তেলেঙ্গানা হাইকোর্ট টিজিপিসি-র গ্রুপ-১ পরীক্ষার মেধা তালিকা বাতিল করেছে। আদালত পুনরায় পেপার পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছে। মার্চ ২০২৬ পর্যন্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। হাজার হাজার প্রার্থীর মেধা তালিকা পরিবর্তন হতে পারে।
তেলেঙ্গানা: তেলেঙ্গানা হাইকোর্ট গ্রুপ-১ পরীক্ষার ফলাফলের ব্যাপারে এক বড় রায় ঘোষণা করেছে। তেলেঙ্গানা পাবলিক সার্ভিস কমিশন (টিজিপিসি)-র ১০ মার্চ, ২০২৫ তারিখে প্রকাশিত মেধা তালিকা আদালত বাতিল করেছে। আদালত স্পষ্ট করেছে যে পরীক্ষার পেপারগুলির পুনরায় মূল্যায়ন (re-evaluation) করা হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত নতুন ফলাফল জারি করা হবে না। যদি পুনরায় মূল্যায়ন সম্ভব না হয়, তাহলে টিজিপিসি-কে পরীক্ষা পুনরায় আয়োজন করতে হবে।
কে রায় দিয়েছেন এবং সময়সীমা কী
বিচারপতি নাম্বরু রাজেশ্বর রাও-এর নেতৃত্বে গঠিত বেঞ্চ ৭ জুলাই, ২০২৫ তারিখে বিস্তারিত শুনানির পর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আদালত টিজিপিসি-কে সম্পূর্ণ মূল্যায়ন প্রক্রিয়া নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছভাবে সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছে। এই মূল্যায়ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য কমিশনকে আট মাস সময় দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, মার্চ ২০২৬ সালের মধ্যে গ্রুপ-১ পরীক্ষার পেপারগুলির নতুন পর্যালোচনা সম্পন্ন হতে হবে।
সম্পূর্ণ ঘটনা কী
টিজিপিসি মার্চ ২০২৫ সালে গ্রুপ-১ পরীক্ষার ফলাফল জারি করেছিল। এই পরীক্ষা রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি চাকরির জন্য অনুষ্ঠিত হয় এবং এতে প্রচুর সংখ্যক পদে নিয়োগ করা হয়। ফলাফল প্রকাশের পর, অনেক পরীক্ষার্থী পেপার মূল্যায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তাঁদের অভিযোগ ছিল যে মূল্যায়নে অনিয়ম হয়েছে এবং ফলাফলে অনেক ভুল রয়েছে। পরীক্ষার্থীরা আদালতে একটি পিটিশন দায়ের করে সম্পূর্ণ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।
পিটিশনে অভিযোগ করা হয়েছিল যে টিজিপিসি পেপারগুলির সঠিক মূল্যায়ন করেনি এবং অনেক প্রার্থীর মেধা তালিকা প্রভাবিত হয়েছে। পরীক্ষার্থীরা আদালতে প্রমাণও পেশ করেছিলেন, যেখানে পেপার মূল্যায়নে ত্রুটি এবং প্রক্রিয়াগত দুর্বলতার উল্লেখ ছিল। আদালত এই পিটিশনগুলি গুরুত্ব সহকারে শুনেছিল এবং সমস্ত পক্ষের বক্তব্য শুনেছে।
আদালত কী বলেছে
আদালত নির্দেশ দিয়েছে যে গ্রুপ-১ পরীক্ষার পেপারগুলির পুনরায় মূল্যায়ন সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা এবং নিরপেক্ষতার সাথে করা হোক। কমিশনকে এই মূল্যায়ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য আট মাস সময় দেওয়া হয়েছে। যদি কোনও কারণে পুনরায় মূল্যায়ন সম্ভব না হয়, তবে নতুন পরীক্ষা আয়োজন করা বাধ্যতামূলক হবে। আদালতের এই রায় সেই সকল পরীক্ষার্থীদের জন্য স্বস্তির কারণ যারা ফলাফলের ওপর প্রশ্ন তুলেছিলেন। অন্যদিকে, ইতিমধ্যে উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীদের নতুন ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করতে হবে, যার ফলে তাদের মেধা তালিকা পরিবর্তিত হতে পারে।
প্রার্থীদের ওপর প্রভাব
গ্রুপ-১ পরীক্ষায় হাজার হাজার প্রার্থী অংশগ্রহণ করেছিলেন। এরা হলেন সেই সকল যুবক-যুবতীরা যারা সরকারি চাকরির স্বপ্ন দেখেন। এখন তাদের ফলাফলের পরিবর্তন এবং মেধা তালিকার পরিবর্তন মেনে নিতে প্রস্তুত থাকতে হবে। যারা মূল্যায়নে অনিয়মের অভিযোগ করেছিলেন, তাদের জন্য এই রায় আশার নতুন আলো। অন্যদিকে, যারা উত্তীর্ণ হয়েছেন, তাদের জন্য এটি সাময়িক উদ্বেগের বিষয় হতে পারে।
টিজিপিসি-র ভূমিকা
টিজিপিসি-কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে তারা যেন সম্পূর্ণ মূল্যায়ন প্রক্রিয়া নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করে। কমিশনকে নতুন করে পেপার মূল্যায়নের প্রক্রিয়া চালু করতে হবে এবং নিশ্চিত করতে হবে যে সমস্ত প্রার্থীর পেপার সঠিকভাবে যাচাই করা হয়েছে। এই প্রক্রিয়ার সময় কোনও প্রকার অনিয়মের সম্ভাবনা থাকা উচিত নয়।