জ্যোতিষশাস্ত্রে মঙ্গল গ্রহকে পরাক্রম ও শক্তির কারক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু এই গ্রহ দুর্বল হয়ে গেলে, ব্যক্তি মানসিক ও শারীরিক সমস্যায় জর্জরিত হতে পারে। উচ্চ রক্তচাপ, রক্ত রোগ, আলসার, ক্যান্সারের মতো রোগও এর সঙ্গে যুক্ত বলে মনে করা হয়। হনুমান পূজা, মঙ্গল মন্ত্র জপ, লাল জিনিস দান এবং প্রবাল রত্ন ধারণ করার মতো उपाय মঙ্গলকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করতে পারে।
Mangal Remedies: মঙ্গল গ্রহ দুর্বল হলে ব্যক্তির জীবনে স্বাস্থ্য সমস্যার পাশাপাশি মানসিক চাপও বাড়তে পারে। জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে, এই গ্রহ রক্ত, শক্তি এবং রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতার প্রতিনিধিত্ব করে। এর খারাপ স্থিতির কারণে রাগ, বিরক্তি, আত্মবিশ্বাসের অভাব এবং আঘাত বা দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়তে পারে। মঙ্গলকে শক্তিশালী করার জন্য ধর্মীয় ও জ্যোতিষীয় উপায় যেমন হনুমানজির পূজা, মঙ্গল মন্ত্র জপ এবং লাল জিনিস দান করার প্রথা প্রচলিত আছে।
রোগের সঙ্গে মঙ্গলের গভীর সম্পর্ক
জ্যোতিষে মঙ্গল গ্রহকে রক্ত এবং রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতার কারক বলা হয়েছে। এ কারণে এর সরাসরি সম্পর্ক শরীরে রক্ত এবং ইমিউন সিস্টেম সম্পর্কিত রোগের সঙ্গে জড়িত বলে মনে করা হয়। कुंडलीতে মঙ্গল গ্রহ দুর্বল হলে ব্যক্তির উচ্চ রক্তচাপ, রক্ত বিকৃতি, ফোড়া, আলসার, টিউমার এবং এমনকি ক্যান্সারের মতো গুরুতর রোগের ঝুঁকিও বাড়তে পারে।
এছাড়াও, जोड़ों ব্যথা, পেশী টান এবং মাথাব্যথার মতো সমস্যাও দীর্ঘ সময় ধরে থাকতে পারে। অনেক জ্যোতিষী মনে করেন যে মঙ্গল দোষের কারণে বৈবাহিক জীবনে কলহ, সন্তান লাভে বিলম্ব এবং পারিবারিক বিরোধের পরিস্থিতিও তৈরি হতে পারে।
দুর্বল মঙ্গলের লক্ষণ সহজেই চেনা যায়
জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে, মঙ্গল গ্রহের অশুভ প্রভাবে পড়লে ব্যক্তির স্বভাব ও শরীরে কিছু বিশেষ পরিবর্তন দেখা যায়। এই ধরনের ব্যক্তি প্রায়শই দ্রুত রেগে যায় এবং সামান্য বিষয়েও বিরক্ত হতে পারে। আত্মবিশ্বাসের অভাব, বারবার আঘাত পাওয়া, দুর্ঘটনার সম্মুখীন হওয়া, রক্তাল্পতা বা রক্তচাপের সমস্যাও দুর্বল মঙ্গলের লক্ষণ হিসেবে বিবেচিত হয়।
অনেক সময় এই প্রভাব এত গভীর হয় যে ব্যক্তি নিজেও বুঝতে পারে না যে তার স্বাস্থ্য বা স্বভাবের পরিবর্তনের আসল কারণ কী।
মঙ্গলকে শক্তিশালী করার ঐতিহ্যবাহী উপায়
ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে, যদি মঙ্গল গ্রহ দুর্বল হয় তবে এর প্রভাব কমাতে এবং গ্রহকে শক্তিশালী করতে কিছু সহজ উপায় করা যেতে পারে। এই উপায়গুলো প্রজন্ম ধরে অনুসরণ করা হয় এবং মনে করা হয় যে এর মাধ্যমে মঙ্গলের অশুভ প্রভাব অনেকাংশে কমানো যায়।
হনুমানজির আরাধনা
মঙ্গল দোষ শান্ত করার জন্য হনুমানজির পূজা সবচেয়ে কার্যকর উপায় হিসেবে বিবেচিত হয়। মঙ্গলবার হনুমান মন্দিরে গিয়ে দর্শন করা, সিঁদুর ও জুঁই তেল অর্পণ করা এবং হনুমান চালিসা পাঠ করা শুভ বলে মনে করা হয়।
মঙ্গল মন্ত্রের জপ
জ্যোতিষশাস্ত্রে “ওম অঙ্গ অঙ্গারকায় নমঃ” মন্ত্রটিকে মঙ্গল গ্রহের প্রধান বীজ মন্ত্র বলা হয়েছে। এটি প্রতিদিন ১০৮ বার জপ করলে মঙ্গলের অবস্থান শক্তিশালী হতে শুরু করে এবং স্বাস্থ্যের উপরও ইতিবাচক প্রভাব পড়ে।
লাল জিনিস দান
মঙ্গলের সম্পর্ক লাল রঙের সঙ্গে, তাই মঙ্গলবার মসুর ডাল, লাল কাপড়, লাল মিষ্টি বা লাল ফল দরিদ্র ও অভাবীদের দান করা শুভ বলে মনে করা হয়।
প্রবাল রত্ন ধারণ করা
জ্যোতিষীরা প্রায়ই দুর্বল মঙ্গল যুক্ত জাতকদের প্রবাল রত্ন পরার পরামর্শ দেন। এটি তামা বা সোনার আংটিতে খোদাই করে মঙ্গলবার পরলে উপকার পাওয়া যায় বলে মনে করা হয়।
তামার পাত্র ব্যবহার
তামা মঙ্গল গ্রহের ধাতু হিসেবে বিবেচিত হয়। তামার পাত্রে জল পান করা, পূজায় তামার ঘটি ব্যবহার করা এবং মাটিতে বসে খাবার খাওয়া মঙ্গল গ্রহকে শক্তিশালী করার সহজ উপায়গুলোর মধ্যে অন্যতম।
জ্যোতিষীয় বিশ্বাস
যদিও এই উপায়গুলোর বৈজ্ঞানিক ভিত্তি একটি ভিন্ন বিষয়, তবে ভারতে প্রজন্ম ধরে এই বিশ্বাস প্রচলিত যে গ্রহের অবস্থান এবং তাদের প্রভাব ব্যক্তির জীবনে সুখ-দুঃখ, স্বাস্থ্য এবং স্বভাবকে প্রভাবিত করে। মঙ্গল গ্রহ, যা সাহস ও শক্তির প্রতীক, দুর্বল হলে ব্যক্তির মধ্যে নেতিবাচকতা, স্বাস্থ্য সমস্যা এবং বিরোধ বাড়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। তাই জ্যোতিষশাস্ত্রে এটিকে ভারসাম্য রাখতে उपाय অবলম্বন করা লাভজনক বলে মনে করা হয়।