ঐশ্বর্য রাই বচ্চনের অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না তাঁর নাম, ছবি বা কণ্ঠস্বর: দিল্লি হাইকোর্টের যুগান্তকারী রায়

ঐশ্বর্য রাই বচ্চনের অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না তাঁর নাম, ছবি বা কণ্ঠস্বর: দিল্লি হাইকোর্টের যুগান্তকারী রায়

বলিউড অভিনেত্রী ঐশ্বর্য রাই বচ্চনকে নিয়ে দিল্লি হাইকোর্ট এক গুরুত্বপূর্ণ রায় ঘোষণা করেছে। আদালত স্পষ্ট করেছে যে তাঁর অনুমতি ছাড়া কোনও ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল বা অনলাইন প্ল্যাটফর্ম তাঁর নাম, ছবি, কণ্ঠস্বর বা যেকোনো ধরনের এআই-জেনারেটেড কন্টেন্ট ব্যবহার করতে পারবে না।

ঐশ্বর্যকে নিয়ে দিল্লি হাইকোর্টের রায়: বলিউড অভিনেত্রী ঐশ্বর্য রাই বচ্চন সম্প্রতি দিল্লি হাইকোর্টে একটি আবেদন দাখিল করেছিলেন, যেখানে তিনি তাঁর নাম, ছবি, কণ্ঠস্বর এবং যেকোনো ধরনের এআই-জেনারেটেড কন্টেন্ট অনুমতি ছাড়া ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির দাবি জানিয়েছিলেন। আদালত এখন তাঁর পক্ষে একটি অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ জারি করে স্পষ্ট করেছে যে তাঁর অনুমতি ছাড়া কোনো ব্যক্তি, ওয়েবসাইট, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম বা অনলাইন চ্যানেল তাঁর নাম, ছবি বা কণ্ঠস্বরের কোনো ডিজিটাল বা এআই-জেনারেটেড কন্টেন্ট ব্যবহার করতে পারবে না।

হাইকোর্টের আদেশ

বিচারপতি তেজেস কারিয়া-র নেতৃত্বে একটি বেঞ্চ তার আদেশে বলেছে যে বিখ্যাত ব্যক্তিদের পরিচয় অপব্যবহার কেবল তাঁদের মর্যাদা এবং সম্মানে আঘাত হানে না, বরং অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবেও ক্ষতি করতে পারে। আদালত স্পষ্ট করেছে যে অবিলম্বে নিষেধাজ্ঞা জারি না করলে, কেবল ঐশ্বর্য রাই এবং তাঁর পরিবারের সম্মানই প্রভাবিত হবে না, বরং তাঁর ব্যক্তিগত অধিকারের লঙ্ঘনও ঘটবে। আদালত ডিজিটাল যুগে ব্যক্তিগত ও সর্বজনীন পরিচয় সুরক্ষার জন্য এই পদক্ষেপকে একটি গুরুত্বপূর্ণ নজির হিসেবে অভিহিত করেছে।

ঐশ্বর্য রাই তাঁর আবেদনে কী বলেছিলেন?

অভিনেত্রীর আবেদনে অভিযোগ করা হয়েছিল যে বেশ কয়েকটি ওয়েবসাইট এবং ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম তাঁর নাম এবং ছবি অনুমতি ছাড়াই ব্যবহার করছে। এছাড়াও, তাঁর নামে এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি অশ্লীল এবং অনুপযুক্ত বিষয়বস্তু ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। আবেদনে আরও বলা হয়েছিল যে এই ধরনের বিষয়বস্তু কেবল তাঁর ব্যক্তিগত জীবনকেই প্রভাবিত করছে না, বরং তাঁর কর্মজীবন এবং সামাজিক ভাবমূর্তিরও গুরুতর ক্ষতি করছে।

ব্যক্তিত্বের অধিকার (Right to Publicity) কী?

ব্যক্তিত্বের অধিকার, অর্থাৎ Right to Publicity, যেকোনো ব্যক্তিকে তাঁর নাম, কণ্ঠস্বর, ছবি, স্টাইল বা পরিচয়ের ওপর পূর্ণ অধিকার প্রদান করে। এর অর্থ হল, অন্য কোনো ব্যক্তি বা সংস্থা তাঁর অনুমতি ছাড়া এর বাণিজ্যিক ব্যবহার করতে পারবে না। ঐশ্বর্য রাই আদালত থেকে এই অধিকারগুলির সুরক্ষা এবং লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছিলেন।

ডিজিটাল বিশ্বে এআই এবং ডিপফেক প্রযুক্তির কারণে ব্যক্তিগত পরিচয়ের অপব্যবহারের ঘটনা বাড়ছে। বলিউড এবং হলিউড উভয় জগতেই এটি একটি গুরুতর সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

Leave a comment