প্রাক্তন সাংসদ সন্তোষ কুশওয়াহা জেডিইউ ছেড়ে আরজেডিতে যোগ দিলেন। সীমাঞ্চল অঞ্চলে দলের রাজনৈতিক প্রভাবে পরিবর্তনের সম্ভাবনা, ২০২৫ সালের নির্বাচনের জন্য নীতীশ কুমারের চ্যালেঞ্জ বাড়ল।
পাটনা: ২০২৫ সালের বিহার বিধানসভা নির্বাচনের আগে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের দল জেডিইউ (JD-U) বড় ধাক্কা খেল। পূর্ণিয়ার প্রাক্তন সাংসদ এবং জেডিইউ-এর বরিষ্ঠ নেতা সন্তোষ কুশওয়াহা আজ, ২০২৫ সালের ১০ অক্টোবর দুপুর ২টায় দল থেকে ইস্তফা দিয়ে রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি – RJD)-এ যোগ দিলেন। তাঁর এই সিদ্ধান্তের ফলে বিহারের রাজনৈতিক সমীকরণে বড় পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে।
দলে অবহেলা
সন্তোষ কুশওয়াহার আরজেডিতে যোগদানের পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ বলা হচ্ছে। বলা হচ্ছে যে, দলে তাঁর অবহেলা এবং আসন্ন নির্বাচনে টিকিট বণ্টনে উপেক্ষা তাঁকে এই পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করেছে। কুশওয়াহা ধমদাহা বিধানসভা আসন থেকে জেডিইউ-এর মন্ত্রী লেসি সিংয়ের বিরুদ্ধে নির্বাচনে লড়ার কথা ভাবছেন। তাঁর এই পদক্ষেপের ফলে সীমাঞ্চল অঞ্চলে জেডিইউ-এর রাজনৈতিক প্রভাব দুর্বল হতে পারে।
সীমাঞ্চলে কুশওয়াহার প্রভাব
সন্তোষ কুশওয়াহা কুশওয়াহা-কুরমি সম্প্রদায় থেকে এসেছেন এবং সীমাঞ্চল অঞ্চলে তাঁর বিশেষ রাজনৈতিক প্রভাব রয়েছে। তিনি দু'বার (২০১৪ এবং ২০১৯) পূর্ণিয়া থেকে সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর আরজেডিতে যোগদান জেডিইউ-এর জন্য এই অঞ্চলে একটি বড় সাংগঠনিক ক্ষতি বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে কুশওয়াহার এই পদক্ষেপ সীমাঞ্চলে আরজেডির ভোটব্যাঙ্ককে শক্তিশালী করতে পারে।
আরজেডির কৌশল
আরজেডি এটিকে তাদের সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং (Social Engineering) কৌশলের অংশ হিসেবে দেখছে। দলের মতে, কুশওয়াহার যোগদানে সীমাঞ্চলে তাদের প্রভাব আরও বাড়বে এবং সমাজের বিভিন্ন স্তরে তাদের পৌঁছ সহজ হবে। এছাড়াও, এলজেপি (রামবিলাস)-এর নেতা অজয় কুশওয়াহারও আরজেডিতে যোগদানের সম্ভাবনা রয়েছে, যা কুশওয়াহা সমাজ এবং দলের জন্য আরও প্রভাবশালী হতে পারে।
বিহারের নির্বাচনী সমীকরণে প্রভাব
বিশ্লেষকদের মতে, এই ঘটনাপ্রবাহ ২০২৫ সালের বিহার বিধানসভা নির্বাচনের রাজনৈতিক সমীকরণকে প্রভাবিত করবে। তেজস্বী যাদবের নেতৃত্বে আরজেডি নতুন মুখদের যুক্ত করে নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করার চেষ্টা করছে। সন্তোষ কুশওয়াহার যোগদান দলের জন্য কেবল নির্বাচনী কৌশল নয়, সীমাঞ্চলে সাংগঠনিক দৃঢ়তাও প্রমাণ করতে পারে।
নীতীশ কুমার ও জেডিইউ-এর চ্যালেঞ্জ
জেডিইউ-এর জন্য এই নির্বাচনী চ্যালেঞ্জ বড়। সন্তোষ কুশওয়াহার চলে যাওয়ায় দলকে সীমাঞ্চলে তাদের পুরোনো সমর্থক এবং ভোটব্যাঙ্ক ধরে রাখতে অতিরিক্ত পরিশ্রম করতে হবে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন যে জেডিইউ-কে দলের ভাবমূর্তি, নেতৃত্ব এবং স্থানীয় সাংগঠনিক দৃঢ়তার উপর মনোযোগ দিতে হবে, যাতে আসন্ন নির্বাচনে এর প্রভাব কমানো যায়।
কুশওয়াহার রাজনৈতিক জীবন
সন্তোষ কুশওয়াহা তাঁর রাজনৈতিক জীবনে সীমাঞ্চল এবং বিহারের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। দু'বারের সাংসদ কুশওয়াহা আঞ্চলিক এবং সামাজিক বিষয়গুলিকে প্রাধান্য দিয়েছেন। তাঁর আরজেডিতে যোগদানের পর তেজস্বী যাদবের নেতৃত্বে দল সীমাঞ্চলে নতুন সুযোগ পেতে পারে এবং বিরোধী জোট আরও শক্তিশালী হতে পারে।