উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন: জোটের প্রার্থী বাছাইয়ে তৎপর বিরোধী শিবির

উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন: জোটের প্রার্থী বাছাইয়ে তৎপর বিরোধী শিবির

জগদীপ ধনখড় ইস্তফা দেওয়ার পর উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে তৎপরতা বেড়েছে। I.N.D.I.A জোট সম্মিলিত প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে বিরোধী দলগুলির মধ্যে ঐকমত্য গড়ে তোলার জন্য সক্রিয় রয়েছেন।

নয়াদিল্লি: দেশে উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক তৎপরতা বেড়ে গিয়েছে। জগদীপ ধনখড়ের ইস্তফার পর এবার শাসক ও বিরোধী উভয় পক্ষই নতুন প্রার্থীর খোঁজে নেমে পড়েছে। এরই মধ্যে, I.N.D.I.A জোটও বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ জানাতে তাদের সম্মিলিত প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছে।

খাড়গের সক্রিয় ভূমিকা

কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে বিরোধী দলগুলির মধ্যে ঐকমত্য গড়ে তোলার জন্য ক্রমাগত যোগাযোগ রাখছেন। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, তিনি বেশ কয়েকজন প্রধান নেতার সঙ্গে কথা বলেছেন যাতে জোট এমন একটি নামের ব্যাপারে একমত হতে পারে যা সমস্ত দলের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে। খাড়গে মনে করেন, এই নির্বাচন শুধুমাত্র পদের জন্য নয়, একটি রাজনৈতিক বার্তা দেওয়ারও সুযোগ।

ফলাফলের পরোয়া নেই, বার্তাই আসল

সূত্রের খবর, I.N.D.I.A জোটের অভ্যন্তরে এই বিষয়ে স্পষ্ট মতামত রয়েছে যে ফলাফল যাই হোক না কেন, তাদের এই নির্বাচনে অংশ নেওয়া উচিত। এর উদ্দেশ্য হল বিজেপির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধতা দেখানো এবং জনগণের মধ্যে জোটের দৃঢ়তার ইঙ্গিত দেওয়া। জোটের নেতারা মনে করেন যে বিরোধীদের এই সক্রিয়তা আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের জন্য একটি অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি করবে।

জগদীপ ধনখড়ের ইস্তফা ও নতুন প্রক্রিয়া

উপরাষ্ট্রপতি পদে থাকা জগদীপ ধনখড় ২১ জুলাই আকস্মিকভাবে স্বাস্থ্যজনিত কারণ দেখিয়ে ইস্তফা দিয়েছিলেন। যদিও রাজনৈতিক মহলে তাঁর ইস্তফার পিছনে অন্য কারণ নিয়েও জল্পনা চলছে।

নির্বাচন কমিশন ৯ সেপ্টেম্বর উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন করার বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২১ আগস্ট ধার্য করা হয়েছে। ২২ আগস্ট মনোনয়নপত্রগুলি যাচাই করা হবে এবং ২৫ আগস্ট পর্যন্ত নাম প্রত্যাহার করা যাবে। এরপর ৯ সেপ্টেম্বর ভোটগ্রহণ এবং একই দিনে গণনা করা হবে।

প্রার্থী নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে

এখনও পর্যন্ত I.N.D.I.A জোটের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও নাম ঘোষণা করা হয়নি, তবে অভ্যন্তরীণ স্তরে বেশ কয়েকটি নাম নিয়ে আলোচনা চলছে। সূত্র মারফত জানা যায়, কিছু দল চাইছে বিজেপি প্রার্থী ঘোষণা করার পরেই তাদের নাম ঠিক করা হোক, যাতে কৌশলগতভাবে মোকাবিলা করা সহজ হয়।

অন্যদিকে, একটি অংশের ধারণা, দেরি করলে বার্তা দুর্বল হয়ে যেতে পারে এবং বিরোধীদের আগে থেকেই তাদের প্রার্থী ঘোষণা করা উচিত। খাড়গে এই বিষয়ে সমস্ত দলের মধ্যে একটি ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করছেন।

বিহার থেকে দিল্লি পর্যন্ত বিরোধীদের একতা

এই পুরো ঘটনাটি এমন এক সময়ে ঘটছে যখন I.N.D.I.A জোটের অন্তর্ভুক্ত দলগুলির মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া আগের থেকে ভাল হয়েছে। সম্প্রতি জোটের শীর্ষ নেতারা বিহারে ভোটার তালিকার বিশেষ সংশোধন (Special Intensive Revision) এবং কথিত নির্বাচনী কারচুপির বিরুদ্ধে একসঙ্গে লড়াই করার সংকল্প নিয়েছেন।

রাহুল গান্ধীর বাসভবনে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক

জোটের ঐক্যের দৃষ্টান্ত স্থাপন করে, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর বাসভবনে বিরোধী নেতাদের একটি নৈশভোজের আয়োজন করা হয়েছিল। এতে বিহারে ভোটার তালিকার বিষয়টির পাশাপাশি বিজেপি এবং নির্বাচন কমিশনের "ভোট চুরির মডেল"-এর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। লোকসভা নির্বাচন ২০২৪-এর পর বিরোধী দলগুলির শীর্ষ নেতাদের এটি ছিল প্রথম সাক্ষাৎ।

Leave a comment