সেবির সতর্কবার্তা সত্ত্বেও এফএন্ডও ট্রেডিংয়ে বিপুল ক্ষতির সম্মুখীন বিনিয়োগকারীরা

সেবির সতর্কবার্তা সত্ত্বেও এফএন্ডও ট্রেডিংয়ে বিপুল ক্ষতির সম্মুখীন বিনিয়োগকারীরা

সেবির সতর্কবার্তা সত্ত্বেও, অপশন এবং ফিউচার ট্রেডিংয়ে বিনিয়োগকারীরা বিপুল ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। অর্থবর্ষ ২০২৫-এ, এফএন্ডও ট্রেডিংয়ে ৯১% খুচরা বিনিয়োগকারী ১.০৬ লক্ষ কোটি টাকা হারিয়েছে। কল-পুট খেলায় বাজার মূল্য ১.৭৫ লক্ষ কোটি টাকা কমে গেছে, যা মাল্টিব্যাগার শেয়ারের বৃদ্ধিতে বাধা দিয়েছে।

SEBI's warning: সেবি অপশন এবং ফিউচার ট্রেডিংয়ে অনিয়ন্ত্রিত ফটকাবাজি রোধে ব্যবস্থা জোরদার করেছে, যার ফলে বাজারে বড় পতন দেখা দিয়েছে। বিএসই এবং এনএসই-র মাল্টিব্যাগার শেয়ারগুলিতে যথাক্রমে ২৯% এবং ২২% পর্যন্ত হ্রাস দেখা গেছে, যার ফলে বিনিয়োগকারীরা ১.৭৫ লক্ষ কোটি টাকা হারিয়েছে। এফএন্ডও ট্রেডিংয়ে ৯১% খুচরা বিনিয়োগকারী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এবং সেবি এই ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে কোনো ত্রুটি রাখেনি।

সেবির কঠোরতা এবং বাজারের উপর প্রভাব

সেবি অপশন এবং ফিউচার ট্রেডিংয়ের ত্রুটিগুলি দূর করার জন্য নিরন্তর পদক্ষেপ নিয়েছে। সম্প্রতি সেবি তার অভিযান আরও জোরদার করেছে, যার ফলে বাজারে দ্রুত পতন দেখা দিয়েছে। বিএসই এবং এনএসই-র মাল্টিব্যাগার স্টকগুলির বৃদ্ধি হঠাৎ থেমে গেছে এবং অনেক শেয়ার তাদের অল-টাইম হাই থেকে ২০-৩০ শতাংশ কমে গেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে বিনিয়োগকারীরা বাজারে বড় তেজি দেখে এফএন্ডও ট্রেডিংয়ে প্রবেশ করে, কিন্তু জ্ঞান ও উপলব্ধির অভাবে তারা বিপুল ক্ষতির সম্মুখীন হয়।

বিশেষভাবে বিএসই-র শেয়ার প্রায় ২৯ শতাংশ কমে গেছে, যার ফলে বিনিয়োগকারীদের ৩৫,০০০ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। এনএসই-র মাল্টিব্যাগার স্টকগুলিও ২২ শতাংশ পর্যন্ত নিচে নেমে এসেছে, যার ফলে মোট ১.৪ লক্ষ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে।

কোম্পানির উপার্জনের উপর প্রভাব

এফএন্ডও ট্রেডিংয়ে হঠাৎ পতনের প্রভাব কোম্পানির উপার্জনের উপরও পড়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ডিসকাউন্ট ব্রোকারেজ ফার্ম অ্যাঞ্জেল ওয়ানের শেয়ারগুলিতে ৩৭ শতাংশ পর্যন্ত পতন দেখা গেছে। বিশেষজ্ঞ নীরাজ দিওয়ানের মতে, সাপ্তাহিক মেয়াদ ১৫ দিন করার বা মেয়াদোত্তীর্ণের সংখ্যা কমানোর আলোচনা বাজারের অস্থিরতা বাড়িয়েছে। এছাড়াও, সেবির সম্ভাব্য পদক্ষেপ নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ভয় তৈরি হয়েছে।

গ্লোবাল ব্রোকারেজ ফার্ম জেফরিজ জানিয়েছে যে যদি সাপ্তাহিক মেয়াদ ১৫ দিন করা হয়, তবে বিএসই-র ইপিএস ২০-৫০ শতাংশ এবং নূভামা-র জন্য ১৫-২৫ শতাংশ কমানো সম্ভব। অন্যদিকে, যদি সেবি মাসিক মেয়াদ চালু করে, তবে বাজারে বিক্রির চাপ আরও বাড়তে পারে।

এফএন্ডও-তে ক্ষতির পরিসংখ্যান

সেবি অক্টোবর ২০২৪-এ এফএন্ডও ট্রেডিং নিয়ন্ত্রণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। অর্থবর্ষ ২০২৫-এ, ইকুইটি ডেরিভেটিভস সেগমেন্টে ৯১% খুচরা বিনিয়োগকারী মোট ১.০৬ লক্ষ কোটি টাকা হারিয়েছে। এর মানে হল, গড়ে একজন ব্যবসায়ী ১.১ লক্ষ টাকা হারিয়েছে।

এনএসই এই ক্ষেত্রে প্রধান এবং অপশন প্রিমিয়াম ট্রেডিংয়ে ৭৮% এবং ফিউচার প্রিমিয়াম ট্রেডিংয়ে ৯৯% মার্কেট শেয়ার ধারণ করে। জুন ২০২৫ পর্যন্ত মোট টার্নওভারের মধ্যে এর মার্কেট শেয়ার ছিল ৯৩.৫ শতাংশ। বিএসই এবং এনএসই সম্প্রতি ডেরিভেটিভসের মেয়াদোত্তীর্ণ তারিখ পরিবর্তন করেছে, যা বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা এবং অস্থিরতা উভয়ই বাড়িয়েছে।

বাজারের ডেটা এবং ট্রেডিং ভলিউম

আগস্ট ২০২৫-এ বিএসই এবং এনএসই উভয় ক্ষেত্রেই দৈনিক ট্রেডিংয়ে বৃদ্ধি দেখা গেছে। এনএসই-র গড় দৈনিক ট্রেডিং ভলিউম (এডিটিভি) ৩.২% বেড়ে ২৩৬ লক্ষ টাকা হয়েছে, অন্যদিকে বিএসই-র এডিটিভি ১৭.২% বেড়ে ১৭৮ লক্ষ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। এটি নির্দেশ করে যে বাজারে বিনিয়োগকারীরা সক্রিয়, কিন্তু এফএন্ডও ট্রেডিংয়ে বড় পরিমাণে ঝুঁকিও বিদ্যমান।

Leave a comment