আমির খান-এর ছবি 'সিতारे জমিন পর' (Sitaare Zameen Par) বক্স অফিসে তিন সপ্তাহ পার করে ফেলেছে এবং বলা যেতে পারে, ছবিটি একটি স্থিতিশীল ও প্রভাবশালী পারফর্ম্যান্স করেছে।
বিনোদন: আমির খানের প্রতীক্ষিত ছবি ‘সিতারে জমিন পর’ (Sitaare Zameen Par) মুক্তির ২১ দিন পরেও বক্স অফিসে তার মজবুত অবস্থান ধরে রেখেছে। এই ছবি শুধুমাত্র আমির খানের দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনের প্রতীকই নয়, বরং ভারতীয় সিনেমায় আবেগপূর্ণ স্পোর্টস ড্রামার জন্য একটি নতুন বেঞ্চমার্কও স্থাপন করেছে।
আমির খানের এই ছবি ২০ জুন প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছিল এবং এখন তৃতীয় সপ্তাহও সম্পন্ন করেছে। যদিও তৃতীয় সপ্তাহে ছবির আয় কমেছে, তবে এর পারফর্ম্যান্স এখনও অন্যান্য মুক্তিপ্রাপ্ত ছবিগুলির তুলনায় ভালো, বিশেষ করে কাজল অভিনীত ‘মা’ এবং অনুরাগ বসু-র ‘মেট্রো ইন দিনো’র তুলনায়।
আমির খানের তিন বছর পর বড় পর্দায় প্রত্যাবর্তন
আমির খান প্রায় তিন বছরের দীর্ঘ বিরতির পর ‘সিতারে জমিন পর’-এর মাধ্যমে রুপোলি পর্দায় ফিরে এসেছেন। এর আগে তিনি ২০২২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘লাল সিং চাড্ডা’-তে দেখা গিয়েছিলেন। তার আগে ২০১৮ সালের ‘ঠগস অফ হিন্দোস্তান’-এও তাঁর গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র ছিল, যা বক্স অফিসে সফল হয়নি। ‘সিতারে জমিন পর’ পরিচালনা করেছেন আর.এস. প্রসন্না, যিনি তাঁর সংবেদনশীল চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য পরিচিত।
এই ছবিটি আমির খানের ২০০৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত আইকনিক ছবি ‘তারে জমিন পর’-এর অফিশিয়াল সিক্যুয়েল হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে, যদিও এর গল্প একটি সম্পূর্ণ নতুন থিমের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে।
ছবির অনন্য থিম এবং শক্তিশালী অভিনয়
এই ছবির সবচেয়ে বড় শক্তি হল এর আবেগপূর্ণ কাহিনী এবং বাস্তবতার কাছাকাছি চরিত্রগুলি। ছবিতে আমির খানের সঙ্গে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন জেনেলিয়া দেশমুখ। তবে আসল তারকা ছিল ১০ জন শিশু, যারা ডাউন সিন্ড্রোমে আক্রান্ত এবং যাদের আসল জীবন থেকে নির্বাচন করা হয়েছে। ছবির গল্প স্প্যানিশ ছবি চ্যাম্পিয়ন্স-এর উপর ভিত্তি করে তৈরি, যা ২০১৮ সালে মুক্তি পেয়েছিল।
‘সিতারে জমিন পর’-কে আবেগপূর্ণ ড্রামা এবং স্পোর্টস-কমেডির একটি সুন্দর মিশ্রণ বলা যেতে পারে। ছবিটি শুধুমাত্র বিনোদনই দেয় না, বরং Disability Inclusion এবং Empathy-র মতো বিষয়গুলিকেও জোরালোভাবে তুলে ধরে।
২১তম দিনের কালেকশন
ছবিটি প্রথম দিনে ১০.৭ কোটি টাকা আয় করে শুরু করার পরে প্রথম সপ্তাহে মোট ₹88.9 কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। দ্বিতীয় সপ্তাহে এটি ₹46.5 কোটি সংগ্রহ করেছে। তৃতীয় সপ্তাহে কমে যাওয়া সত্ত্বেও, ১৯তম দিনে ছবিটি ₹1.91 কোটি, ২০তম দিনে ₹1.17 কোটি আয় করেছে। ২১তম দিনে, অর্থাৎ শুক্রবার, ছবিটি প্রায় ₹70 লক্ষ টাকার ব্যবসা করেছে। সেই হিসেবে, ছবির মোট দেশীয় সংগ্রহ এখন ₹153.87 কোটিতে পৌঁছেছে।
- প্রথম সপ্তাহ: ₹88.9 কোটি
- দ্বিতীয় সপ্তাহ: ₹46.5 কোটি
- তৃতীয় সপ্তাহ (এখনও পর্যন্ত): প্রায় ₹18.47 কোটি
- মোট সংগ্রহ (২১ দিন): ₹153.87 কোটি (India Net)
বিদেশেও দুর্দান্ত পারফর্ম্যান্স
ছবিটি কেবল ভারতেই নয়, বিদেশেও (Overseas markets) দুর্দান্ত পারফর্ম্যান্স করেছে। ইউএস, ইউকে, কানাডা, ইউএই এবং অস্ট্রেলিয়ার মতো বাজারে এটি বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়েছে। এই দেশগুলিতে দক্ষিণ এশীয় প্রবাসীরা এই ছবিটিকে খুব পছন্দ করেছে, বিশেষ করে এর আবেগপূর্ণ আবেদন এবং সামাজিক বার্তার জন্য।
ছবিটি এখন রাজকুমার রাও এবং মানুসী চিল্লার অভিনীত ‘মালিক’, কাজল অভিনীত ‘মা’, এবং অনুরাগ বসু-র ‘মেট্রো ইন দিনো’-র মতো ছবিগুলির সাথে কঠিন প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হচ্ছে। যদিও, সমালোচক এবং দর্শকদের কাছ থেকে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়ার কারণে ‘সিতারে জমিন পর’ এখনও তার অবস্থান ধরে রেখেছে।