কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে আবারও আলোড়ন তৈরি করেছে বালি পাচার ইস্যু। বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার অভিযোগ তুলেছেন, পুরো রাজ্যজুড়ে সক্রিয় এক বিশাল বালি পাচার চক্রের নিয়ন্ত্রণ নাকি হচ্ছে সরাসরি দিল্লি থেকে।
রাজ্য জুড়ে বালি পাচারের অভিযোগ
মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে সুকান্ত মজুমদার বলেন, “বাংলার বালি চুরি হয়ে বিহার, ঝাড়খণ্ডসহ অন্য রাজ্যে চলে যাচ্ছে। এই টাকা সরাসরি দিল্লিতে পৌঁছাচ্ছে।” তাঁর অভিযোগ, এই অবৈধ চক্রে ব্যবহৃত ট্রাকগুলির কোনও বৈধ কাগজপত্র নেই।তিনি আরও বলেন, “শাসকদলের এক প্রভাবশালী নেতার হাত থাকার কারণে পুলিশও এই অবৈধ কার্যকলাপে বাধা দিতে পারছে না।” নাম সরাসরি উল্লেখ না করলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, এই ব্যক্তি দিল্লি থেকে বালি পাচারের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করছেন।রাজনৈতিক মহলে ইতিমধ্যেই ‘পিসতুতো ভাই’ কে কেন্দ্র করে জল্পনা শুরু হয়েছে।
বিরোধী দলে শোরগোল, তৃণমূলের প্রতিক্রিয়া অনিশ্চিত
বিরোধীরা বলছেন, এই বালি পাচার শুধু অর্থনৈতিক দুর্নীতি নয়, এটি আইনশৃঙ্খলারও চরম অবনতি।তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এখনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সুকান্ত মজুমদারের অভিযোগের পর শাসক দলের পক্ষ থেকে দ্রুত পাল্টা বক্তব্য আসতে পারে।
কেন্দ্রীয় তদন্তে তল্লাশি, কোটি টাকার বাজেয়াপ্তি
বালি পাচার মামলায় রাজ্যের একাধিক জায়গায় হানা দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা বাজেয়াপ্ত করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।মেদিনীপুরের এক বালি ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে ৬৫ লক্ষ টাকার কাছাকাছি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনার ফলে রাজ্যে বালি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য ফের সামনে এসেছে।
অবৈধ বালি উত্তোলন ও প্রযুক্তিগত জালিয়াতি
সরকারি বিধি-নিষেধ উপেক্ষা করে নদী থেকে অবৈধভাবে বালি তোলার অভিযোগ উঠেছে এবং এ নিয়ে ইতিমধ্যেই থানায় লিখিত নালিশ জমা পড়েছে। স্থানীয় সূত্রের খবর, আধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে এই পাচার চক্র দিন দিন আরও ভয়াবহ আকার নিচ্ছে।সুকান্ত মজুমদারের রাজনৈতিক বক্তব্য এই পরিস্থিতিকে নতুন মাত্রা দিয়েছে। রাজ্য ও কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে আরও তল্লাশি ও তদন্ত চালাচ্ছে।
রাজনৈতিক মহলে মনে করা হচ্ছে, এই অভিযোগ পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনী পরিবেশে বড় প্রভাব ফেলতে পারে। সুকান্ত মজুমদারের বক্তব্যের পর, আইন-শৃঙ্খলা এবং প্রশাসনিক পদক্ষেপ আরও কঠোর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।