রাশিয়া-বেলারুশের পারমাণবিক মহড়া: পূর্ব ইউরোপে নিরাপত্তা জোরদার

রাশিয়া-বেলারুশের পারমাণবিক মহড়া: পূর্ব ইউরোপে নিরাপত্তা জোরদার

রাশিয়া ও বেলারুশ নতুন ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও পারমাণবিক সক্ষমতার প্রদর্শন করেছে। এর ফলে পোল্যান্ড ও বাল্টিক রাষ্ট্রগুলিতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

বিশ্ব বার্তা: রাশিয়া ও বেলারুশ যৌথভাবে একটি বড় সামরিক মহড়া চালিয়েছে। এই মহড়া ন্যাটো (NATO) দেশগুলির উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এর কারণ স্পষ্ট - এই মহড়ার সময় রাশিয়া তার পারমাণবিক সামরিক সক্ষমতার প্রদর্শন করেছে। রাশিয়া ও বেলারুশের এই যৌথ মহড়া এমন এক সময়ে হচ্ছে যখন ইউরোপে এমনিতেই উত্তেজনার পরিবেশ বিরাজ করছে।

রাশিয়া ও বেলারুশের যৌথ মহড়া

এই মহড়ার নাম দেওয়া হয়েছে 'জাপাদ ২০২৫'। এটি একটি দীর্ঘ পরিকল্পিত সামরিক মহড়া। এতে পারমাণবিক অস্ত্র বহনকারী বোমারু বিমান, যুদ্ধজাহাজ, হাজার হাজার সৈন্য এবং শত শত যুদ্ধ যান অন্তর্ভুক্ত ছিল। এই মহড়ার উদ্দেশ্য ছিল, কোনো শত্রু দেশ আক্রমণ করলে উভয় দেশ কীভাবে সম্মিলিতভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে তা পরীক্ষা করা।

রাশিয়া নতুন ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দেখিয়েছে

এই মহড়ার সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য ছিল রাশিয়ার নতুন 'ওরেশনিক' ইন্টারমিডিয়েট রেঞ্জ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের প্রদর্শন। এই ক্ষেপণাস্ত্রটি পারমাণবিক ওয়ারহেড বহন করতে সক্ষম। মহড়ার সময় এটি পরীক্ষা করা হয়েছিল এবং এটিকে রাশিয়ার সামরিক শক্তির নতুন পরিচয় হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ন্যাটো দেশগুলিতে চাঞ্চল্য

রাশিয়া ও বেলারুশের এই পদক্ষেপে ন্যাটো দেশগুলি সতর্ক হয়ে গেছে। বিশেষ করে পোল্যান্ড, লাটভিয়া এবং লিথুয়ানিয়ার মতো ন্যাটো সদস্য রাষ্ট্রগুলি বেশি উদ্বিগ্ন। তাদের সীমান্ত বেলারুশের সাথে লেগে আছে। এই দেশগুলি ভয় পাচ্ছে যে যদি রাশিয়া ও বেলারুশ আগ্রাসী মনোভাব গ্রহণ করে, তবে প্রথমেই তাদের লক্ষ্যবস্তু করা হতে পারে।

ন্যাটো মহাসচিবের বক্তব্য

ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুটে ব্রাসেলসে বলেছেন, "এটা ভাবা এখন ভুল হবে যে স্পেন বা ব্রিটেন বেশি নিরাপদ আর এস্তোনিয়া বা লিথুয়ানিয়া বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।" তিনি বলেন, ৩২টি দেশের এই জোটকে বুঝতে হবে যে নিরাপত্তার চ্যালেঞ্জ সমগ্র ইউরোপের জন্য সমান। তাঁর এই বক্তব্য স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয় যে ন্যাটো এখন কোনো বিপদকে কেবল পূর্ব ইউরোপের মধ্যে সীমাবদ্ধ বলে মনে করতে পারে না।

পোল্যান্ডে ড্রোন অনুপ্রবেশ উদ্বেগ বাড়িয়েছে

কয়েক সপ্তাহ আগে পোল্যান্ড দাবি করেছিল যে রাশিয়ান ড্রোন তার সীমান্ত লঙ্ঘন করেছে। পোল্যান্ড এটিকে রাশিয়ার পক্ষ থেকে ইচ্ছাকৃত উস্কানি বলে অভিহিত করেছে। এই ঘটনার পর ন্যাটো তার পূর্বাঞ্চলে বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করেছে। এই কারণেই রাশিয়া ও বেলারুশের এই মহড়া আরও বেশি সংবেদনশীল হয়ে উঠেছে।

ন্যাটো একটি সামরিক জোট যেখানে আমেরিকা, কানাডা, ব্রিটেন, জার্মানি, ফ্রান্স এবং ইতালির মতো বড় দেশগুলি অন্তর্ভুক্ত। এই জোটের উদ্দেশ্য হল তার সদস্য দেশগুলির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। রাশিয়া ও বেলারুশের সামরিক মহড়া সরাসরি এই জোটের নিরাপত্তার জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে সামনে এসেছে।

Leave a comment