চীনের বিদেশমন্ত্রীর ভারত সফর: সীমান্ত বিবাদ ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা

চীনের বিদেশমন্ত্রীর ভারত সফর: সীমান্ত বিবাদ ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা

চীনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই ভারত সফরে আসছেন। এনএসএ অজিত ডোভালের সঙ্গে সীমান্ত বিবাদ ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করবেন। এই সফর প্রধানমন্ত্রী মোদীর চীন সফরের আগে কূটনৈতিক প্রস্তুতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

নয়াদিল্লি: আগামী সপ্তাহে চীনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই ভারতে আসবেন। তাঁর এই সফর বিশেষভাবে সীমান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নের উদ্দেশ্যে অনুষ্ঠিত হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর এই মাসের শেষের দিকে সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা (SCO) শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে চীন সফরের আগে এটি একটি কূটনৈতিক প্রস্তুতি হিসেবে দেখা হচ্ছে।

জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার সাথে সাক্ষাৎ

ওয়াং ই এই সফরে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সাথে সাক্ষাৎ করবেন। এই বৈঠকের মূল focus হবে বিশেষ প্রতিনিধি ব্যবস্থার অধীনে ভারত ও চীনের মধ্যে দীর্ঘদিনের সীমান্ত সমস্যা নিয়ে আলোচনা করা। উভয় দেশের মধ্যে সীমান্ত বিরোধ মেটাতে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

মোদীর চীন সফরের আগে কূটনৈতিক প্রস্তুতি

প্রধানমন্ত্রী মোদী এই মাসের শেষে তিয়ানজিনে অনুষ্ঠিত SCO শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেবেন। ওয়াং ই-এর ভারত সফরকে একটি কূটনৈতিক প্রস্তুতি হিসেবে দেখা হচ্ছে। এই সফর উভয় দেশের মধ্যে আলোচনাকে আরও মসৃণ করতে এবং সম্ভাব্য চুক্তির জন্য ক্ষেত্র প্রস্তুত করতে সাহায্য করবে।

আমেরিকা-ভারত-চীন সম্পর্কের উপর প্রভাব

কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করেন যে আমেরিকার রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক বক্তব্য ভারতকে প্রভাবিত করেছে। এর ফলে ভারতকে তার কৌশল পুনর্বিবেচনা করতে হতে পারে। যদি ভারত চীনের দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়ায়, তবে এটি পররাষ্ট্র নীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন হিসেবে বিবেচিত হবে।

প্রাক্তন মার্কিন বিদেশমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জারের মতে, আমেরিকার সঙ্গে শত্রুতা মারাত্মক এবং বন্ধুত্ব প্রাণঘাতী হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে ভারতের জন্য চীনের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করা একটি কৌশলগত ও বুদ্ধিমানের কাজ হবে।

বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট

বিশ্বের মানচিত্রে চোখ রাখলে দেখা যায়, রাশিয়া, চীন ও ভারত বিশ্বের বড় দেশ। যদি এই তিনটি দেশ একসঙ্গে কৌশলগত ও অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করে, তবে বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন কাঠামো তৈরি হতে পারে। এটি আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক ভারসাম্যের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।

আমেরিকা-চীন বাণিজ্য চুক্তির প্রভাব

আমেরিকা চীনের সাথে বাণিজ্য চুক্তির সময়সীমা ৯০ দিনের জন্য বাড়িয়েছে। এতে দুটি বৃহত্তম অর্থনীতির মধ্যে সম্ভাব্য সংঘাত এড়ানো গেছে। আমেরিকা ভারতের উপর ২৫% অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেছিল, এই যুক্তিতে যে ভারত রাশিয়া থেকে তেল কিনছে। যদিও রাশিয়ার সবচেয়ে বড় তেল ক্রেতা চীন।

চুক্তির সময়সীমা বাড়ানোয় উভয় দেশ তাদের মধ্যেকার মতভেদগুলো মেটানোর সময় পেয়েছে। সম্ভবত এই বছরের শেষে ট্রাম্প এবং চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ের মধ্যে শীর্ষ সম্মেলনের পথ প্রশস্ত হয়েছে। আমেরিকাতে চীনের সাথে ব্যবসা করা কোম্পানিগুলোও এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে।

Leave a comment