রাজনাথ সিং: ভারত শান্তির সমর্থক, তবে চ্যালেঞ্জ জানালে ছাড় দেওয়া হবে না

রাজনাথ সিং: ভারত শান্তির সমর্থক, তবে চ্যালেঞ্জ জানালে ছাড় দেওয়া হবে না

রণ-সংবাদ ২০২৫-এ প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছেন যে ভারত শান্তির সমর্থক এবং কখনও প্রথমে আক্রমণ করবে না। কিন্তু যদি কোনো দেশ চ্যালেঞ্জ জানায়, তাহলে ভারত সম্পূর্ণ প্রস্তুতি ও শক্তি দিয়ে জবাব দেবে।

নয়া দিল্লি: মধ্যপ্রদেশের মাহুতে অনুষ্ঠিত রণ-সংবাদ ২০২৫ অনুষ্ঠানে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং দেশের সুরক্ষা এবং ভবিষ্যতের যুদ্ধের পরিবর্তিত চিত্র নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। তিনি স্পষ্ট করে বলেন যে ভারত সর্বদা শান্তির সমর্থক এবং কখনও কোনো দেশকে প্রথম আক্রমণ করবে না। কিন্তু যদি কোনো দেশ ভারতের সার্বভৌমত্বকে চ্যালেঞ্জ জানায়, তাহলে তার জবাব সম্পূর্ণ শক্তি ও প্রস্তুতি নিয়ে দেওয়া হবে। রাজনাথ সিং আরও স্পষ্ট করেন যে আধুনিক যুগে যুদ্ধ শুধুমাত্র অস্ত্রের জোরে নয়, বরং প্রযুক্তি, ইন্টেলিজেন্স, অর্থনীতি এবং কূটনীতির সমন্বয়ে লড়া হবে।

রণ-সংবাদ ২০২৫-এর গুরুত্ব এবং ভারতের ভাবনা

রাজনাথ সিং বলেন, রণ-সংবাদ ২০২৫-এর নামটির মধ্যেই একটি গভীর বার্তা রয়েছে। 'রণ' যুদ্ধের কল্পনা করায়, যেখানে 'সংবাদ' আলোচনা এবং চুক্তির দিকে ইঙ্গিত করে। প্রথম দর্শনে এই দুটি শব্দ বিপরীত মনে হলেও, ভারতের ইতিহাসে যুদ্ধ এবং সংলাপ সবসময় একসঙ্গে চলেছে। মহাভারত এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ, যেখানে যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে ভগবান কৃষ্ণ শান্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছিলেন। এর অর্থ হল ভারত সবসময় যুদ্ধের আগে ও পরে সংলাপের ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রেখেছে।

ভবিষ্যতের যুদ্ধের পরিবর্তিত চিত্র

প্রতিরক্ষা মন্ত্রী আরও জানান যে আগামী দিনে যুদ্ধের পদ্ধতি সম্পূর্ণভাবে বদলে যাবে। এখন যুদ্ধ শুধু সেনার সংখ্যা এবং অস্ত্রের শক্তির উপর নয়, বরং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, সাইবার টেকনোলজি, ড্রোন, স্যাটেলাইট সিস্টেম এবং ডেটার উপর ভিত্তি করে হবে। যে দেশ এই আধুনিক প্রযুক্তিগুলির সবচেয়ে বেশি কার্যকরী ব্যবহার করতে পারবে, তারাই ভবিষ্যতে শক্তিশালী বিশ্বশক্তি হিসেবে উঠে আসবে। রাজনাথ সিং বলেন যে আধুনিক যুদ্ধ শুধুমাত্র জমি, সমুদ্র এবং আকাশের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং এটি মহাকাশ এবং সাইবারস্পেস পর্যন্ত ছড়িয়ে গেছে, তাই ভারতকে সব দিকে শক্তিশালী প্রস্তুতি নিতে হবে।

ডেটা, ইন্টেলিজেন্স এবং রিয়েল-টাইম সিদ্ধান্তের গুরুত্ব

আজকের দুনিয়ায় যেকোনো যুদ্ধের জয় শুধুমাত্র শক্তির উপর নয়, বরং তথ্য এবং ডেটার সঠিক ব্যবহারের উপর নির্ভর করে। যে দেশ রিয়েল-টাইম ইন্টেলিজেন্স জোগাড় করতে পারবে এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবে, তারাই জয় লাভ করবে। এটাই কারণ যে ভারত তার গোয়েন্দা ক্ষমতাকে ক্রমাগত শক্তিশালী করছে। নির্ভুল নিশানায় আঘাত হানতে সক্ষম অস্ত্র থেকে শুরু করে মহাকাশ নজরদারি সিস্টেম পর্যন্ত, ভারত প্রতিটি প্রযুক্তিকে তার প্রতিরক্ষা কাঠামোর অংশ বানাচ্ছে, যাতে যেকোনো হুমকির তাৎক্ষণিক এবং সঠিক জবাব দেওয়া যায়।

সক্রিয় কৌশলের প্রয়োজনীয়তা

রাজনাথ সিং স্পষ্ট করে বলেন যে ভারত কখনও যুদ্ধের শুরু করে না। আমাদের নীতি সবসময় শান্তির। কিন্তু বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে যদি কোনো দেশ ভারতের সার্বভৌমত্বকে চ্যালেঞ্জ জানায়, তাহলে ভারতের কাছে জবাব দেওয়া ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প থাকবে না। এর জন্য ভারতকে শুধুমাত্র রক্ষণাত্মক নয়, বরং একটি সক্রিয় কৌশল গ্রহণ করতে হবে, যাতে যেকোনো পরিস্থিতিতে দ্রুত এবং কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া যায়।

Leave a comment