২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের আগে রাজ্যের ভোট পরিকাঠামোয় আসছে বড় পরিবর্তন। আগামী সপ্তাহেই সর্বদলীয় বৈঠক ডাকল নির্বাচন কমিশন। সূত্রের খবর, রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর থেকে সমস্ত রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানানো হবে এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে। আলোচনার মূল কেন্দ্রবিন্দু—ভোটের আগে বুথ সংখ্যা বৃদ্ধির পরিকল্পনা এবং তার সুষ্ঠু বিন্যাস।
১৪ হাজারেরও বেশি নতুন বুথের প্রস্তাব, তালিকা পাঠানো হয়েছে দলগুলিকে
কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, এবার প্রায় ১৪ হাজার নতুন বুথ যোগ হতে চলেছে ভোট ব্যবস্থায়। ইতিমধ্যেই রাজ্যের স্বীকৃত রাজনৈতিক দলগুলির কাছে পৌঁছে গেছে নয়া বুথের প্রস্তাবিত তালিকা। বুথ বিন্যাস কেমন হবে, কোন এলাকায় কত বুথ যুক্ত হবে, এবং ভোটারদের সুবিধার জন্য কীভাবে পরিকল্পনা করা হবে—এসব বিষয়েই মূলত হবে সর্বদলীয় বৈঠকের আলোচনা। নির্বাচন কমিশনের দাবি, এই বাড়তি বুথের ফলে ভোট প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ ও সুশৃঙ্খল হবে।
বুথে সর্বোচ্চ ১২০০ ভোটার—নতুন নিয়মের প্রভাব
জাতীয় নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে, একটি বুথে সর্বাধিক ১২০০ ভোটার রাখা যাবে। এই নির্দেশনা মাথায় রেখেই রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর বুথ বিন্যাসের খসড়া তৈরি করছে। সূত্রের খবর, সমস্ত তথ্য যাচাই ও আলোচনা শেষ করেই জাতীয় নির্বাচন কমিশনের কাছে পাঠানো হবে চূড়ান্ত রিপোর্ট। ফলে বুথ সংখ্যা বৃদ্ধির এই প্রক্রিয়া সরাসরি কেন্দ্রীয় নির্দেশনার সঙ্গেই যুক্ত।
রাজ্য ও জাতীয় কমিশনের টানাপোড়েন অব্যাহত
এরই মধ্যে রাজ্য ও জাতীয় নির্বাচন কমিশনের সম্পর্ক একপ্রকার টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ভোটার তালিকায় গরমিলের অভিযোগে চার সরকারি আধিকারিককে সাসপেন্ড করেছে জাতীয় কমিশন। একইসঙ্গে রাজ্য সরকারকে রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমাও বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এই নির্দেশনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মহলে তৈরি হয়েছে চাঞ্চল্য।
মুখ্যসচিবকে তলব, সময়সীমা মেনে রিপোর্টের নির্দেশ
মঙ্গলবার বিকেল ৩টার মধ্যে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। শুধু তাই নয়, মুখ্যসচিবকে ব্যক্তিগতভাবে দিল্লিতে হাজির হয়ে পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করারও নির্দেশ এসেছে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পদক্ষেপ রাজ্য ও কেন্দ্রের মধ্যে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ঘিরে চলমান দ্বন্দ্বকে আরও প্রকট করে তুলেছে।
আগামী বৈঠকের দিকে তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল
এখন নজর আগামী সপ্তাহের সর্বদলীয় বৈঠকের দিকে। এই বৈঠকে বুথ সংখ্যা বৃদ্ধি, বিন্যাস, ভোটার তালিকার নির্ভুলতা—সবই হবে আলোচনার অংশ। পর্যবেক্ষকদের মতে, বুথ বৃদ্ধির এই উদ্যোগ ভোটদানের প্রক্রিয়াকে সহজতর করলেও রাজনৈতিক কৌশলের ক্ষেত্রে এর প্রভাব অনেক দূর পর্যন্ত পড়তে পারে।