দামেস্কের উপর ইজরায়েলের হামলার পর সিরিয়ার রাষ্ট্রপতি আহমেদ আল-শারা বলেছেন যে তারা যুদ্ধকে ভয় পান না। দ্রুজ সম্প্রদায়ের সুরক্ষার অঙ্গীকার করে তিনি ইজরায়েলকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
Syria Isreal War: সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের উপর সাম্প্রতিক ইজরায়েলি হামলার পর এই প্রথম সিরিয়ার রাষ্ট্রপতি আহমেদ আল-শারা প্রকাশ্যে বিবৃতি দিয়েছেন। তিনি স্পষ্ট করে জানিয়েছেন যে সিরিয়া কোনও মূল্যে যুদ্ধ থেকে পিছিয়ে আসবে না। তাঁর মতে, সিরিয়ার জনগণ সর্বদা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছে এবং তারা কোনও সংঘর্ষে ভয় পায় না।
ইজরায়েলের উপর সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বাড়ানোর অভিযোগ
রাষ্ট্রপতি আল-শারা ইজরায়েলের উপর সিরিয়ায় বিশেষ করে দ্রুজ সম্প্রদায়কে নিয়ে সাম্প্রদায়িক বিভেদ সৃষ্টির অভিযোগ তুলেছেন। তিনি বলেন যে কোনও একটি ফ্রন্টে জয়লাভের অর্থ এই নয় যে প্রতিটি ক্ষেত্রে সাফল্য নিশ্চিত। তিনি আরও জানান যে সিরিয়া তার অভ্যন্তরীণ নীতি এবং সমাজে কোনও বিদেশি হস্তক্ষেপ সহ্য করবে না।
দ্রুজ সম্প্রদায়ের গুরুত্বের উপর জোর
সিরিয়ার রাষ্ট্রপতি দ্রুজ সম্প্রদায়কে দেশের আত্মা হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন যে তাদের সুরক্ষা এবং অধিকার রক্ষা করা সরকারের কর্তব্য। ক্রমবর্ধমান সংঘাত এবং অভ্যন্তরীণ উত্তেজনার মধ্যে তিনি আরও ইঙ্গিত দিয়েছেন যে অস্ত্রের মাধ্যমে সমাধান খোঁজার চেয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা উচিত।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তুরস্কের মধ্যস্থতার ভূমিকা
রাষ্ট্রপতি আল-শারা স্বীকার করেছেন যে আমেরিকা, আরব দেশ এবং তুরস্কের মধ্যস্থতার কারণে পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়া থেকে রক্ষা পেয়েছে। তিনি আরও স্পষ্ট করেন যে যদি প্রয়োজন হয়, সিরিয়া তার নিজের সুরক্ষার জন্য সবকিছু করবে, কিন্তু তার দেশকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেবে না।
ইজরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর দাবি
ইজরায়েলি ডিফেন্স ফোর্স (IDF) দাবি করেছে যে তারা সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে, বিশেষ করে সুয়েদা অঞ্চলে সিরিয়ার সেনাবাহিনীর ঘাঁটিগুলোতে হামলা চালিয়েছে। IDF একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে যেখানে সিরিয়ার সামরিক যান এবং ঘাঁটিগুলোতে আঘাত হানতে দেখা যায়।
সুয়েদার পরিস্থিতি খুবই উত্তেজনাপূর্ণ
সুয়েদা শহর, যেখানে দ্রুজ সম্প্রদায়ের মানুষের বসবাস বেশি, বর্তমানে চরম উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। IDF-এর মতে, ইজরায়েলি বিমান বাহিনী সেখানে সাঁজোয়া যান, অস্ত্রসজ্জিত ট্রাক এবং সামরিক চৌকিগুলোতে হামলা চালিয়েছে। এছাড়াও, সিরিয়ার সেনাবাহিনীর অস্ত্র ডিপো এবং অন্যান্য কৌশলগত স্থানগুলোতেও হামলা করা হয়েছে।
ইজরায়েলের যুক্তি: আত্মরক্ষার্থে এই পদক্ষেপ
ইজরায়েলের বক্তব্য হল, সিরিয়া এবং ইরানপন্থী গোষ্ঠীগুলোর কার্যকলাপ তাদের সীমান্তের কাছে বেড়ে যাওয়ায় তা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছিল। সেই কারণেই আত্মরক্ষার্থে এই হামলা চালানো হয়েছে। এছাড়াও, ইজরায়েলি সূত্র অনুসারে, সিরিয়ার সেনাবাহিনী দ্রুজ সম্প্রদায়ের উপর অত্যাচার চালাচ্ছে, যেখানে ৩০০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গেছেন। এই কারণে ইজরায়েল এই পদক্ষেপ নিয়েছে।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক ডাকা হয়েছে
পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের একটি বৈঠক ডাকা হয়েছে যেখানে সিরিয়া-ইজরায়েল সংঘাত নিয়ে আলোচনা করা হবে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং শান্তির জন্য প্রচেষ্টা চালানোর আহ্বান জানিয়েছে।