নাক ডাকার আড়ালে লুকিয়ে বিপদ শুধু শব্দ নয় হতে পারে রোগের ইঙ্গিত

নাক ডাকার আড়ালে লুকিয়ে বিপদ শুধু শব্দ নয় হতে পারে রোগের ইঙ্গিত

অনেকেই মনে করেন নাক ডাকা কেবল ঘুমের সময় বিরক্তিকর শব্দ। কিন্তু চিকিৎসকরা সতর্ক করছেন, এটি হতে পারে গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার লক্ষণ। বিশেষ করে ‘স্লিপ অ্যাপনিয়া’ নামক সমস্যায় আক্রান্তদের ক্ষেত্রে নাক ডাকা অন্যতম উপসর্গ হিসেবে দেখা দেয়।

স্লিপ অ্যাপনিয়া কী?ঘুমের মাঝেই থমকে যায় শ্বাসপ্রশ্বাস

স্লিপ অ্যাপনিয়া হলো এমন এক সমস্যা, যেখানে ঘুমের সময় কয়েক সেকেন্ড থেকে মিনিট পর্যন্ত শ্বাস বন্ধ হয়ে যায়। এটি রাতভর বারবার হতে পারে, ফলে মস্তিষ্ক ও শরীরে পর্যাপ্ত অক্সিজেন পৌঁছায় না। সময়মতো চিকিৎসা না করলে হৃদরোগ, স্ট্রোকসহ নানা জটিলতা দেখা দিতে পারে।

নাক ডাকা ছাড়াও কোন লক্ষণগুলি চিনবেন শরীরের দেওয়া সতর্ক সংকেত

নাক ডাকা ছাড়াও স্লিপ অ্যাপনিয়ার অন্যান্য উপসর্গের মধ্যে রয়েছে — ঘুমের পরও ক্লান্তি, দিনের বেলায় অতিরিক্ত ঘুম পেয়ে যাওয়া, মনোযোগ কমে যাওয়া, মাথাব্যথা, গলার শুষ্কতা ও বিরক্তিভাব। অনেক সময় ঘুমের মধ্যে হাঁপিয়ে ওঠাও এর একটি স্পষ্ট লক্ষণ।

কারা বেশি ঝুঁকিতে বয়স, ওজন ও অভ্যাসের প্রভাব

মোটা মানুষ, ৪০ বছরের বেশি বয়সী, ধূমপায়ী ও মদ্যপায়ীরা স্লিপ অ্যাপনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে বেশি থাকেন। পুরুষদের মধ্যে এই সমস্যা তুলনামূলক বেশি হলেও, মেনোপজ-পরবর্তী মহিলাদেরও আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এছাড়া গলার গঠন বা নাকের ভেতরের সমস্যাও ঝুঁকি বাড়ায়।

চিকিৎসা ও প্রতিরোধ সময়ে পদক্ষেপই রক্ষা করবে স্বাস্থ্য

স্লিপ অ্যাপনিয়ার চিকিৎসায় জীবনধারায় পরিবর্তন, ওজন কমানো, ঘুমের ভঙ্গি পরিবর্তন, সিপ্যাপ (CPAP) মেশিন ব্যবহার এবং প্রয়োজনে অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। ধূমপান ও মদ্যপান এড়িয়ে চলা, নিয়মিত ব্যায়াম ও স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ রোগ প্রতিরোধে সহায়ক হতে পারে।

অবহেলা নয়, সচেতনতা জরুরি সময়মতো পরীক্ষা ও চিকিৎসা নিন

নাক ডাকা নিয়ে লজ্জা বা অবহেলা না করে, যদি এর সঙ্গে অন্যান্য উপসর্গ দেখা দেয় তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। কারণ প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে স্লিপ অ্যাপনিয়া সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, সঠিক চিকিৎসা ও সচেতনতা এই সমস্যা থেকে মুক্তির মূল চাবিকাঠি।

Leave a comment