শরীর গঠনের নতুন রূপ প্ল্যাঙ্ক পোজ়ের মাধ্যমে বাড়ি বসে মেদ ঝরান

শরীর গঠনের নতুন রূপ প্ল্যাঙ্ক পোজ়ের মাধ্যমে বাড়ি বসে মেদ ঝরান

আজকের ব্যস্ত জীবনে অনেকেই জিমে যাওয়ার সময় পান না। তবে পেটের মেদ ঝরানো এবং ফিট থাকা এখন আর কোনো দূরের স্বপ্ন নয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধুমাত্র ডায়েট বা সাধারণ যোগাসন নয়, ‘প্ল্যাঙ্ক পোজ়’ নিয়মিত করলে মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই শরীরে দৃশ্যমান পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। এই আসনটি পেশি শক্তিশালী করার পাশাপাশি কোমর ও পেটের চর্বি কমাতে সহায়ক।

প্ল্যাঙ্ক পোজ়: একটি ছোট কিন্তু কার্যকর আসন

প্ল্যাঙ্ক হলো এমন একটি আসন যা হঠাৎ করে জটিল মনে হতে পারে, তবে একবার সঠিকভাবে অভ্যাস করলে শরীরের বিভিন্ন অংশ একসাথে কাজ করে। এটি কেবল পেটের জন্য নয়, কাঁধ, কোমর, নিতম্ব ও পেছনের পেশিকে শক্তিশালী করে। বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করছেন, যারা রোজ মাত্র ১০–৩০ সেকেন্ডের জন্য এটি করেন, তারা এক মাসের মধ্যেই কোমর ও পেটের চর্বি কমে যেতে দেখবেন।

প্ল্যাঙ্ক করার সঠিক পদ্ধতি

প্রথমে ম্যাটে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। হাতের তালু এবং কনুইয়ের ওপর ভর দিয়ে ধীরে ধীরে শরীরটা মাটি থেকে তুলুন। এখানে খেয়াল রাখতে হবে, হাঁটু মাটিতে স্পর্শ না করুক। পায়ের পাতার ওপর শরীরের ভার রাখতে হবে। পেট ভেতরের দিকে টানুন এবং কোমর-নিতম্ব সমান্তরাল রাখুন। কাঁধও সমানভাবে সরল রাখতে হবে। ছোটখাটো ভুলও ফলাফল প্রভাবিত করতে পারে, তাই প্রতিটি ধাপ সাবধানভাবে অনুসরণ করুন।

সময় বৃদ্ধি: ধীরে ধীরে প্ল্যাঙ্কে দক্ষতা অর্জন

শুরুতে ১০ সেকেন্ড করা যথেষ্ট। এরপর ধীরে ধীরে ২০–৩০ সেকেন্ড পর্যন্ত সময় বৃদ্ধি করুন। যারা নিয়মিত অভ্যাস রাখবেন, তারা এক মিনিট পর্যন্ত প্ল্যাঙ্ক করতে পারবেন। নিয়মিত প্ল্যাঙ্ক পোজ়ের মাধ্যমে পেশি শক্তিশালী হয় এবং মেদ ঝরানোর প্রক্রিয়া দ্রুত হয়।

ডায়েটের সঙ্গে সমন্বয়

শুধু প্ল্যাঙ্ক যথেষ্ট নয়। দ্রুত মেদ ঝরাতে হলে ডায়েটের সঠিক নিয়ন্ত্রণও গুরুত্বপূর্ণ। বেশি চর্বি ও চিনি কমিয়ে প্রোটিন ও শাক-সবজি বেশি খাওয়া শরীরকে সাহায্য করে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্ল্যাঙ্ক ও সঠিক ডায়েটের সমন্বয় থাকলে ফলাফল ত্বরান্বিত হয়।

ফলাফল দেখার সময়কাল

প্রথম সপ্তাহে শরীরে তেমন পরিবর্তন না দেখলেও হতাশ হওয়ার প্রয়োজন নেই। নিয়মিত ৪–৬ সপ্তাহ অভ্যাস করলে কোমর পাতলা হওয়া, পেটের চর্বি কমা এবং পেশির টোনিং লক্ষ্য করা যায়। সপ্তাহে কমপক্ষে ৫ দিন এই অভ্যাস রাখলে চূড়ান্ত ফলাফল দীর্ঘস্থায়ী হয়।

সতর্কতা ও পরামর্শ

যদি কোমর বা পিঠে পূর্বে কোনো আঘাত থাকে, তাহলে প্ল্যাঙ্ক করার আগে ফিজিওথেরাপিস্ট বা ফিটনেস বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। অতিরিক্ত সময় ধরে একবারে প্ল্যাঙ্ক করার চেষ্টা করবেন না, এতে পেশি বা জয়েন্টে আঘাত হতে পারে। প্রতিটি ব্যায়াম ধীরে ধীরে সময় বৃদ্ধি করুন।

উপসংহার

জিমে না গিয়ে বাড়িতে ফিট থাকা এখন কঠিন নয়। দৈনিক প্ল্যাঙ্ক অভ্যাস এবং সঠিক ডায়েটের সমন্বয়ে শরীরের চর্বি দ্রুত কমানো সম্ভব। যারা ব্যস্ত জীবনযাপন করেন, তাদের জন্য এটি সেরা ঘরোয়া সমাধান। মাত্র কয়েক সপ্তাহের অভ্যাসেই আপনি দেখতে পাবেন পেট কমছে, কোমর ফিট হচ্ছে, এবং শরীরের সামগ্রিক টোনিং বৃদ্ধি পাচ্ছে।

Leave a comment