কালিম্পং: উত্তরবঙ্গের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র কালিম্পং-এ আবারও ফিরছে এক অনন্য অভিজ্ঞতা। পুজোর সময় পর্যটকদের ভিড় বাড়তে শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে ফের চালু হচ্ছে ডেলোর প্যারাগ্লাইডিং পরিষেবা। অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীদের কাছে এটি এক বড় সুখবর। মাথাপিছু ৩৫০০ টাকার বিনিময়ে আকাশে উড়ে উপভোগ করা যাবে কাঞ্চনজঙ্ঘার ৩৬০° ভিউ। পর্যটন দফতরের দাবি, নতুন এই উদ্যোগে উত্তরবঙ্গের পর্যটনে যুক্ত হবে নতুন মাত্রা।
নির্দিষ্ট সময়ে পরিষেবা
কালিম্পং ডেলোর প্যারাগ্লাইডিং সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় মেনে পর্যটকরা এই অভিজ্ঞতা নিতে পারবেন। অনেক সময় ভিড় বেড়ে যাওয়ায় পর্যটকদের আগাম বুকিং করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, দুর্গাপুজোর সময়কালীন ভিড় সামলাতে বিশেষ সময়সূচিও তৈরি করা হয়েছে।
নিরাপত্তা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা
জিটিএ পর্যটন দফতরের ফিল্ড ডিরেক্টর দাওয়া গ্যালপো শেরপা জানিয়েছেন, "অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজমের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। আমরা চাই পর্যটকরা নিরাপদ পরিবেশে সেই অভিজ্ঞতা পান।" তাই প্রতিটি ফ্লাইটে থাকছে প্রশিক্ষিত ও অভিজ্ঞ পাইলট। বর্ষার মরশুমে দুর্ঘটনা এড়াতে বাড়তি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সুরক্ষা জ্যাকেট, হেলমেট এবং বিশেষ সরঞ্জাম বাধ্যতামূলক করা হয়েছে প্রত্যেক যাত্রীর জন্য।
খরচ কত?
এই রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতার জন্য মাথাপিছু খরচ ধরা হয়েছে ৩৫০০ টাকা। যদিও দাম তুলনামূলকভাবে কিছুটা বেশি মনে হতে পারে, পর্যটকরা বলছেন, আকাশের বুক থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ দৃশ্য দেখার অভিজ্ঞতার জন্য এই খরচ অমূল্য। স্থানীয় পর্যটন ব্যবসায়ীরা আশা করছেন, দাম সত্ত্বেও ভিড় হবে উপচে পড়া।
কাঞ্চনজঙ্ঘার ৩৬০° ভিউ
কালিম্পং থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘার দৃশ্য বরাবরই পর্যটকদের টানার বড় কারণ। তবে প্যারাগ্লাইডিংয়ের মাধ্যমে আকাশে ভেসে ৩৬০° ভিউ একেবারেই অন্য মাত্রা এনে দেবে। অনেক পর্যটক ইতিমধ্যেই এই অভিজ্ঞতাকে “জীবনের সেরা মুহূর্ত” বলে আখ্যা দিয়েছেন। ভোরবেলা কিংবা বিকেলের আলো-ছায়ায় পাহাড়ের গায়ে কাঞ্চনজঙ্ঘার সৌন্দর্য দেখে চোখ জুড়োবে দর্শকদের।
ভবিষ্যতের পরিকল্পনা: চুইখিমেও আসছে পরিষেবা
পর্যটন দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, খুব শিগগিরই চুইখিম এলাকাতেও শুরু হতে পারে প্যারাগ্লাইডিং পরিষেবা। ইতিমধ্যেই চলছে প্রশিক্ষণ ও ট্রায়াল ফ্লাইট। দফতরের আশা, এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে কালিম্পংয়ের পর্যটনে আরও বহুমুখীতা আসবে। উত্তরবঙ্গের সামগ্রিক অর্থনীতিতেও এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।
পর্যটক ও স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া
স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মতে, প্যারাগ্লাইডিং চালু হলে হোটেল, রেস্তোরাঁ এবং পরিবহন পরিষেবার চাহিদা আরও বাড়বে। পর্যটকরাও উচ্ছ্বসিত। কলকাতা থেকে আসা এক দম্পতি বলেন, শুধু কাঞ্চনজঙ্ঘা নয়, আকাশে ভেসে গোটা কালিম্পং শহরকেও অন্য রূপে দেখা যায়। এটা এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা।
অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজমে নতুন দিগন্ত
পর্যটন বিশেষজ্ঞদের মতে, অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজম বিশ্বজুড়ে ক্রমশই জনপ্রিয় হচ্ছে। কালিম্পং, দার্জিলিং, সিকিমের মতো পাহাড়ি এলাকায় প্যারাগ্লাইডিং, রিভার রাফটিং, ট্রেকিং ইত্যাদি কার্যক্রম পর্যটন শিল্পকে নতুন দিশা দেখাচ্ছে। উত্তরবঙ্গের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে কাজে লাগিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যটন মানচিত্রে নিজেদের জায়গা করে নিতে চাইছে জিটিএ।
পুজোর মরশুমে কালিম্পং পর্যটকদের জন্য সুখবর। ফের চালু হচ্ছে ডেলোর প্যারাগ্লাইডিং পরিষেবা। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত নির্দিষ্ট সময়ে পর্যটকরা আকাশে ভেসে উপভোগ করতে পারবেন মহিমান্বিত কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ সৌন্দর্য। খরচ মাথাপিছু ৩৫০০ টাকা। পর্যটন দফতরের উদ্যোগে থাকছে প্রশিক্ষণ, দক্ষ পাইলট ও পূর্ণাঙ্গ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আগামী দিনে চুইখিমেও চালু হতে পারে এই পরিষেবা।