হার্ট’ খারাপ মানেই মহাবিপদ আপনার এসি-র প্রাণভোমরা কোন অংশ জানেন জেনে নিন নাহলে বড় ক্ষতি অবশ্যম্ভাবী!

হার্ট’ খারাপ মানেই মহাবিপদ আপনার এসি-র প্রাণভোমরা কোন অংশ জানেন জেনে নিন নাহলে বড় ক্ষতি অবশ্যম্ভাবী!

এসি শুধু বিলাসিতা নয়, আজ জীবনের অপরিহার্য অংশ

গরমে হাঁসফাঁস দশা! এই সময় ঘরে ফিরে এসি-র শীতল হাওয়ায় বসলে যেন প্রাণ ফিরে আসে। এক সময় যেখানে এসি ছিল কেবল বিলাসিতার সামগ্রী, আজ তা অনেকের কাছে প্রয়োজনের চেয়েও বেশি কিছু। দিনের শেষে একটু আরাম, একটু স্বস্তি পেতে এসি এখন যেন ঘরের আবশ্যিক সঙ্গী হয়ে উঠেছে।

গরম যত বাড়ছে, ততই চাহিদা বাড়ছে এসি-র

আগে যেখানে হাতে গোনা কয়েকটি বাড়িতে এসি দেখা যেত, আজ শহর তো বটেই, মফস্‌সল এলাকাতেও এসি বসানো হচ্ছে হু হু করে। কারণ, শুধু গরম নয়, হিউমিডিটির দাপটও বাড়ছে প্রতি বছর। ফলে এপ্রিল থেকে আগস্ট—এই পুরো সময় জুড়ে এসি ছাড়া যেন জীবন অচল।

আপনি কি জানেন এসি-র শরীরেও থাকে একটি ‘হার্ট’?

হ্যাঁ, একদম ঠিক পড়ছেন! ঠিক যেমন আমাদের দেহে একটি হৃদয় রয়েছে যা রক্ত পাম্প করে সারা শরীর সচল রাখে, তেমনই এসি-র দেহেও থাকে একটি ‘হার্ট’। কিন্তু তা চোখে দেখা যায় না, বরং এর কাজ অনুভব করা যায় যখন এটি বিকল হয়।

এসি-র সেই হৃদপিণ্ড কী? উত্তরটা জানলে চমকে যাবেন

বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স সংস্থা, বিশেষত TCL-এর মতে, এসি-র ‘হার্ট’ হচ্ছে কম্প্রেসার। এটি ঠিক সেই রকমই গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যেটি ছাড়া এসি কার্যত মৃত। ফ্রিজ হোক বা এয়ার কন্ডিশনার, যেকোনও কুলিং ডিভাইসেই এই কম্প্রেসার ছাড়া হিমেল বাতাস একপ্রকার অসম্ভব।

কম্প্রেসার না থাকলে এসি-র ঠান্ডা করার ক্ষমতাই থাকে না

কম্প্রেসার হল সেই অংশ যা রেফ্রিজারেন্টকে সংকুচিত করে এবং ঠান্ডা বাতাস ঘরের ভিতরে পাঠায়। স্প্লিট এসি-তে এই কম্প্রেসার থাকে আউটডোর ইউনিটে। কম্প্রেসার যত ভালো কাজ করবে, তত ভালো ঠান্ডা হবে ঘর। একে নিয়ন্ত্রণ করেই এসি পুরো ব্যবস্থা চালায়।

এসি-র ‘হার্ট অ্যাটাক’ হলে কী হতে পারে? বিপদ কতটা বড়?

ঠিক যেমন আমাদের হৃদয় কাজ না করলে মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে, তেমনই এসি-র কম্প্রেসার বিকল হলে সে আর ঠান্ডা করতে পারে না। বরং উলটে ক্ষতি হয়ে যেতে পারে এসি-র অন্যান্য অংশেরও—যেমন ফ্যান, কয়েল, মোটর ইত্যাদি। এক কথায় বলা যায়, হার্ট নষ্ট মানেই পুরো শরীর বিপন্ন।

কম্প্রেসার নষ্ট হলে কীভাবে বুঝবেন? সাবধান হওয়ার উপায়

বেশ কিছু লক্ষণ থাকে যা থেকে বোঝা যায় কম্প্রেসার বিগড়ে গিয়েছে। আচমকা এসি থেকে অদ্ভুত আওয়াজ আসা, অস্বাভাবিক কম্পন হওয়া বা একেবারে ঠান্ডা না হওয়া—সবই সংকেত যে ভিতরের হার্ট ‘চলছে না’। এমন সমস্যা দেখা দিলেই দেরি না করে সার্ভিসিং করাতে হবে।

তাড়াতাড়ি সারাই না করালে কী সমস্যা হতে পারে?

যদি ভাবেন, একটু পরে করাবো বা এখন তো ঠান্ডা পাচ্ছি—এ ভুল করবেন না। কারণ, কম্প্রেসার একবার খারাপ হলে ধীরে ধীরে পুরো যন্ত্রটিরই কার্যক্ষমতা কমে যায়। অনেক সময় মেরামত নয়, পুরো কম্প্রেসার বদলানোর মতো খরচসাপেক্ষ বিষয় সামনে আসে।

অভিজ্ঞ টেকনিশিয়ানই পারে সমাধান দিতে

কম্প্রেসার সংক্রান্ত সমস্যায় নিজে কিছু করার চেষ্টা করলে উলটে বড় ক্ষতি হতে পারে। তাই এসি-তে যদি উপরের কোনও লক্ষণ চোখে পড়ে, তাহলে একমাত্র ভরসা কোনও অভিজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ার বা সার্ভিস সেন্টার। তাতে সময় ও অর্থ দুটোই সাশ্রয় হবে।

এসি ভালো রাখতে নিয়মিত মেন্টেনেন্স করান, নয়তো হার্ট ফেল হবেই

ঠিক যেমন রক্তচাপ বা সুগার চেক করিয়ে হার্ট সুস্থ রাখেন, তেমনই বছরে অন্তত একবার এসি-র সার্ভিসিং করানো আবশ্যক। এতে কম্প্রেসার সুস্থ থাকবে, বিদ্যুৎ খরচও কম হবে, আর দীর্ঘদিন ধরেই আপনার এসি আপনাকে দিব্যি ঠান্ডা হাওয়ার আনন্দ দেবে।

Leave a comment