আগামী দুই বছরে ৩০,০০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে আদানি পোর্টস অ্যান্ড এসইজেড মুন্দ্রা, ধামরা এবং ভিজিনজাম বন্দরগুলির সম্প্রসারণ করবে। লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০ সালের মধ্যে এক বিলিয়ন টন কার্গো হ্যান্ডলিং। অন্যদিকে, আদানি গ্রিন এনার্জি AA/স্টেবল রেটিং পেয়েছে। এই খবরগুলির জেরে উভয় কোম্পানির শেয়ারে তেজি আসার আশা করা হচ্ছে।
আদানি পোর্টস: গৌতম আদানি তাঁর পছন্দের কোম্পানি আদানি পোর্টস অ্যান্ড স্পেশাল ইকোনমিক জোন (APSEZ) নিয়ে একটি বড় পরিকল্পনা করেছেন। কোম্পানিটি আগামী দুই বছরে ৩০,০০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে, যার একটি বড় অংশ মুন্দ্রা, ধামরা এবং ভিজিনজাম বন্দরগুলির বার্থ (berth) এবং টার্মিনাল সম্প্রসারণে ব্যয় করা হবে। এর উদ্দেশ্য হল ২০৩০ সালের মধ্যে এক বিলিয়ন টন কার্গো হ্যান্ডলিং ক্ষমতা অর্জন করা। অন্যদিকে, আদানি গ্রিন এনার্জি CRISIL এবং India Ratings থেকে AA/Stable রেটিং পেয়েছে, যা কোম্পানির শক্তি নির্দেশ করে। এই ইতিবাচক খবরগুলির জেরে উভয় কোম্পানির শেয়ারে আলোড়ন দেখা যেতে পারে।
২০৩০ সালের মধ্যে কার্গো হ্যান্ডলিংয়ের বড় লক্ষ্য
আদানি পোর্টস আগামী বছরগুলির জন্য একটি বড় লক্ষ্য স্থির করেছে। কোম্পানিটি ২০৩০ সালের মধ্যে বার্ষিক এক বিলিয়ন টন কার্গো হ্যান্ডলিংয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এর মধ্যে প্রায় ৮৫০ মিলিয়ন মেট্রিক টন ভারতীয় বন্দরগুলি থেকে এবং প্রায় ১৪০ থেকে ১৫০ মিলিয়ন মেট্রিক টন বিদেশী সম্পদ (assets) থেকে সম্পন্ন করা হবে। বর্তমানে APSEZ-এর ১৫টি ভারতীয় বন্দর এবং টার্মিনাল রয়েছে, যার মোট স্থাপিত ক্ষমতা ৬৩৩ মিলিয়ন মেট্রিক টন। অর্থবর্ষ ২৫-এ কোম্পানিটি ৪৫০ মিলিয়ন মেট্রিক টন কার্গো পরিচালনা করেছিল এবং তার জাতীয় অংশীদারিত্ব ২৭ শতাংশ ছিল।
বিনিয়োগ কোথায় হবে
কোম্পানির সেপ্টেম্বর মাসের উপস্থাপনা (presentation) অনুযায়ী, অর্থবর্ষ ২৬-এর বিনিয়োগ পরিকল্পনা কয়েকটি অংশে ভাগ করা হয়েছে।
- বন্দরগুলিতে ৬,৫০০ থেকে ৭,০০০ কোটি টাকা।
- লজিস্টিকসে ২,৩০০ কোটি টাকা।
- নবায়নযোগ্য শক্তিতে ১,৫০০ কোটি টাকা।
- সামুদ্রিক পরিষেবাগুলিতে ৭০০ থেকে ৮০০ কোটি টাকা।
এগুলি ছাড়াও, অতিরিক্ত ৩০ হাজার কোটি টাকার একটি বড় অংশ মুন্দ্রা এবং ধামরায় বার্থ এবং টার্মিনাল সম্প্রসারণে ব্যয় করা হবে। অন্যদিকে, ভিজিনজাম বন্দরকে ট্রান্সশিপমেন্ট হাব (transshipment hub) হিসাবে আরও শক্তিশালী করার উপর জোর দেওয়া হবে। বিশেষ বিষয় হল, ভিজিনজাম চালু হওয়ার মাত্র নয় মাসের মধ্যে দশ লক্ষেরও বেশি টুয়েন্টি-ফুট ইকুয়ালেন্ট ইউনিটস অর্থাৎ TEU পরিচালনা করেছে।
প্রতিটি বন্দরে ক্যাবেক্স সাইকেল (Capex Cycle)
কোম্পানির সাথে যুক্ত একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন যে বর্তমানে প্রতিটি বড় বন্দর একটি বড় ক্যাবেক্স সাইকেল (মূলধন ব্যয় চক্র) থেকে যাচ্ছে। এর অর্থ হল আগামী বছরগুলিতে সেখানে ক্রমাগত সম্প্রসারণ এবং বিনিয়োগ প্রক্রিয়া চলতে থাকবে। যদিও APSEZ-এর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি জারি করা হয়নি।
আদানি গ্রিন এনার্জি পেল বড় আস্থা
আদানি গোষ্ঠীর আর একটি কোম্পানি আদানি গ্রিন এনার্জি লিমিটেড অর্থাৎ AGEL-ও একটি ভাল খবর পেয়েছে। কোম্পানিটি দুটি বড় রেটিং এজেন্সি থেকে স্টেবল আউটলুক (stable outlook) সহ AA রেটিং পেয়েছে। India Ratings and Research কোম্পানির রেটিং AA- থেকে বাড়িয়ে AA করেছে। অন্যদিকে, CRISIL-ও AGEL-কে AA/Stable রেটিং দিয়েছে। এই রেটিং বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি ইতিবাচক সংকেত বলে মনে করা হচ্ছে।
আদানি পোর্টসে সামান্য পতন
এই খবরগুলির সরাসরি প্রভাব শেয়ার বাজারেও দেখা যেতে পারে। আদানি পোর্টস এবং আদানি গ্রিন এনার্জি উভয় কোম্পানিই বিনিয়োগকারীদের নজরে থাকবে। বুধবার আদানি পোর্টসের শেয়ার সামান্য পতনের সাথে ১,৪০৫.৭০ টাকায় বন্ধ হয়েছিল। লেনদেনের সময় এটি ১,৩৯৬.০৫ টাকা পর্যন্ত নেমে গিয়েছিল। অন্যদিকে, আদানি গ্রিন এনার্জির শেয়ারে এক শতাংশের বেশি পতন দেখা গেছে। কোম্পানির শেয়ার ১.১৪ শতাংশ কমে ৮২৬.৪০ টাকায় বন্ধ হয়েছিল। লেনদেনের সময় এটি ৮২৫.৪০ টাকা পর্যন্ত গিয়েছিল।