দেশীয় বাজারে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সতর্কতা দেখা গিয়েছিল, যার প্রভাব সেনসেক্স এবং নিফটির প্রাথমিক পতনে স্পষ্ট হয়ে ওঠে। বাজারের শুরুতে সেনসেক্স ৩৪ পয়েন্ট কমে ৮৩,৩৯৮-তে খোলে, যেখানে নিফটি ১১ পয়েন্ট কমে ২৫,৪৫০-এ পৌঁছায়। ব্যাংক নিফটির ক্ষেত্রেও দুর্বলতা দেখা যায় এবং এটি ৯৩ পয়েন্ট কমে ৫৬,৯৩৮-এর স্তরে খোলে।
টাকারও দুর্বলতা, ডলারের বিপরীতে দর পতন
মুদ্রা বাজারেও সামান্য দুর্বলতা লক্ষ করা যায়। মার্কিন ডলারের বিপরীতে ভারতীয় মুদ্রা ১৮ পয়সা কমে ৮৬.৫৭-তে খোলে। এর প্রভাব আমদানি-রপ্তানি সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রগুলিতেও দেখা যায়, বিশেষ করে তেল এবং গ্যাস কোম্পানিগুলির দিকে বিনিয়োগকারীদের নজর ছিল।
বিভিন্ন ক্ষেত্রের পারফর্ম্যান্স মিশ্র, মেটাল ও মিডিয়াতে সবচেয়ে বেশি চাপ
বাজারের পতনের প্রভাব বিভিন্ন খাতেও নজরে আসে। FMCG এবং অয়েল অ্যান্ড গ্যাস বাদে প্রায় সব সেক্টরই লাল চিহ্নে শুরু করে। সবচেয়ে বেশি চাপ ছিল মেটাল ও মিডিয়া সেক্টরে, যেখানে বিক্রির চাপ অব্যাহত ছিল।
আজকের শীর্ষ লাভকারী এবং ক্ষতিগ্রস্তদের উপর নজর
মন্থর সূচনা সত্ত্বেও কিছু শেয়ার সবুজ চিহ্নে খোলা হয়।
শীর্ষ লাভকারীদের মধ্যে ছিল TRENT, ASIANPAINT, HINDUNILVR, BAJAJFINSV এবং HDFCBANK।
অন্যদিকে, শীর্ষ ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় ছিল MARUTI, ETERNAL, HCLTECH, TECHM এবং BEL-এর মতো শেয়ার।
ভারতের জবাব, বাণিজ্য নীতিতে পরিবর্তন নয়
এই শুল্ক সময়সীমা নিয়ে ভারত স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছে যে তারা কোনো আন্তর্জাতিক চাপের কাছে নতি স্বীকার করে তাদের বাণিজ্য নীতিতে পরিবর্তন আনবে না। বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল বলেছেন যে ভারত কেবল দেশের স্বার্থ বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেয় এবং কোনো বহিরাগত শক্তি দ্বারা প্রভাবিত হবে না।
বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিক্রি হওয়া উদ্বেগের কারণ
বিদেশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের (FIIs) শেয়ার বিক্রি এই মুহূর্তে দেশের বাজারে ভারী প্রভাব ফেলছে। গত শুক্রবার FIIs প্রায় ১,৯০০ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে। এটি ছিল টানা পঞ্চম দিন যখন তারা বাজার থেকে অর্থ তুলে নিচ্ছে।
দেশীয় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের (DIIs) কথা বললে, তারাও এবার ১,০০০ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে। উভয় পক্ষের বিনিয়োগ হ্রাসের কারণে বাজারে চাপ সৃষ্টি হয়েছে।
দুর্বল Q1 আপডেটে সতর্কতা বৃদ্ধি
কর্পোরেট সেক্টরের সাম্প্রতিক আপডেটও বাজারকে প্রভাবিত করেছে। IndusInd Bank-এর প্রথম ত্রৈমাসিকের পারফর্ম্যান্স প্রত্যাশার চেয়ে দুর্বল ছিল। যদিও Bank of India-এর ১১ শতাংশ অগ্রিম বৃদ্ধি দেখা গেছে, যা ব্যাংকিং সেক্টরে কিছুটা আশা জুগিয়েছে। এছাড়াও IDBI, Dhanlaxmi Bank এবং Bank of Maharashtra-ও ভালো পারফর্ম করেছে।
বৈশ্বিক বাজার থেকেও দুর্বল ইঙ্গিত
বৈশ্বিক বাজার থেকেও বাজারের জন্য ইতিবাচক সংকেত আসেনি। GIFT নিফটি ২৫,৫২৫-এর কাছাকাছি স্থিতিশীল রয়েছে, যেখানে Dow Futures-এ ১৫০ পয়েন্ট এবং Nikkei-তে ২৫০ পয়েন্ট পতন হয়েছে। অপরিশোধিত তেলের দাম ৬৮ ডলারের নিচে নেমে এসেছে, যা ভারতীয় অর্থনীতির জন্য উপকারী হতে পারে। যদিও সোনার দাম ২৫ ডলার কমে ৩,৩২০ ডলারে নেমে এসেছে, অন্যদিকে রুপোর দাম ১৪ বছরের সর্বোচ্চ স্তর ৩৭ ডলারে পৌঁছেছে।