধরে রাধিকার কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিচ্ছিল এবং তাঁর আচরণ ছিল খুবই নম্র ও পেশাদার। তিনি কখনও পারিবারিক কলহের বিষয়ে কোনও কথা বলেননি। এখন ছাত্ররা উদ্বিগ্ন যে, এরপর তাদের প্রশিক্ষণ কে করাবে।

হত্যার কারণ: সমাজের চাপ নাকি অন্য কিছু?

পুলিশ এই হত্যার পেছনের কারণগুলি তদন্ত করছে। একটি ধারণা করা হচ্ছে যে, বাবা সমাজের কটূক্তির কারণে বিরক্ত হয়ে এই পদক্ষেপ নিয়েছেন। তবে এমন কিছু প্রশ্ন রয়েছে যা এই তত্ত্বকে দুর্বল করে। आखिर যে মেয়েকে তিনি আদরে বড় করেছেন, তাকেই হত্যা করা কিভাবে সম্ভব? কেবল সমাজের সমালোচনা কি এই পদক্ষেপের কারণ হতে পারে, নাকি এর পিছনে আরও গভীর রহস্য লুকিয়ে আছে?

সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিও

এই মামলায় এখন একটি নতুন মোড় এসেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় রাধিকা যাদবের একটি ভিডিও ভাইরাল হচ্ছে, যা তিনি এক বছর আগে সঙ্গীতশিল্পী ইনামুলের সঙ্গে শুট করেছিলেন। এই ভিডিওতে একটি প্রেমের গল্প দেখানো হয়েছে। হত্যার পর, অনেকে এই ভিডিওটিকে ঘটনার সঙ্গে যুক্ত করে দেখছেন। এই ভিডিওটি গত বছর জুনে ইনামের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত হয়েছিল এবং এটি জিশান আহমেদ প্রযোজনা করেছিলেন।

ভিডিও কি তদন্তের অংশ?

এই প্রশ্নটি এখন প্রধানভাবে উঠছে যে, এই ভিডিওটি কি রাধিকার হত্যার কারণ হতে পারে? পিতার কি এই ভিডিওতে আপত্তি ছিল? পারিবারিক সম্মানে আঘাত লাগার ভয় কি হত্যার কারণ হয়েছিল? পুলিশ এই দিক থেকেও তদন্ত করছে। যদিও, এখন পর্যন্ত এমন কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি যা প্রমাণ করতে পারে যে, ভিডিওটিই হত্যার সরাসরি কারণ।

ঘটনার দিনের পরিস্থিতি

যেদিন এই ঘটনা ঘটেছিল, সেই সময় প্রতিবেশীরা এ বিষয়ে কিছুই জানতে পারেনি। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগে পর্যন্ত কেউ ঘটনার আভাস পায়নি। পুলিশের গাড়ির সাইরেন শুনে যখন লোকজন ঘর থেকে বের হয়, তখনই তারা এই ভয়াবহ ঘটনার কথা জানতে পারে।

Leave a comment