ইরানের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি ট্রাম্প ব্রিজ: তেহরানের সতর্কতা

ইরানের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি ট্রাম্প ব্রিজ: তেহরানের সতর্কতা

আমেরিকা সমর্থিত ট্রাম্প ব্রিজ প্রকল্পের বিরোধিতা করে ইরান সতর্ক করেছে যে এটি তাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি। মধ্যপ্রাচ্যে এই পদক্ষেপ নতুন ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে।

Iran-US: মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি আবারও উত্তপ্ত হতে দেখা যাচ্ছে। ইরান আমেরিকার প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় তৈরি হওয়া নতুন আন্তর্জাতিক করিডোর "ট্রাম্প ব্রিজ"-এর তীব্র বিরোধিতা করেছে। এই করিডোরটি আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে হওয়া শান্তি চুক্তির অংশ, কিন্তু ইরান এটিকে তাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকি মনে করছে।

যুদ্ধবিরতির ৪৭ দিন পর ফের বাড়ল উত্তেজনা

ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সম্প্রতি ২৪ জুন যুদ্ধ শেষ হয়েছে। মাত্র ৪৭ দিন পরেই নতুন বিবাদের জন্ম হয়েছে। এইবার সংঘাতের কারণ সরাসরি আমেরিকা ও ট্রাম্প। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনেই-এর ডেপুটি আলী আকবর বেলায়েতি বলেছেন যে তেহরান "ট্রাম্প ব্রিজ" করিডোর নির্মাণের কোনও অবস্থাতেই অনুমোদন দেবে না। তাঁর দাবি, এই প্রকল্পটি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে এবং ইরানের সীমান্তের খুব কাছে অবস্থিত।

"ট্রাম্প ব্রিজ" কী এবং কেন এটি বিতর্কিত

মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান এবং আজারবাইজানের রাষ্ট্রপতি ইলহাম আলিয়েভের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছেন। এর অধীনে আমেরিকাকে এই করিডোরের ৯৯ বছরের জন্য লিজ দেওয়া হয়েছে। হোয়াইট হাউস এটিকে "ট্রাম্প রুট" নাম দিয়েছে এবং এটিকে আন্তর্জাতিক শান্তি ও সমৃদ্ধির দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করেছে।

এই করিডোরটি আজারবাইজানকে তার নাখচিভান অঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত করবে এবং এটি আর্মেনিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ সুনিকের মধ্যে দিয়ে যাবে। এর ফলে আজারবাইজান সরাসরি সংযোগ পাবে, কিন্তু ইরানের বক্তব্য হল এটি তাদের উত্তর সীমান্তের খুব কাছ দিয়ে যাবে এবং মার্কিন সেনাবাহিনীকে কৌশলগত সুবিধা প্রদান করবে।

ইরানের নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক উদ্বেগ

ইরানের যুক্তি হল আজারবাইজান আগে থেকেই ইরানি ভূখণ্ডের মধ্যে দিয়ে নাখচিভানে পৌঁছতে পারে। নতুন এই পথ শুধুমাত্র তাদের অর্থনৈতিক অবস্থাকে দুর্বল করবে না, বরং আমেরিকাকে তাদের দরজায় নিয়ে আসবে। তেহরানের আশঙ্কা, এই করিডোর ভবিষ্যতে গুপ্তচরবৃত্তি এবং সামরিক কার্যকলাপের জন্য ব্যবহার করা হতে পারে।

রাশিয়ার প্রভাব হ্রাস এবং আমেরিকার ক্রমবর্ধমান উপস্থিতি

দক্ষিণ ককেশাস অঞ্চল দীর্ঘকাল ধরে রাশিয়ার প্রভাবাধীন ছিল। কিন্তু ২০২৩ সালে নাগোর্নো-কারাবাখ থেকে হাজার হাজার আর্মেনীয় নাগরিকের স্থানান্তরের পরে ক্রেমলিনের মধ্যস্থতাকারী হিসাবে প্রভাব কমে গেছে। এখন আর্মেনিয়া ওয়াশিংটনের কাছাকাছি আসছে, যা একটি বড় ভূ-রাজনৈতিক পরিবর্তনের ইঙ্গিত। "ট্রাম্প ব্রিজ" এই পরিবর্তনের প্রতীক হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে।

Leave a comment