টেট রায় পুনর্বিবেচনা চায় রাজ্য, সুপ্রিম কোর্টে রিভিউ পিটিশনের চিন্তা

টেট রায় পুনর্বিবেচনা চায় রাজ্য, সুপ্রিম কোর্টে রিভিউ পিটিশনের চিন্তা

টেট রিভিউ পিটিশন: প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক শিক্ষকদের টেট পাশ বাধ্যতামূলক করার সুপ্রিম কোর্টের রায় ঘিরে রাজ্য সরকার রিভিউ পিটিশনের ভাবনা শুরু করেছে। শনিবার শিক্ষা দপ্তরের এক শীর্ষকর্তা বলেন, বিষয়টি প্রশাসনিক স্তরে আলোচনায় রয়েছে। বিকাশ ভবনের প্রস্তাব যাচাইয়ের পর নবান্ন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। উল্লেখ্য, আদালত জানিয়েছিল— ‘শিক্ষার অধিকার আইন, ২০০৯’-এর আওতায় ৫৫ বছরের কম সব শিক্ষককে আগামী দু’‌বছরের মধ্যে টেট পাশ করতে হবে, নয়তো চাকরি থাকবে না।

প্রশাসনিক স্তরে রিভিউ পিটিশন নিয়ে প্রস্তুতি

বিকাশ ভবনে ইতিমধ্যেই আলোচনার শুরু হয়েছে। শিক্ষা দপ্তরের শীর্ষকর্তারা জানিয়েছেন, “প্রস্তাব এখনো খতিয়ে দেখা হচ্ছে, নবান্ন সিদ্ধান্ত নেবে।”প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদও জেলাভিত্তিক তথ্য সংগ্রহের নির্দেশ দিয়েছে— কোন শিক্ষক টেট ছাড়া চাকরি পেয়েছেন, কার অবসর কবে, সব তথ্য দ্রুত জানাতে বলা হয়েছে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদগুলিকে।

আদালতের রায় ও শিক্ষকদের অনিশ্চয়তা

সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, ‘শিক্ষার অধিকার আইন ২০০৯’ অনুযায়ী ২৫–৩০ বছর কর্মরত ৫৫ বছরের কম শিক্ষককে দুই বছরের মধ্যে টেট পাশ করতে হবে।এই রায় কার্যকর হলে হাজার হাজার শিক্ষক চাকরি হারানোর আশঙ্কায়। অনেকেই বলছেন, কর্মরত শিক্ষকদের জন্য পৃথক মূল্যায়নের সুযোগ থাকা উচিত ছিল।

শিক্ষক সংগঠনের আপত্তি ও দাবি

বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনন্দ হান্ডা বলেন, “রিভিউ না হওয়া পর্যন্ত বায়োডেটা সংগ্রহ বন্ধ রাখা উচিত।”অন্যদিকে ভীমসেন বিসওয়াল প্রশ্ন তুলেছেন, “২০১০ সালের আগে রাজ্যই যোগ্যতা নির্ধারণ করত, তাহলে এখন নতুন নিয়ম কেন?”শিক্ষক সংগঠনগুলি মনে করছে, এই রায় বাস্তবায়িত হলে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞ শিক্ষকদের ক্ষতি হবে।

অন্যান্য রাজ্যের নজির ও সম্ভাবনা

অন্য কয়েকটি রাজ্যও টেট রায় নিয়ে রিভিউ আবেদন করেছে। NCTE-র (ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার্স এডুকেশন) পুরনো বিধি অনুযায়ী রাজ্য সরকারের হাতে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষমতা ছিল।বিশেষজ্ঞদের মতে, রাজ্য সেই যুক্তিতেই সুপ্রিম কোর্টে রিভিউ চাইতে পারে। প্রশাসনের লক্ষ্য এখন আইনি নির্দেশ ও বাস্তব পরিস্থিতির মধ্যে ভারসাম্য আনা।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী সব প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক শিক্ষককে টেট পাশ করতে হবে। তবে রাজ্য সরকার এই রায় পুনর্বিবেচনার জন্য রিভিউ পিটিশন দাখিলের চিন্তা করছে। শিক্ষা দপ্তরের এক শীর্ষকর্তা জানিয়েছেন, প্রশাসনিক স্তরে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।

Leave a comment