ট্যুলিপ জোশী 2002 সালে বলিউডে জাঁকজমকভাবে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন, কিন্তু অভিনয় ছেড়ে এখন তিনি একজন সফল businesswoman। তিনি সিনেমাকে বিদায় জানিয়ে স্বামী বিনোদ নায়ারের সঙ্গে একটি কনসাল্টিং ফার্ম শুরু করেন এবং সোশ্যাল মিডিয়াতেও বেশ সক্রিয় থাকেন।
Tulip Joshi: বলিউডের দুনিয়াটা এমনই, যেখানে রোজ কেউ ঝলমল করে ওঠে, আবার কেউ হারিয়ে যায়। কিন্তু কিছু মুখ এমন থাকে, যারা পর্দার আড়ালে চলে গেলেও মানুষের স্মৃতিতে সবসময় জীবন্ত থাকে। তেমনই একটি নাম – ট্যুলিপ জোশী। 2002 সালে যশরাজ ফিল্মসের সুপারহিট সিনেমা ‘ mere yaar ki shaadi hai’ দিয়ে বলিউডে আত্মপ্রকাশ করা এই অভিনেত্রী প্রথম সিনেমাতেই সকলের মন জয় করে নিয়েছিলেন। কিন্তু তারপর হঠাৎ করেই তিনি গ্ল্যামার জগৎ থেকে উধাও হয়ে যান। আজ 23 বছর পর তাঁর জীবন সম্পূর্ণ বদলে গেছে।
যশরাজ ফিল্মস দিয়ে দারুণ শুরু
2002 সালে যখন ‘ mere yaar ki shaadi hai’ মুক্তি পায়, তখন সকলের চোখ ছিল সেই নতুন অভিনেত্রীর উপর, যিনি উদয় চোপড়ার বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন। ট্যুলিপ জোশী, যিনি সিনেমায় অঞ্জলি শর্মার চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন, তাঁর সৌন্দর্য এবং সারল্য দিয়ে দর্শকদের মন জয় করে নেন। সিনেমাটি হিট হয় এবং ট্যুলিপ প্রচুর প্রশংসা পান। কিন্তু ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে যা হয়, একটি সিনেমার সাফল্যের পরেও ক্যারিয়ারের নিশ্চয়তা পাওয়া যায় না। এরপর ট্যুলিপ কিছু হিন্দি, তেলুগু, কন্নড় এবং পাঞ্জাবি সিনেমায় কাজ করেছিলেন, কিন্তু তিনি সেই জনপ্রিয়তা পাননি যা তিনি আশা করেছিলেন।
আদিত্য চোপড়ার পার্টি থেকে প্রথম সিনেমার সুযোগ
ট্যুলিপের বলিউডে আসা কোনো সিনেমার গল্পের চেয়ে কম নয়। আসলে, তিনি আদিত্য চোপড়ার প্রথম স্ত্রী পায়েল খান্নার খুব কাছের বন্ধু ছিলেন। আদিত্য এবং পায়েলের বিয়েতে যখন ট্যুলিপ গিয়েছিলেন, তখন সেখানে উপস্থিত সকলের নজর তার দিকে আটকে যায়। আদিত্য চোপড়া তার ব্যক্তিত্ব দেখে অডিশনের জন্য ডেকেছিলেন। কিছু সময় পরে তিনি ' mere yaar ki shaadi hai' -এর প্রস্তাব পান। বিশেষ বিষয় হল ট্যুলিপের কোনো ফিল্মি ব্যাকগ্রাউন্ড ছিল না। তিনি মুম্বাইয়ের সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে কেমিস্ট্রিতে স্নাতক হন এবং মডেলিং দিয়ে তার ক্যারিয়ার শুরু করেন।
যখন গ্ল্যামারকে বিদায় জানালেন
2015 সালে ট্যুলিপ জোশী হঠাৎ করেই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিকে বিদায় জানান। এই সিদ্ধান্ত তিনি কোনো বিতর্ক বা হইচই ছাড়াই নিয়েছিলেন। এর কারণ ছিল তাঁর ব্যক্তিগত এবং পেশাগত জীবনে আসা বড় পরিবর্তন।
তিনি ক্যাপ্টেন বিনোদ নায়ারকে বিয়ে করেন – যিনি একজন প্রাক্তন আর্মি অফিসার, লেখক এবং এখন সফল বিজনেসম্যান। তাঁরা চার বছর লিভ-ইন সম্পর্কে ছিলেন এবং তারপর বিয়ে করেন। এরপর তাঁরা দুজনে মিলে একটি কনসাল্টিং ফার্ম শুরু করেন, যেখানে ট্যুলিপ ডিরেক্টর। এই কোম্পানি কর্পোরেট ট্রেনিং, লিডারশিপ ডেভেলপমেন্ট, লাইফ কাউন্সেলিংয়ের মতো ক্ষেত্রে কাজ করে।
কোটি টাকার ব্যবসা এবং নতুন পরিচয়
ট্যুলিপ জোশী এখন অভিনয় থেকে পুরোপুরি দূরে সরে গেছেন, কিন্তু তিনি ব্যবসার জগতে বড় নাম করেছেন। তিনি এখন শুধু একজন প্রাক্তন অভিনেত্রী নন, বরং একজন সফল businesswoman এবং বৈদিক কাউন্সিলরও। তাঁর ব্যবসা কোটি টাকার টার্নওভার করে এবং তিনি অনেক নামী কর্পোরেটকে কনসাল্টিং দেন। সোশ্যাল মিডিয়াতেও তিনি বেশ সক্রিয় এবং তাঁর পেশাগত ও ব্যক্তিগত জীবনের ঝলক শেয়ার করেন।
45 বছর বয়সেও তিনি একইরকম সুন্দরী
ট্যুলিপ জোশীর বয়স 45 বছর হলেও তাঁর সৌন্দর্য এবং ফিটনেস দেখে কেউ আন্দাজ করতে পারবে না। তিনি যোগ, ধ্যান এবং বৈদিক জীবনযাপন পদ্ধতি গ্রহণ করে নিজেকে মানসিকভাবে এবং শারীরিকভাবে শক্তিশালী করে তুলেছেন। তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টগুলোতে পরিষ্কার দেখা যায় যে তিনি তাঁর নতুন জীবনে সন্তুষ্ট এবং ফিল্মি জগৎকে একেবারেই মিস করেন না।
ফিল্মি ক্যারিয়ার ছোট হলেও স্মরণীয়
ট্যুলিপের ফিল্মি সফর ছোট হলেও দর্শকেরা তাঁকে কখনো ভোলেননি। ' mere yaar ki shaadi hai' সিনেমায় তাঁর নিষ্পাপ মুখ আজও বলিউড প্রেমীদের স্মৃতিতে সতেজ রয়েছে। তিনি প্রমাণ করেছেন যে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির বাইরেও একটি শক্তিশালী এবং সফল জীবন তৈরি করা সম্ভব।