রাজ্যের মর্যাদা পুনর্বহাল না হলে পদত্যাগ করব: ওমর আবদুল্লাহর কড়া বার্তা কেন্দ্রকে

রাজ্যের মর্যাদা পুনর্বহাল না হলে পদত্যাগ করব: ওমর আবদুল্লাহর কড়া বার্তা কেন্দ্রকে

জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ সতর্ক করেছেন যে, যদি রাজ্যের মর্যাদা দ্রুত পুনর্বহাল না হয়, তবে তিনি পদত্যাগ করবেন। তাঁর এই মন্তব্য কেন্দ্র সরকারের উপর রাজনৈতিক চাপ বাড়ানো এবং জনগণের প্রতি তাঁর অঙ্গীকার প্রকাশের একটি উপায় হিসাবে দেখা হচ্ছে।

জম্মু-কাশ্মীর: জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ কেন্দ্র সরকারের উপর চাপ বাড়িয়ে বলেছেন যে, যদি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে রাজ্যের মর্যাদা (statehood) পুনর্বহাল না হয়, তবে তিনি তাঁর পদ থেকে ইস্তফা দেবেন। তাঁর এই মন্তব্য এমন এক সময়ে এসেছে যখন রাজ্যে উপনির্বাচনের প্রক্রিয়া চলছে এবং তাঁর দলের মধ্যেও রাজ্যের মর্যাদা নিয়ে অসন্তোষ বাড়ছে। ওমর আবদুল্লাহর এই মন্তব্য রাজনৈতিক মহলে একটি বড় বার্তা হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে, যা কেন্দ্র সরকারের প্রতি একটি স্পষ্ট সতর্কতা হিসাবে দেখা হচ্ছে।

রাজ্যের মর্যাদা পুনর্বহাল না হলে পদত্যাগের হুঁশিয়ারি

মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ রবিবার শ্রীনগরে একটি সংবাদ মাধ্যমের সাথে কথা বলার সময় বলেন যে, মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে তাঁর পদে থাকা সরাসরি রাজ্যের মর্যাদা পুনর্বহালের সাথে যুক্ত। তিনি বলেন, এটি কেবল রাজনীতি নয়, বরং জনগণের বিশ্বাস (public trust) এবং রাজনৈতিক সততা (political integrity)-এর প্রশ্ন।

ওমর বলেন যে, যদি নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে জম্মু-কাশ্মীরকে রাজ্যের মর্যাদা না দেওয়া হয়, তবে তিনি স্বেচ্ছায় পদ ত্যাগ করবেন। যদিও, তিনি কোনো স্পষ্ট সময়সীমা (deadline) ঘোষণা করেননি, যার ফলে এখন জল্পনা তীব্র হচ্ছে যে তিনি কেন্দ্রকে পরোক্ষভাবে চাপের মধ্যে আনতে চাইছেন।

কেন্দ্রের উপর চাপ সৃষ্টির কৌশল?

ওমর আবদুল্লাহর এই মন্তব্যকে রাজনৈতিক কৌশল হিসাবে দেখা হচ্ছে। তিনি বলেছেন যে, “রাজ্যের মর্যাদা ছাড়া আমার পদের কোনো অর্থ নেই।” তাঁর এই মন্তব্যে ইন্টারনেট মিডিয়া (social media)-য় প্রচুর প্রতিক্রিয়া আসছে। অনেকে এটিকে কেন্দ্রের উপর চাপ সৃষ্টির একটি কৌশল বলছেন, আবার কেউ কেউ এটিকে জনগণের প্রতি তাঁর অঙ্গীকারের ইঙ্গিত হিসাবে দেখছেন।

দলের ভিতরে বাড়ছে চাপ

ওমর আবদুল্লাহর উপর এই চাপ কেবল কেন্দ্র বা বিরোধী দল থেকে নয়, বরং তাঁর নিজের দলের ভিতর থেকেও বাড়ছে। তাঁর সহযোগী এবং এনসি সাংসদ আগা রুহুল্লাহ মেহেদি প্রকাশ্যে অভিযোগ করেছেন যে, তিনি তাঁর প্রতিশ্রুতি থেকে পিছিয়ে যাচ্ছেন।

মেহেদি বলেন যে, “মানুষ আমাদের সরকারে এই জন্য নির্বাচিত করেনি যে আমরা দিল্লির সাথে সম্পর্ক ভালো করব, বরং এই জন্য নির্বাচিত করেছে যে আমরা ২০১৯ সালের আগের পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনব।” তিনি স্পষ্ট বলেন যে, যদি এনসি সরকার রাজ্যের মর্যাদা পুনর্বহাল করতে না পারে, তবে এটি জনগণের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা হবে।

কংগ্রেসও মাঠে নেমেছে

ওমর আবদুল্লাহর সহযোগী দল কংগ্রেস (Congress)-ও এই ইস্যুতে সক্রিয় হয়েছে। দলটি রাজ্যের মর্যাদা পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলন করছে। কংগ্রেস নেতাদের বক্তব্য হলো, জম্মু-কাশ্মীরের পরিচিতি ততদিন অসম্পূর্ণ থাকবে যতদিন না এটি পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা ফিরে পাচ্ছে।

অमित শাহের মন্তব্য – ‘উপযুক্ত সময়ে রাজ্যের মর্যাদা পুনর্বহাল হবে’

কিছু দিন আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সংসদে বলেছিলেন যে, জম্মু-কাশ্মীরকে রাজ্যের মর্যাদা উপযুক্ত সময়ে (appropriate time) ফিরিয়ে দেওয়া হবে। তবে, তিনি কোনো নির্দিষ্ট তারিখ জানাননি। কেন্দ্র সরকারের যুক্তি হলো, জম্মু-কাশ্মীরে শান্তি ও স্থিতিশীলতা (stability) সম্পূর্ণরূপে ফিরে আসার পরেই রাজ্যের মর্যাদা পুনরুদ্ধার করা হবে।

Leave a comment