বিশেষ নিবিড় সংশোধনীতে আতঙ্ক নয়, আশ্বাস দিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী
পশ্চিমবঙ্গেও যে কোনও সময় চালু হতে পারে SIR অর্থাৎ স্পেশাল ইন্টেনসিভ রিভিশন। বিহারে এই প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। এই পরিপ্রেক্ষিতেই পশ্চিমবঙ্গবাসীকে আশ্বস্ত করে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার জানিয়েছেন, দেশের প্রকৃত ভোটারদের নাম কোনওভাবেই তালিকা থেকে বাদ যাবে না। কোনও রকম বিভ্রান্তি বা আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
২০০৩ সালের আগে ভোটারদের চিন্তার কিছু নেই, বলছেন সুকান্ত
সুকান্ত স্পষ্ট জানিয়েছেন, ‘‘২০০৩ সালের আগে যাঁদের নাম ভোটার তালিকায় ছিল, তাঁদের নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না। শুধু ২০০৩ সালের পর যাঁরা নতুনভাবে যুক্ত হয়েছেন, তাঁদের ভোটার আইডির সত্যতা যাচাই করা হবে।’’ এজন্য মোট ১১টি সরকারি প্রমাণপত্রের মধ্যে যেকোনও একটি উপস্থাপন করলেই চলবে। নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশনাও দিয়েছে। ফলে কারও ভোটার পরিচয় বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলেই তাঁর দাবি।
ভোটার তালিকায় ভুতুড়ে উপস্থিতি! বিজেপির অভিযোগে উত্তাল রাজ্য
তবে সুকান্ত মজুমদার আশ্বাস দিলেও বিজেপি নেতৃত্ব একাধিক এলাকায় ভুতুড়ে বা মৃত ভোটারের উপস্থিতি নিয়ে সরব হয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, বহু বছর ধরে তৃণমূল এই সমস্ত ‘ভুয়ো ভোটার’-দের ব্যবহার করেই নির্বাচনে জয় পেয়ে আসছে। শুভেন্দু অধিকারী থেকে সুকান্ত মজুমদার—প্রায় সবাই এই অভিযোগ তুলেছেন।
নির্মল মাঝির কেন্দ্রে ৩৯ জন মৃত ভোটার! তীব্র কটাক্ষ সুকান্তর
সুকান্ত আরও বলেন, উলুবেড়িয়া উত্তর বিধানসভা কেন্দ্র, যেখানে বিধায়ক নির্মল মাঝি, সেখানে মৃত ৩৯ জনের নাম এখনও ভোটার তালিকায় রয়েছে! এটাই প্রমাণ করে কীভাবে ভুতুড়ে ভোটারদের ব্যবহার করা হচ্ছে নির্বাচনে।’ আরও তীব্র ভাষায় তিনি বলেন, ‘‘রাজ্য ভরে গিয়েছে ভূতুড়ে ভোটারে। ওদের ভোটেই বারবার জেতে শাসক দল।
‘মহালায়ায় পূর্বপুরুষেরা তৃণমূলকে ভোট দিতে নামেন!’ কটাক্ষে কাঁটা সুকান্ত
তৃণমূলকে নিশানা করে সুকান্তের কটাক্ষ, ‘‘মহালায়ার দিন যেখানে আমরা পূর্বপুরুষদের আহ্বান করি তর্পণের মাধ্যমে, সেখানে এ রাজ্যে পূর্বপুরুষেরা শুধু ভোট দিতে ফেরেন! আর ভোটটা দেন তৃণমূলকে!’’ এই ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্যে রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। যদিও তৃণমূল এই অভিযোগকে গুরুত্ব দিতে নারাজ।
শাসকদলের দাবি—SIR হবে না, ভোটার কার্ড বাতিলের আশঙ্কা নেই
তৃণমূল কংগ্রেস পাল্টা জানিয়েছে, SIR-এর মাধ্যমে কারও ভোটার কার্ড বাতিল হবে না। তাঁদের দাবি, এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে মানুষকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে বিজেপি। দলীয় স্তরে বারবার জানানো হয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকার বা নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে যেন সাধারণ ভোটাররা ভয় না পান।
ভোটের আগে বড় ইস্যু SIR, সরগরম হবে রাজনীতি
এই বিশেষ নিবিড় সংশোধনী নিয়ে ইতিমধ্যেই সরগরম রাজ্য রাজনীতি। বিজেপি একে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে, আবার তৃণমূল এটিকে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র হিসেবে চিহ্নিত করছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে এই ইস্যু রাজনীতির কেন্দ্রীয় আলোচ্য বিষয় হতে চলেছে। জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি না হয়, সেদিকে নজর দেওয়া এখন সব দলেরই দায়িত্ব।