মহারাষ্ট্রে গণেশোৎসব: রাজ্য উৎসবের স্বীকৃতি

মহারাষ্ট্রে গণেশোৎসব: রাজ্য উৎসবের স্বীকৃতি

মহারষ্ট্রে এবার গণেশোৎসবকে রাজ্য উৎসবের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীশের সরকার এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়ে গণপতি বাপ্পার এই বিশাল পর্বকে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজ্য উৎসব হিসেবে ঘোষণা করেছে।

মুম্বাই: মহারাষ্ট্র সরকার এক ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে গণেশোৎসবকে রাজ্যের সরকারি 'রাজ্য উৎসব' ঘোষণা করেছে। রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীশ এবং সংস্কৃতি মন্ত্রী আশিষ শেলারের উপস্থিতিতে বিধানসভা অধিবেশনে এই ঘোষণা করা হয়। এই সিদ্ধান্ত কেবল একটি সাংস্কৃতিক উৎসবের স্বীকৃতি নয়, বরং রাজ্যের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং সম্মিলিত চেতনাকে সুরক্ষিত ও প্রসারিত করার দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

১৮৯৩ সাল থেকে শুরু হয়েছিল গণেশোৎসব

গণেশোৎসবের সূচনা ১৮৯৩ সালে লোকমান্য বাল গঙ্গাধর তিলক করেছিলেন। তিনি এই উৎসবকে কেবল ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে না দেখে, জাতীয়তাবাদ, সামাজিক ঐক্য, ভাষা এবং সংস্কৃতির প্রতি ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে তৈরি করেছিলেন। সেই থেকে আজ পর্যন্ত এই উৎসব মহারাষ্ট্রে বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনার সাথে পালিত হয়।

সংস্কৃতি মন্ত্রী আশিষ শেলার বিধানসভায় জানিয়েছেন যে গণেশোৎসব নিয়ে আদালতে অনেকগুলো পিটিশন দাখিল করা হয়েছিল, যেখানে এই আয়োজন বন্ধ করার আবেদন জানানো হয়েছিল। তিনি বলেন, “আমাদের সরকার সেই সমস্ত বাধা সফলভাবে অতিক্রম করেছে। এই সরকার রাজ্যের সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র্য রক্ষার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং গণেশোৎসবকে রাজ্য উৎসব ঘোষণা করা সেই প্রতিশ্রুতিরই অংশ।”

রাজ্য উৎসব হওয়ার অর্থ কী?

গণেশোৎসবকে রাজ্য উৎসব ঘোষণা করার ফলে এই উৎসব এখন কেবল ধর্মীয় উৎসবের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং এটি রাজ্য পর্যায়ে একটি সংরক্ষিত সাংস্কৃতিক উৎসবের মর্যাদা পাবে। এর অন্তর্ভুক্ত:

রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ বাজেট এবং আয়োজনের জন্য সহায়তা পাওয়া যাবে। শিক্ষা, সংস্কৃতি এবং পর্যটন বিভাগ এটিকে সরকারি ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত করবে।

সারা মহারাষ্ট্রে সম্মিলিত অংশগ্রহণ এবং উৎসাহ বৃদ্ধি পাবে। এই পদক্ষেপ বিশেষভাবে গণেশ মন্ডল ও আয়োজকদের জন্য উৎসাহের কাজ করবে, যারা প্রতি বছর সামাজিক কাজ, সাম্প্রদায়িক ঐক্য এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে।

গণেশোৎসব ২০২৫: কবে এবং কীভাবে পালিত হবে?

গণেশ চতুর্থী ২০২৫ বুধবার, ২৭ আগস্ট ২০২৫ তারিখে পালিত হবে। এই দিনে মধ্যাহ্ন পূজা মুহূর্ত সকাল ১১:০৬ থেকে দুপুর ১:৪০ পর্যন্ত থাকবে। গণেশ প্রতিমার বিসর্জন শনিবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে সম্পন্ন হবে। এই ১০ দিনের উৎসব ভাদ্র মাসের শুক্ল পক্ষের চতুর্থী থেকে শুরু হয়ে অনন্ত চতুর্দশীতে শেষ হয়। এই সময়ে ভক্তরা গণপতি বাপ্পার প্রতিমা ঘর, মন্ডপ এবং জনসাধারণের স্থানে স্থাপন করে পূজা করেন।

ভগবান গণেশকে ‘বিঘ্নহর্তা’ অর্থাৎ বিঘ্ন দূরকারী দেবতা হিসাবে পূজা করা হয়। এই উৎসব কেবল ধর্মীয় নয়, সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং জাতীয় ঐক্যেরও প্রতীক হয়ে উঠেছে। এটি জাতি, ধর্ম, সম্প্রদায়ের সীমা ছাড়িয়ে সকলকে একত্রিত করে।

Leave a comment