ম্যাগনেসিয়াম রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি করে গ্লুকোজ মেটাবলিজমকে উন্নত করে এবং ডায়াবেটিস সম্পর্কিত প্রদাহ কমায়। এর অভাবে ক্লান্তি, পেশীতে টান এবং বিরক্তিভাবের মতো সমস্যা হতে পারে। সবুজ শাকসবজি, বাদাম, শস্য, শিম, ডার্ক চকোলেট এবং ফ্যাটি ফিশ এর চমৎকার উৎস।
Control blood sugar levels: ডায়াবেটিসের ক্রমবর্ধমান ঘটনার মধ্যে ম্যাগনেসিয়াম রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ। এটি শরীরের কোষগুলোকে ইনসুলিনের প্রতি সংবেদনশীল করে তোলে এবং গ্লুকোজের মেটাবলিজমকে উন্নত করে। এছাড়াও, এর অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। ম্যাগনেসিয়ামের অভাবে ক্লান্তি, পেশীতে টান এবং অনিয়মিত হৃদস্পন্দনের মতো সমস্যা হতে পারে। এটিকে আপনার ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করতে সবুজ শাকসবজি, বাদাম, শস্য, শিম, ডার্ক চকোলেট, কলা, অ্যাভোকাডো এবং ফ্যাটি ফিশ খাওয়া যেতে পারে।
ম্যাগনেসিয়াম এবং রক্তে শর্করার সম্পর্ক
ম্যাগনেসিয়াম ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়াতে সাহায্য করে। যখন শরীরে ম্যাগনেসিয়ামের অভাব হয়, তখন কোষগুলো ইনসুলিনের প্রতি কম সংবেদনশীল হয়ে যায়। এর মানে হল যে গ্লুকোজ কোষগুলোতে প্রবেশ করতে পারে না এবং রক্তে জমা হতে থাকে, যার ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়। এছাড়াও, ম্যাগনেসিয়াম ইনসুলিনের ক্ষরণকে উন্নত করে গ্লুকোজ মেটাবলিজমেও সাহায্য করে।
প্রদাহ এবং ডায়াবেটিস
ম্যাগনেসিয়ামের মধ্যে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য পাওয়া যায়। এটি ডায়াবেটিস সম্পর্কিত দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ কমাতে সহায়ক। প্রদাহ কম হলে শরীরে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্সও কমতে পারে এবং রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রিত থাকে।
ম্যাগনেসিয়ামের অভাবের লক্ষণ
শরীরে ম্যাগনেসিয়ামের অভাব হলে ক্লান্তি, দুর্বলতা এবং পেশীতে টান বা কাঁপুনি অনুভূত হতে পারে। এছাড়াও অনিয়মিত হৃদস্পন্দন এবং বিরক্তিভাবের মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে। তাই রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণের জন্য এই খনিজটির পর্যাপ্ত পরিমাণ জরুরি।
ম্যাগনেসিয়ামকে ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করার উপায়
- সবুজ শাকসবজি: পালং শাক, কেল, মেথি, সরিষার শাক এবং ব্রোকলির মতো সবুজ শাকসবজি ম্যাগনেসিয়ামের চমৎকার উৎস। প্রতিদিনের খাবারে এর ব্যবহার রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে।
- বাদাম এবং বীজ: বাদাম, কাজু, কুমড়োর বীজ এবং সূর্যমুখীর বীজ ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ। তিলের গজক বা তিলের চিক্কি খেলেও ম্যাগনেসিয়ামের অভাব পূরণ করা যেতে পারে।
- শস্য: রাজগিরা, কুঁটো, ব্রাউন রাইস এবং বার্লি-র মতো শস্যে ম্যাগনেসিয়ামের পর্যাপ্ত পরিমাণ থাকে। এগুলো থেকে তৈরি রুটি, পরোটা বা সকালের নাস্তায় ওটসের পরিজ রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হতে পারে।
- ডাল এবং শিম: কালো ছোলা, রাজমা, মুগ ডাল এবং সয়াবিনে ম্যাগনেসিয়ামের সাথে প্রোটিনও পাওয়া যায়। এগুলো রক্তে শর্করাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক।
- ডার্ক চকোলেট: ৭০ শতাংশ বা তার বেশি কোকোযুক্ত ডার্ক চকোলেটে ম্যাগনেসিয়াম প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। এক-দুটি ছোট টুকরা শুধুমাত্র মিষ্টির আনন্দ দেবে না, রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করবে।
- ফল এবং মাছ: কলা এবং অ্যাভোকাডো ম্যাগনেসিয়ামের ভালো উৎস। এছাড়াও স্যামন এবং ম্যাকেরেলের মতো ফ্যাটি ফিশে প্রোটিন, ওমেগা-3 ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ম্যাগনেসিয়াম পাওয়া যায়।
রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণের জন্য ম্যাগনেসিয়ামের পর্যাপ্ত পরিমাণ খুবই জরুরি। এটি ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়াতে, গ্লুকোজ মেটাবলিজমকে উন্নত করতে এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। সবুজ শাকসবজি, বাদাম, শস্য, ডাল, ডার্ক চকোলেট, ফল এবং ফ্যাটি ফিশের মতো জিনিস প্রতিদিনের ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করে রক্তের শর্করার মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যেতে পারে। নিয়মিতভাবে ম্যাগনেসিয়ামের সেবন শুধুমাত্র ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে না, শরীরের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী।