মারাঠি ভাষা নিয়ে বিতর্কের পর, ৫ই জুলাই ঠাকরে ভাইরা বিজয় র্যালি করবেন। ফডণবীস সরকারের হিন্দি নির্দেশ বাতিল হওয়াকে মারাঠি আত্মপরিচয়ের জয় হিসেবে বর্ণনা করে দুই ভাই প্রথমবার এক মঞ্চে আসবেন।
Thackeray Brothers Rally: মহারাষ্ট্রে মারাঠি ভাষা ও আত্মপরিচয় নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে চলা বিতর্ক আবারও শিরোনামে। এবার কারণ হল ফডণবীস সরকার কর্তৃক হিন্দি ভাষা পড়ানো সংক্রান্ত নির্দেশে ইউ-টার্ন নেওয়া। এই সিদ্ধান্তকে মারাঠি ভাষার জয় হিসেবে তুলে ধরে ঠাকরে ভ্রাতৃদ্বয় অর্থাৎ উদ্ধব ঠাকরে এবং রাজ ঠাকরে এখন একসাথে বিজয় র্যালি করছেন। ৫ই জুলাই মুম্বাইয়ের ওয়ার্ল্ড ডোমে এই র্যালি অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে দুই ভাই এক সাথে মঞ্চ ভাগ করে নেবেন।
ঠাকরে ভাই এক মঞ্চে
রাজনৈতিকভাবে ভিন্ন পথে চললেও, এই ইস্যুতে ঠাকরে ভাইদের আবার এক মঞ্চে এনে দিয়েছে। উদ্ধব ঠাকরে এবং রাজ ঠাকরের এই উপস্থিতি শুধু মারাঠি আত্মপরিচয়ের সমর্থনে নয়, বরং এটিও ইঙ্গিত দেয় যে কিছু বিষয়ে তাঁদের মধ্যে ঐকমত্য সম্ভব। এই র্যালিটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ দীর্ঘকাল পর ঠাকরে পরিবারের দুই প্রভাবশালী মুখকে একসাথে প্রকাশ্যে দেখা যাবে।
৫০ হাজারের বেশি সমর্থকের জমায়েতের সম্ভাবনা
মুম্বাই পুলিশ ও আয়োজকদের মতে, এই বিজয় র্যালিতে ৫০ হাজারের বেশি মানুষের অংশগ্রহণের সম্ভাবনা রয়েছে। র্যালির স্থানটিতে নিরাপত্তা এবং ট্র্যাফিক ব্যবস্থাপনার জন্য বিস্তারিত প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। শিবসেনা (ইউবিটি)-র সাংসদ অরবিন্দ সাওয়ান্ত এবং অন্যান্য দলের কর্মীরা ক্রমাগত ব্যবস্থাগুলোর ওপর নজর রাখছেন।
তিন ভাষা নীতিতে সরকারের ইউ-টার্ন
আসলে, বিতর্কের সূত্রপাত হয় যখন ফডণবীস সরকার স্কুলগুলোতে তিন ভাষা নীতির অধীনে হিন্দি বাধ্যতামূলক করার নির্দেশ জারি করে। এই নির্দেশকে কেন্দ্র করে মারাঠি সংগঠন ও রাজনৈতিক দলগুলো প্রতিবাদ জানায়। বিরোধী দলগুলোর অভিযোগ ছিল, এই সিদ্ধান্ত মারাঠি ভাষার গুরুত্বকে খাটো করবে। প্রতিবাদের চাপে সরকার এই সিদ্ধান্ত বাতিল করে দেয়।
মারাঠি আত্মপরিচয়ের জয় হিসেবে উপস্থাপন
এই ইউ-টার্নের পর উদ্ধব ঠাকরে এবং রাজ ঠাকরে দুজনেই এই সিদ্ধান্তকে মারাঠি ভাষার আত্মপরিচয়ের জয় হিসেবে বর্ণনা করেছেন। দুই নেতাই এটিকে মহারাষ্ট্রের গৌরবের সঙ্গে যুক্ত করে জনগণের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের চেষ্টা করেছেন। এই কারণেই এখন এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিজয় র্যালির আয়োজন করা হচ্ছে।
র্যালি নিয়ে প্রস্তুতি তুঙ্গে
র্যালির পরিপ্রেক্ষিতে মুম্বাই পুলিশ ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা সম্পূর্ণ সজাগ রয়েছে। ট্র্যাফিকের সমস্যা মোকাবিলায় বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মুম্বাই পুলিশের কর্মকর্তারা ক্রমাগত অনুষ্ঠানস্থলে গিয়ে আইন-শৃঙ্খলার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছেন। শিবসেনা ইউবিটি এবং মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা (এমএনএস) মিলিতভাবে জনসমাগম ব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তা নিয়ে কৌশল তৈরি করছে।
শিবসেনা ইউবিটি-র আক্রমণ
শিবসেনা ইউবিটি-র সাংসদ অরবিন্দ সাওয়ান্ত প্রেসের সঙ্গে কথা বলার সময় বলেন, এই বিজয় উৎসব মারাঠি ভাষা ও আত্মপরিচয়ের সম্মানে উদযাপন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, যদি মুম্বাই পুলিশ আগেই খোলা মাঠের অনুমতি দিত, তাহলে এত বিশাল আকারের সভা একটি বন্ধ প্রেক্ষাগৃহে আয়োজন করতে হতো না। তিনি আরও বলেন, মারাঠি ভাষার জন্য ১৯৬০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত যে সংগ্রাম হয়েছে, এটি সেই সংগ্রামের আরও একটি ঐতিহাসিক জয়।