মার্কিন বিদেশ দফতর জানিয়েছে, ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক বদলানো যাবে না। আসিম মুনিরের দু'মাসে দ্বিতীয়বার আমেরিকা সফর আঞ্চলিক রাজনীতিতে নতুন আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
Pakistan-US Relations: পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনিরের সাম্প্রতিক আমেরিকা সফর আবারও আলোচনার কেন্দ্রে। গত দু'মাসে এটি তাঁর দ্বিতীয় আমেরিকা সফর। এর মধ্যে, মার্কিন বিদেশ দফতরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক এবং আমেরিকার ভূমিকা নিয়ে বড় বিবৃতি দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, আমেরিকা ভারত ও পাকিস্তান উভয়ের সঙ্গেই গভীর সম্পর্ক রাখে এবং এটি পরিবর্তন করা সম্ভব নয়।
আসীম মুনিরের আমেরিকা সফর কেন শিরোনামে
জেনারেল আসিম মুনির ২০২৫ সালের জুন মাসে প্রথমবার আমেরিকা গিয়েছিলেন, যেখানে তিনি রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে একটি ব্যক্তিগত ভোজে অংশ নিয়েছিলেন। এই সাক্ষাৎ কূটনৈতিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। সম্প্রতি তিনি দ্বিতীয়বার আমেরিকা যান এবং সেখানে US Central Command (CENTCOM)-এর কমান্ডার জেনারেল মাইকেল কুরিলার বিদায় অনুষ্ঠানে যোগ দেন। তিনি নতুন কমান্ডার অ্যাডমিরাল ব্র্যাড কুপারকে অভিনন্দনও জানান।
জেনারেল কুরিলা তাঁর বিদায়ী ভাষণে পাকিস্তানকে "দুর্দান্ত সন্ত্রাস-বিরোধী সহযোগী" হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন, যা এই সফরের গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে দেয়।
ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনায় আমেরিকার ভূমিকা
ট্যামি ব্রুস মিডিয়াকে জানিয়েছেন যে, ২০২৫ সালের মে মাসে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চার দিন ধরে সামরিক উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছিল। পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারত, কিন্তু আমেরিকা দ্রুত কূটনৈতিক হস্তক্ষেপ করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে।
তাঁর মতে, রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প, ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভেন্স এবং বিদেশমন্ত্রী মার্কো রুবিও সরাসরি ফোন কলের মাধ্যমে ভারত ও পাকিস্তান উভয় দেশের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং আক্রমণ বন্ধ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
ব্রুস এটিকে আমেরিকার জন্য "গর্বের মুহূর্ত" হিসেবে বর্ণনা করেছেন, কারণ আমেরিকান নেতৃত্ব একটি সম্ভাব্য ধ্বংসাত্মক পরিস্থিতি এড়িয়ে গেছে এবং উভয় দেশকে একসঙ্গে বসে সমাধানের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ দিয়েছে।
“আমেরিকার সম্পর্ক উভয় দেশের সঙ্গেই গভীর” – ট্যামি ব্রুস
ব্রুস জোর দিয়ে বলেন যে, আমেরিকার ভারত ও পাকিস্তান উভয়ের সঙ্গেই গভীর এবং ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে, যা পরিবর্তন করা যাবে না। তিনি বলেন, "আমরা উভয় দেশের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, কারণ এটি শুধু এই অঞ্চলের জন্য নয়, পুরো বিশ্বের জন্য উপকারী।"
তিনি জানান, যখন ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা চরমে ছিল, তখন আমেরিকান নেতৃত্ব পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখছিল এবং প্রতিটি স্তরে আলোচনা চলছিল। এটাই সংঘর্ষ এড়াতে সাহায্য করেছে।
আমেরিকা-পাকিস্তান সন্ত্রাস-বিরোধী আলোচনা
১২ আগস্ট, ২০২৫ ইসলামাবাদে আমেরিকা-পাকিস্তান সন্ত্রাস-বিরোধী আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এতে উভয় দেশ সন্ত্রাসবাদের সকল রূপ ও প্রকাশ মোকাবিলায় তাদের যৌথ অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে। এই আলোচনায় নিরাপত্তা সহযোগিতা, গোয়েন্দা অংশীদারিত্ব এবং সন্ত্রাস-বিরোধী কৌশল নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।