বিশ্বজুড়ে টেলিগ্রামের উপর নিষেধাজ্ঞা: কারণ ও প্রভাব

বিশ্বজুড়ে টেলিগ্রামের উপর নিষেধাজ্ঞা: কারণ ও প্রভাব

কিছু দেশে টেলিগ্রাম (Telegram) অ্যাপের উপর নিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলা জনিত কারণে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। রাশিয়া, চীন, ইরান এবং পাকিস্তানে এর ব্যবহার আইনত সীমাবদ্ধ বা নিষিদ্ধ। ভারতে বর্তমানে আংশিক নিষেধাজ্ঞা বলবৎ রয়েছে, তবে ভবিষ্যতে এর ব্যবহারের উপর কঠোর নিয়মাবলী চালু করা হতে পারে।

টেলিগ্রাম ব্যান (Telegram Ban): বিশ্বের বহু দেশে টেলিগ্রাম মেসেজিং অ্যাপের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। রাশিয়া, চীন, ইরান এবং পাকিস্তানে নিরাপত্তা, ডেটা এবং আইন-শৃঙ্খলা জনিত কারণে এটি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ বা সীমিত করা হয়েছে। ভারতে বর্তমানে টেলিগ্রামের উপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা নেই, তবে কিছু রাজ্য এবং বিশেষ পরিস্থিতিতে সাময়িক স্থগিতাদেশ জারি করা হয়েছে। সরকারের মতে, এই প্ল্যাটফর্মটি ভুয়ো খবর, মাদক এবং অপরাধ সংক্রান্ত বিষয়ে ব্যবহৃত হতে পারে। এই পদক্ষেপগুলি বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা এবং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম নিয়ন্ত্রণের কথা মাথায় রেখে নেওয়া হয়েছে।

বিশ্বের কিছু দেশে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ

আজকের দিনে টেলিগ্রাম বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপে পরিণত হয়েছে। এটি কেবল চ্যাট এবং কলিংয়ের সুবিধা দেয় না, বরং বড় ফাইল শেয়ার করা, গ্রুপ এবং চ্যানেল তৈরি করারও স্বাধীনতা দেয়। তবে, এর জনপ্রিয়তা সত্ত্বেও, কিছু দেশ নিরাপত্তা এবং আইন-শৃঙ্খলা জনিত সমস্যার কারণে এটিকে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করেছে।

কিছু দেশে টেলিগ্রামের ব্যবহার সরকারগুলোর চোখে নিরাপত্তা এবং ডেটার দিক থেকে ঝুঁকিপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়েছে। এই দেশগুলোর মতে, এই প্ল্যাটফর্মটি সরকারবিরোধী কার্যকলাপ, ভুল তথ্য এবং অপরাধ সংক্রান্ত বিষয়ের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।

রাশিয়া ও চীনে টেলিগ্রাম ব্যান

রাশিয়ায় কিছুদিন আগে টেলিগ্রামের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। এর প্রধান কারণ ছিল যে সরকার অ্যাপের চ্যাট এবং ব্যবহারকারীর ডেটাতে প্রবেশাধিকার পাচ্ছিল না। রাশিয়ান কর্মকর্তারা বলেছিলেন যে সন্ত্রাসবাদ এবং অপরাধ সংক্রান্ত মামলার তদন্তের জন্য ডেটা উপলব্ধ থাকা জরুরি ছিল, কিন্তু টেলিগ্রাম ডেটা শেয়ার করতে অস্বীকার করেছিল। তবে পরে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়।

চীনে টেলিগ্রাম এখনও সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। সেখানে সরকারের মতে, এই প্ল্যাটফর্মটি সরকারবিরোধী ধারণা ছড়ানো এবং সরকারি নীতির বিরুদ্ধে প্রচারের মাধ্যম হয়ে উঠতে পারে। ইন্টারনেট এবং সোশ্যাল মিডিয়ার উপর কঠোর নিয়ন্ত্রণের কারণে চীনে টেলিগ্রাম ব্যবহার করা অসম্ভব।

ইরান ও পাকিস্তানে নিষেধাজ্ঞা

ইরানে টেলিগ্রাম ব্যবহার করে বড় আকারের বিক্ষোভ সংগঠিত করা হচ্ছিল এবং সরকারি নীতির বিরুদ্ধে কার্যকলাপ প্রচার করা হচ্ছিল। এছাড়াও, ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক রীতিনীতির বিরুদ্ধে কন্টেন্ট ছড়ানোর বিষয়টিকেও নিষেধাজ্ঞার কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

পাকিস্তানে এটিকে সাইবার নিরাপত্তা এবং ভুয়ো খবর ছড়ানোর কারণে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। কর্মকর্তারা বলেছেন যে এই প্ল্যাটফর্মটি ভুল তথ্য ছড়ানো এবং আইন-শৃঙ্খলা প্রভাবিত করার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছিল। কিছু ব্যবহারকারী ভিপিএন (VPN) এর সাহায্য নিয়ে এটি ব্যবহার করার চেষ্টা করেছে, কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে এই অ্যাপটি বন্ধ রয়েছে।

ভারতে আংশিক নিষেধাজ্ঞা

ভারতে বর্তমানে টেলিগ্রামের উপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা নেই। তবে কিছু রাজ্য এবং বিশেষ পরিস্থিতিতে, যেমন সহিংসতা বা অপরাধের ঘটনায়, সাময়িক স্থগিতাদেশ জারি করা হয়েছে। সরকারের মতে, এই প্ল্যাটফর্মটি মাদক, পাইরেসি এবং ভুয়ো খবর ছড়ানোর কাজে ব্যবহৃত হতে পারে। দেশজুড়ে এটি এখনও উপলব্ধ, তবে ভবিষ্যতে এর ব্যবহারের উপর কঠোর নিয়মাবলী চালু করা যেতে পারে।

Leave a comment