সিনেমার এক টানে চোখের জলে ভাসছে প্রেক্ষাগৃহ! বলিউডের নতুন আবেগ-তুফান ‘সাইয়ারা’
জেনারেশন Z-এর মনে দাগ কেটে দিয়েছে এক অভিনব প্রেমের গল্প। অহন পাণ্ডে ও অনীত পদ্দা অভিনীত ‘সাইয়ারা’ সিনেমা দেখে প্রেক্ষাগৃহে কাঁদছেন যুবসমাজ, ঠিক যেমনটা একসময় দেখা গিয়েছিল ‘আশিকি ২’ বা ‘কবীর সিং’-এর সময়। কিন্তু এবার সেই আবেগ যেন বহু গুণে বেশি। সোশ্যাল মিডিয়া, গুগল সার্চ, রিল ভিডিও—সব জায়গায় একটাই প্রশ্ন ঘুরছে: “এই সিনেমায় এমন কী আছে?” শহর থেকে শহরতলি, বড় স্ক্রিন থেকে মোবাইলের পর্দা—'সাইয়ারা' এখন সর্বত্র।
রিলের গল্প, কিন্তু রিয়েল আবেগ—প্রেক্ষাগৃহেই ভেঙে পড়ছে দর্শক
ভোপালের একটি মাল্টিপ্লেক্সে সিনেমা চলাকালীন ২৪ বছরের এক যুবকের শ্বাসকষ্ট, হাত-পায়ের কাঁপুনি শুরু হয়। অন্যদিকে দিল্লির এক তরুণী সিনেমা দেখার পর পুরো ১৫ মিনিট অজ্ঞান হয়ে পড়েন বলে খবর। এ ঘটনা নিছক অতিরঞ্জন নয়, বরং বোঝাচ্ছে এই সিনেমা দর্শকের আবেগের সঙ্গে কত গভীর ভাবে মিশে গেছে। প্রেক্ষাগৃহ থেকে বেরিয়ে অনেকেই বলছেন, “শেষ ২০ মিনিটে চোখের জল আটকে রাখা অসম্ভব।” এমনই এক আবেগতাড়িত অভিজ্ঞতা অনেকেই শেয়ার করছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়।
কেন এই আবেগ? ‘সাইয়ারা’ সিনেমায় লুকিয়ে আছে কোনও অলিখিত গল্প?
অনেকেই বলছেন, এই সিনেমা যেন মনের গভীরে লুকিয়ে থাকা সেই ‘অসমাপ্ত প্রেম’ বা ‘নিরব ভালোবাসা’-র অনুভবকে টেনে বের করে আনছে। অহন পাণ্ডে অভিনীত চরিত্রটি বাস্তবের মতোই নিঃশব্দ, আত্মসংযত অথচ ভালবাসায় পূর্ণ। তাঁর ‘সাইয়ারা’—অনীত পদ্দা অভিনীত চরিত্রটিও যেন এক আলাদা আকাশ। পরিচালনার স্টাইলে মোহিত সুরির স্পর্শ থাকায় সিনেমাটি আবেগঘন, দৃষ্টিনন্দন ও সংগীতপ্রধান হয়েছে। তাই এই সিনেমা শুধুমাত্র একটা লাভ স্টোরি নয়, বরং এক অনুভবের নাম।
‘সাইয়ারা’ শব্দের অর্থ: প্রেমের চেয়ে বড়, এক মহাজাগতিক একাকীত্ব
এখন বহু দর্শকের মনে একটাই প্রশ্ন ঘুরছে—‘সাইয়ারা’ মানে কী? অনেকে ভেবে নিচ্ছেন, এটি উর্দু ভাষার ‘প্রিয়তমা’ অর্থে ব্যবহৃত। কিন্তু আসলে তা নয়। 'সাইয়ারা' শব্দটি উর্দু থেকে আগত, যার অর্থ—একটি নক্ষত্র, যা একা ঘোরে, নিঃসঙ্গ থাকে, অথচ নিজের আলোয় গোটা আকাশকে উদ্ভাসিত করে তোলে। এক গভীর একাকীত্ব, অথচ এক নিরব দ্যুতিময়তা—এই দ্বৈততা বোঝাতেই সিনেমার নাম রাখা হয়েছে ‘সাইয়ারা’। নামের মধ্যেই আছে গল্পের আত্মা।
সিনেমা না বাস্তব? 'সাইয়ারা'র স্পর্শে ভাঙছে মানসিক বন্ধন
সিনেমাটি দেখে বহু দর্শকই নিজেদের পুরনো স্মৃতি, ভাঙা সম্পর্ক কিংবা হারিয়ে যাওয়া কাউকে স্মরণ করছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় বহু পোস্ট ঘুরছে যেখানে লেখা, “এই সিনেমা আমাকে আমার হারিয়ে যাওয়া মানুষটাকে মনে করিয়ে দিল।” কেউ লিখেছেন, “আমি কাউকে কখনও বলিনি কতটা ভালোবাসি, কিন্তু আজ মনে হচ্ছে ‘সাইয়ারা’ আমার গল্প।” ঠিক এখানেই সিনেমার জয়। বাস্তব ও কল্পনার মধ্যকার সেই সূক্ষ্ম সীমারেখাকে পেরিয়ে এসে এটি হয়ে উঠেছে ‘মনের আয়না’।
'সাইয়ারা'র আলোচনায় গা ভাসাল বলিউডও, অহন পাণ্ডে রাতারাতি তারকা!
সিনেমাটি যে শুধুমাত্র দর্শকদের আবেগ ছুঁয়েছে, তাই নয়—বলিউডের প্রবীণ পরিচালক ও অভিনেতারাও ছবিটির প্রশংসা করছেন। নবাগত অহন পাণ্ডে ও অনীত পদ্দা দু’জনেই যেন এক ঝাঁক নতুন অভিনয়ের আশ্বাস দিয়েছেন। মোহিত সুরির পরিচালনায় ছবিটি হয়ে উঠেছে সেই বিরল লাভ স্টোরিগুলির একটি, যেগুলো শুধু গল্প বলে না—জীবনের অভিজ্ঞতাও জাগিয়ে তোলে। বলিউডে নতুন তারকার উত্থান যে সত্যিই হয়েছে, তাতে আর সন্দেহ নেই।