রাশিয়ায় WhatsApp ও Telegram-এর ভয়েস কলিংয়ে আংশিক নিষেধাজ্ঞা

রাশিয়ায় WhatsApp ও Telegram-এর ভয়েস কলিংয়ে আংশিক নিষেধাজ্ঞা

রাশিয়া WhatsApp এবং Telegram-এর ভয়েস কলিংয়ের উপর আংশিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। সরকারি সংস্থাগুলির মতে, এই প্ল্যাটফর্মগুলি জালিয়াতি, তোলাবাজি এবং সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে। সংস্থাগুলি রাশিয়ার আইন অনুযায়ী ডেটা অ্যাক্সেস দিলে তবেই কলিং পরিষেবা পুনরুদ্ধার করা হবে।

টেক নিউজ: রাশিয়া বুধবার WhatsApp এবং Telegram-এর মতো জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপগুলির কলিং ফিচারের উপর নতুন নিষেধাজ্ঞা জারি করার ঘোষণা করেছে। রাশিয়ার কমিউনিকেশন ওয়াচডগ এজেন্সি Roskomnadzor-এর अनुसार, বিদেশি মেসেজিং অ্যাপগুলি এখন 'প্রধান ভয়েস সার্ভিস' হয়ে উঠেছে, যা জালিয়াতি, তোলাবাজি এবং দেশে নাগরিকদের সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে জড়িত করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে। এই কারণেই রাশিয়া এই অ্যাপগুলিকে আইন অনুযায়ী ডেটা শেয়ার করতে বাধ্য করার পদক্ষেপ নিয়েছে।

সুরক্ষা এজেন্সিগুলির চিন্তা

রুশ নিরাপত্তা সংস্থাগুলির বক্তব্য, সাম্প্রতিক সময়ে Telegram এবং WhatsApp ইউক্রেন-সংশ্লিষ্ট নেটওয়ার্ক দ্বারা রাশিয়ার নাগরিকদের নিয়োগ অথবা অন্তর্ঘাত এবং অন্যান্য বেআইনি কার্যকলাপে জড়িত করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে। সংস্থাগুলির বিশ্বাস, কলিং ফিচারের মাধ্যমে ফ্রড এবং তোলাবাজির মতো ঘটনা বেড়েছে।

সরকারের আরও বক্তব্য, এই অ্যাপগুলি কেবল জালিয়াতির ক্ষেত্রেই নয়, সন্ত্রাসবাদের সাথে জড়িত মামলাগুলির তদন্তের জন্য প্রয়োজনীয় ডেটাও প্রদান করুক। যতক্ষণ না এই ডেটা শেয়ার করা হচ্ছে, কলিং ফিচারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে।

Roskomnadzor-এর নতুন পদক্ষেপ

Roskomnadzor জানিয়েছে, বিদেশি মেসেজিং অ্যাপগুলির উপর 'আংশিক কলিং নিষেধাজ্ঞা' জারি করা হয়েছে। এর মানে হল টেক্সট মেসেজিং এবং অন্যান্য ফিচার চালু থাকবে, কিন্তু ভয়েস কলিং সীমিতভাবে উপলব্ধ থাকবে। এজেন্সি আরও স্পষ্ট করেছে যে কলিং পরিষেবা তখনই সম্পূর্ণরূপে পুনরুদ্ধার করা হবে যখন অ্যাপগুলি রুশ আইন মেনে ডেটা অ্যাক্সেস উপলব্ধ করবে।

Telegram এবং WhatsApp-এর প্রতিক্রিয়া

Telegram এই বিষয়ে AFP-কে জানিয়েছে যে তারা প্ল্যাটফর্মের অপব্যবহারের বিরুদ্ধে ক্রমাগত ব্যবস্থা নেয়। কোম্পানির দাবি, তারা প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ ক্ষতিকারক কনটেন্ট প্ল্যাটফর্ম থেকে সরিয়ে দেয়। Telegram জানিয়েছে, অন্তর্ঘাত, হিংসা ছড়ানো এবং জালিয়াতির মতো কার্যকলাপ বন্ধ করার জন্য ক্রমাগত নজরদারি চালানো হচ্ছে।

WhatsApp-এর পেরেন্ট কোম্পানি Meta এই নিষেধাজ্ঞা নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি। যদিও, Meta এর আগেও বহুবার সরকারের কাছে ইউজার ডেটা শেয়ার করার বিষয়ে কঠোর মনোভাব দেখিয়েছে।

রাশিয়ায় অনলাইন স্বাধীনতার উপর কড়াকড়ি

ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করার পর থেকে রাশিয়া দেশে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এবং অনলাইন মত প্রকাশের উপর কড়া নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে। সরকার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এবং মেসেজিং অ্যাপগুলির উপর নজরদারি বাড়াচ্ছে যাতে বেআইনি এবং বিপজ্জনক কনটেন্ট আটকানো যায়। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এই নিষেধাজ্ঞার উদ্দেশ্য কেবল সুরক্ষা নয়, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলির উপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ আরও জোরদার করা।

রাশিয়ার সাধারণ ইউজারদের উপর কী প্রভাব পড়বে

  • রাশিয়ার WhatsApp এবং Telegram ইউজাররা কলিং ফিচারের সীমিত ব্যবহার করতে পারবে।
  • মেসেজিং, টেক্সট এবং অন্যান্য স্ট্যান্ডার্ড ফিচার এখনও চালু থাকবে।
  • অ্যাপগুলিকে কলিং পরিষেবা পুনরুদ্ধার করার জন্য রুশ আইন অনুযায়ী ডেটা অ্যাক্সেস দেওয়া বাধ্যতামূলক হবে।

বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, এই পদক্ষেপটি বিশ্বব্যাপী ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম এবং জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলির মধ্যে ক্রমবর্ধমান সংঘাতের অংশ। এই ধরনের সিদ্ধান্তে ইউজারদের প্রাইভেসি এবং অনলাইন কমিউনিকেশনের স্বাধীনতার উপর বড় প্রভাব পড়তে পারে।

Leave a comment