শ্রী বাঁকে বিহারী মন্দির ন্যাস গঠন: উত্তর প্রদেশ সরকারের নতুন উদ্যোগ

শ্রী বাঁকে বিহারী মন্দির ন্যাস গঠন: উত্তর প্রদেশ সরকারের নতুন উদ্যোগ

উত্তর প্রদেশ সরকার বিধানসভার বাদল অধিবেশনে শ্রী বাঁকে বিহারী মন্দির ন্যাস গঠন বিল পেশ করেছে। এই ন্যাস স্বামী হরিদাস পরম্পরা সুরক্ষিত রাখবে এবং ভক্তদের জন্য আধুনিক সুবিধা, প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করবে।

UP Monsoon Session 2025: উত্তর প্রদেশ বিধানসভার বাদল অধিবেশনের তৃতীয় দিনে সরকার শ্রী বাঁকে বিহারী মন্দির ন্যাস গঠন বিল পেশ করেছে। এই বিলের উদ্দেশ্য মন্দিরের প্রশাসনকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া এবং ভক্তদের অভিজ্ঞতা উন্নত করা বলে জানানো হয়েছে। সরকার স্পষ্ট করেছে যে ন্যাস গঠন স্বামী হরিদাসের পরম্পরা বজায় রাখা এবং এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য করা হয়েছে।

ন্যাসের গঠন ও উদ্দেশ্য

সরকার বলেছে যে ন্যাসের গঠন মন্দিরের ধর্মীয় ঐতিহ্য এবং প্রথাগত রীতিনীতি রক্ষা করে প্রশাসনিক কাঠামো মজবুত করবে। এই অধ্যাদেশ মন্দিরে পূজা-অর্চনা, অনুষ্ঠান এবং উৎসব উদযাপনের পরিচালনায় কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ বা পরিবর্তন রোধ করার জন্য প্রযোজ্য হবে। ন্যাস গঠন করা হবে মন্দিরের অর্ঘ্য, দান, অস্থাবর ও স্থাবর সম্পত্তির ব্যবস্থাপনার জন্য।

মন্দিরের সম্পত্তিগুলির মধ্যে মূর্তি, মন্দির চত্বর, ভক্তদের দেওয়া ভেট ও উপহার, নগদ অনুদান, হুন্ডি সংগ্রহ, ব্যাংক ড্রাফট এবং চেক অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এছাড়াও অলঙ্কার, অনুদান, অবদান এবং মন্দির সম্পর্কিত সমস্ত অস্থাবর ও স্থাবর সম্পত্তির উপর ন্যাসের অধিকার থাকবে।

স্বামী হরিদাসের পরম্পরার সংরক্ষণ

সরকার স্পষ্ট করেছে যে ন্যাস গঠন স্বামী হরিদাসের পরম্পরাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য করা হয়েছে। স্বামী হরিদাসের সময় থেকে চলে আসা পূজা পদ্ধতি, উৎসব এবং ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান কোনো পরিবর্তন বা হস্তক্ষেপ ছাড়াই অব্যাহত থাকবে। ন্যাস দর্শনের সময় নির্ধারণ করবে, পুরোহিতদের নিয়োগ করবে এবং তাদের বেতন, ভাতা বা ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করবে। এছাড়াও ভক্ত ও দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা, মন্দিরের কার্যকর প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বও ন্যাসের উপর থাকবে।

ভক্তদের জন্য বিশ্বমানের সুবিধা

ন্যাস গঠনের পর সরকার লক্ষ্য রেখেছে যে মন্দিরে ভক্তদের জন্য আধুনিক ও বিশ্বমানের সুবিধা উপলব্ধ করানো হবে। এর মধ্যে প্রসাদ বিতরণ, বয়স্ক নাগরিক ও দিব্যাঙ্গদের জন্য আলাদা দর্শন मार्ग, পানীয় জলের ব্যবস্থা, বিশ্রামের জন্য বেঞ্চ, সারি ব্যবস্থাপনার কিয়স্ক, গোশালা, অন্নক্ষেত্র এবং রান্নাঘরের মতো সুবিধা অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এছাড়াও মন্দির চত্বরে হোটেল, সরাইখানা, প্রদর্শনী কক্ষ, ভোজনশালা এবং প্রতীক্ষালয়ের মতো ব্যবস্থাও তৈরি করা হবে।

ন্যাসের কাঠামো ও সদস্যপদ

মনোনীত সদস্য

ন্যাসে মোট ১১ জন মনোনীত সদস্য থাকবেন। এদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকবেন:

  • বৈষ্ণব ঐতিহ্য ও সম্প্রদায় থেকে তিনজন বিশিষ্ট সদস্য, যাদের মধ্যে সাধু-সন্ন্যাসী, মুনি, গুরু, বিদ্বান, মঠাধ্যক্ষ, মহন্ত, আচার্য বা স্বামী অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন।
  • সনাতন ধর্মের ঐতিহ্য থেকে তিনজন সদস্য, যারা বিদ্বান, সমাজসেবী বা বিশিষ্ট ব্যক্তি হতে পারেন।
  • সনাতন ধর্মের যে কোনও শাখা থেকে তিনজন বিশিষ্ট সদস্য, যাদের মধ্যে শিক্ষাবিদ, বিদ্বান, উদ্যোক্তা বা সমাজসেবী অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন।
  • গোস্বামী বংশ থেকে দুইজন সদস্য, যারা স্বামী হরিদাস জীর বংশধর হবেন। একজন রাজ-ভোগ সেবাদার এবং অন্যজন শয়ন-ভোগ সেবাদারের প্রতিনিধি হবেন।
  • সমস্ত মনোনীত সদস্য সनातनी হিন্দু হবেন। এদের কার্যকাল তিন বছর হবে।

পদাধিকারী সদস্য

পদাধিকারী সদস্যের মধ্যে প্রশাসনিক ও সরকারি প্রতিনিধি থাকবেন। এতে মথুরার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, সিনিয়র পুলিশ সুপার, নগর নিগম কমিশনার, উত্তর প্রদেশ ব্রজ তীর্থ ক্ষেত্র উন্নয়ন পরিষদের সিইও, বাঁকে বিহারী মন্দির ট্রাস্টের সিইও এবং রাজ্য সরকারের মনোনীত প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত থাকবেন। যদি কোনো পদাধিকারী সদস্য হিন্দু না হন, তাহলে তার জায়গায় কনিষ্ঠ আধিকারিককে মনোনীত করা হবে।

বৈঠক, দায়বদ্ধতা ও আর্থিক অধিকার

ন্যাসের বৈঠক প্রতি তিন মাসে বাধ্যতামূলকভাবে হবে এবং বৈঠকের सूचना আয়োজনের ১৫ দিন আগে দেওয়া হবে। ন্যাসের সদস্যদের সরল বিশ্বাসে করা কাজের জন্য দায়ী করা হবে না। ন্যাস ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত সম্পত্তি নিজে কেনার অধিকার রাখবে। এর চেয়ে বেশি মূল্যের সম্পত্তির জন্য সরকারের स्वीकृति প্রয়োজন হবে। মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক (সিইও) এডিএম স্তরের আধিকারিক হবেন। ন্যাসের কাছে মন্দির পরিচালনা, প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত ও আর্থিক সিদ্ধান্তের অধিকার থাকবে।

Leave a comment