ইয়েস ব্যাঙ্কের চমক: মুনাফায় উল্লম্ফন, শেয়ার বাজারে নতুন দিগন্ত?

ইয়েস ব্যাঙ্কের চমক: মুনাফায় উল্লম্ফন, শেয়ার বাজারে নতুন দিগন্ত?

ইয়েস ব্যাঙ্ক ২০২৬ অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকের ফলাফল প্রকাশ করে বাজারে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। শনিবার প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, ব্যাঙ্ক ৮০১ কোটি টাকা নিট মুনাফা অর্জন করেছে। এই মুনাফা গত বছরের একই ত্রৈমাসিকের তুলনায় ৫৯.৪ শতাংশ বেশি। গত বছর একই ত্রৈমাসিকে ব্যাঙ্ক ৫০২ কোটি টাকা নিট লাভ করেছিল।

ব্যাঙ্কের এই ত্রৈমাসিকটিকে তার পুনর্গঠনের পর থেকে সবচেয়ে শক্তিশালী ত্রৈমাসিক হিসাবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এর সাথে, বিনিয়োগকারীরা আশা করছেন যে সোমবার বাজার খোলার সাথে সাথে ইয়েস ব্যাঙ্কের শেয়ারগুলিতে বড় ধরনের উত্থান দেখা যেতে পারে।

PAT-এ দারুণ উল্লম্ফন

২০২৫ অর্থবর্ষের শেষ ত্রৈমাসিক অর্থাৎ জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসে ইয়েস ব্যাঙ্কের PAT অর্থাৎ কর পরবর্তী মুনাফা ছিল ৭৩৮ কোটি টাকা, যা এখন বেড়ে হয়েছে ৮০১ কোটি টাকা। এটি ৮ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি। পরপর দুই ত্রৈমাসিকে মুনাফা বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যাঙ্কের কার্যকারিতা আরও শক্তিশালী হয়েছে।

সুদ থেকে আয়েও বৃদ্ধি

ব্যাঙ্কের নিট সুদ আয়ও (Net Interest Income - NII) উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে। জুন ত্রৈমাসিকে NII ২,৩৭২.৫ কোটি টাকা হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় ৫.৭ শতাংশ বেশি। ব্যাঙ্কের নিট সুদের মার্জিন (Net Interest Margin - NIM) ২.৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা এক বছর আগের তুলনায় ১০ বেসিস পয়েন্ট বেশি।

गैर-ব्याज আয়েও বড় সমর্থন

এই ত্রৈমাসিকে ব্যাঙ্কের गैर-ব्याज আয় অর্থাৎ অন্যান্য উৎস থেকে আয় ৪৬.১ শতাংশ বেড়ে ১,৭৫২ কোটি টাকা হয়েছে। এতে প্রধান ভূমিকা রেখেছে রাজস্ব লাভ (Treasury Gain)। এটি ইঙ্গিত দেয় যে ব্যাঙ্ক শুধুমাত্র ঋণ থেকে নয়, অন্যান্য আর্থিক কার্যক্রম থেকেও ভাল মুনাফা অর্জন করেছে।

অপারেটিং মুনাফায়ও বৃদ্ধি

ইয়েস ব্যাঙ্কের পরিচালন মুনাফা বার্ষিক ভিত্তিতে ৫৩.৪ শতাংশ বেড়ে ১,৩৫৮ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। এটি ইঙ্গিত করে যে ব্যাঙ্কের কর্মদক্ষতাও উন্নত হয়েছে এবং খরচ আরও ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণ করা গেছে।

সংবিধানে বৃদ্ধি কিন্তু ভারসাম্য বজায়

এই ত্রৈমাসিকে ব্যাঙ্ক गैर-কর সংস্থান হিসাবে ২৮৪ কোটি টাকা রেখেছে, যা বার্ষিক ভিত্তিতে ৩৪.১ শতাংশ বেশি। তবে, ব্যাঙ্কের মুনাফা বৃদ্ধি পাওয়ায় এই বিধানগুলির প্রভাব কার্যকারিতার উপর পড়েনি।

খরচ-থেকে-আয় অনুপাতে বড় উন্নতি

ইয়েস ব্যাঙ্ক তার খরচ-থেকে-আয় (Cost to Income) অনুপাতকে ৭৪.৩ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৬৭.১ শতাংশ করেছে। এর মানে হল যে ব্যাঙ্ক এখন তার সম্পদ আরও কার্যকরভাবে ব্যবহার করছে এবং খরচ আরও ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে।

শেয়ার বাজারে কেমন হতে পারে গতি

শেয়ার বাজারের বিশেষজ্ঞদের মতে, ইয়েস ব্যাঙ্কের শক্তিশালী ত্রৈমাসিক ফলাফলের কারণে সোমবার এর শেয়ারগুলিতে ভালো উত্থান দেখা যেতে পারে। বর্তমানে ইয়েস ব্যাঙ্কের শেয়ারের দাম ২০.১৯ টাকার आसपास চলছে। যদি এই শেয়ার ২১ টাকার স্তর অতিক্রম করে, তবে এটি আরও উপরে যেতে পারে।

গত এক বছরের দিকে তাকালে, ইয়েস ব্যাঙ্কের শেয়ারে প্রায় ১৮.৪৯ শতাংশ পতন রেকর্ড করা হয়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিক ফলাফলে বিনিয়োগকারীদের মনোবল বেড়েছে এবং দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগকারীদের জন্য এটি একটি ইঙ্গিত হতে পারে যে ব্যাঙ্ক ধীরে ধীরে তার পুরনো অবস্থানে ফিরে আসছে।

বাজারে তৈরি হতে পারে নতুন ट्रेंड

যদি সোমবার শেয়ারে तेजी আসে और ২১ টাকার স্তর অতিক্রম করে, তবে এটি বাজারে একটি নতুন দিক নির্ধারণ করতে পারে। এতে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়তে পারে এবং ট্রেডিং ভলিউমও বাড়তে পারে।

ব্যাংকিং সেক্টরের জন্যও স্বস্তির খবর

ইয়েস ব্যাঙ্কের ভালো ফল শুধুমাত্র এই ব্যাঙ্কের জন্যই নয়, পুরো ব্যাঙ্কিং সেক্টরের জন্য ইতিবাচক ইঙ্গিত। এটি দেখায় যে বেসরকারি ব্যাঙ্কিং সেক্টরে স্থিতিশীলতা ফিরে আসছে এবং গ্রাহক ভিত্তি, ক্রেডিট গ্রোথ এবং সুদ আয়ে উন্নতি হচ্ছে।

কী থাকবে বাজারের পরবর্তী পদক্ষেপ

এখন সকলের নজর সোমবার বাজার খোলার পর ইয়েস ব্যাঙ্কের শেয়ারের গতির দিকে থাকবে। যদি शुरुआती ঘন্টায় শেয়ারে जोरदार কেনাকাটা দেখা যায়, তবে এটি পুরো সপ্তাহে শেয়ারকে মজবুত রাখতে পারে।

Leave a comment