বেওয়ারিশ কুকুরদের আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বিতর্ক, মুখ খুললেন জাহ্নবী-বরুণ

বেওয়ারিশ কুকুরদের আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বিতর্ক, মুখ খুললেন জাহ্নবী-বরুণ

দিল্লি-এনসিআরের রাস্তা থেকে বেওয়ারিশ কুকুরদের সরিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানোর সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক নির্দেশে দেশজুড়ে নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে। এই রায় এখন আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

Janhvi-Varun Opposes SC: দিল্লি-এনসিআরের রাস্তা থেকে বেওয়ারিশ কুকুরদের সরিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানোর সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক নির্দেশে দেশজুড়ে এক নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। এই রায় শুধুমাত্র সামাজিক এবং আইনি মহলেই আলোচনার বিষয় নয়, বলিউড তারকারাও এ বিষয়ে তাদের মতামত প্রকাশ করছেন। অভিনেত্রী জাহ্নবী কাপুর এবং অভিনেতা বরুণ ধাওয়ান এই আদেশকে নির্দয় ও অযৌক্তিক বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

সুপ্রিম কোর্টের আদেশ ও বিতর্ক

সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে যে দিল্লি-এনসিআরের রাস্তা থেকে বেওয়ারিশ কুকুরদের সরিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে রাখা হোক। আদালতের যুক্তি ছিল যে শিশু ও সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা সবার আগে, এবং কোনো অবস্থাতেই তা বিপন্ন করা যাবে না।
শুনানির সময় সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন যে শুধুমাত্র কিছু লোক নিজেদের "অ্যানিমেল লাভার" মনে করে, তার জন্য শিশু ও বাচ্চাদের নিরাপত্তা আপস করা যায় না। তবে, এই মন্তব্য এবং রায় পশু কল্যাণ সংস্থা, পোষ্যপ্রেমী এবং অনেক সাধারণ নাগরিককে ক্ষুব্ধ করেছে।

জাহ্নবী কাপুরের আবেগপূর্ণ আবেদন

জাহ্নবী কাপুর তার ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে একটি পিটিশন শেয়ার করে লিখেছেন যে রাস্তায় থাকা কুকুরগুলো কেবল "বেওয়ারিশ" প্রাণী নয়, তারা আমাদের সমাজের অংশ। তিনি পোস্টে লিখেছেন:

'এরাই সেই কুকুর, যারা সকালে চায়ের দোকানের বাইরে বিস্কুটের জন্য অপেক্ষা করে, রাতে দোকানের পাহারাদারী করে এবং বাচ্চারা স্কুল থেকে ফেরার সময় খুশিতে লেজ নেড়ে অভ্যর্থনা জানায়।'

জাহ্নবী জোর দিয়ে বলেন যে প্রতিটি সমস্যার সমাধান বন্দী করা নয়। তিনি মনে করেন যে এই পশুদের রাস্তা থেকে সরিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে বন্দী করা কোনো ব্যবহারিক সমাধান নয়, এবং এটি নৈতিকও নয়। এর পরিবর্তে ব্যাপকহারে নির্বীজকরণ, টিকাকরণ, কমিউনিটি ফিডিং জোন এবং দত্তক নেওয়ার মতো নীতি গ্রহণ করা উচিত।

বরুণ ধাওয়ানের সমর্থন

অভিনেতা বরুণ ধাওয়ানও এই পিটিশনটি তাঁর ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে শেয়ার করে এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন। বরুণ দীর্ঘদিন ধরে পোষা প্রাণীর সঙ্গে থাকেন এবং এর আগেও বহুবার পশু অধিকারের বিষয়ে মুখ খুলেছেন। তিনি এই আদেশকে পশুদের প্রতি अन्यायपूर्ण करार दिए বলেন যে সমাধান সবসময় ভারসাম্যপূর্ণ এবং সংবেদনশীল হওয়া উচিত।

রবীনা ট্যান্ডনও বিরোধিতা করেছেন

এর আগে অভিনেত্রী রবীনা ট্যান্ডনও এই বিষয়ে নিজের মতামত রেখেছিলেন। এইচটি সিটিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন: বেওয়ারিশ কুকুরের ক্রমবর্ধমান সংখ্যার জন্য তাদের দোষ দেওয়া ভুল। যদি স্থানীয় সংস্থা সময় মতো টিকাকরণ ও নির্বীজকরণ অভিযান সঠিকভাবে চালাত, তাহলে এই পরিস্থিতি তৈরি হত না। তিনি জোর দিয়ে বলেন যে স্থানীয় প্রশাসনকে তাদের নিজ নিজ এলাকার বেওয়ারিশ কুকুরদের দায়িত্ব নিতে হবে এবং নির্বীজকরণ এই সময়ের সবচেয়ে বড় প্রয়োজন।

এই বিষয়টি এখন একটি ব্যাপক সামাজিক বিতর্কে পরিণত হয়েছে। একদিকে আদালত ও সরকারের যুক্তি হল জননিরাপত্তা অগ্রাধিকার, অন্যদিকে পশুপ্রেমীদের বক্তব্য হল বেওয়ারিশ কুকুরদের সরিয়ে নিয়ে বন্দী করলে সমস্যার সমাধান হবে না, এবং এটি মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিও নয়।
পশু অধিকার কর্মীরা আরও মনে করেন যে ব্যাপক হারে আশ্রয়কেন্দ্রে পশুদের রাখলে সম্পদের উপর চাপ বাড়বে এবং তাদের জীবনযাত্রার মান প্রভাবিত হবে।

Leave a comment