আজমীর জেলার টাঙ্কাবাস গ্রামে ৬০ ফুট উঁচু জলরক্ষা ট্যাঙ্কে একটি ষাঁড় উঠে যাওয়ায় গ্রামে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। প্রশাসন দীর্ঘক্ষণ ধরে উদ্ধার অভিযান চালালেও, গভীর রাতে ষাঁড়টি নিজেই নিরাপদে নিচে নেমে আসে।
আজমীর: রাজস্থানের আজমীর জেলার সাভার উপ-বিভাগীয় এলাকার টাঙ্কাবাস গ্রামে রবিবার গ্রামবাসীরা এক অভিনব ঘটনায় জেগে ওঠেন। একটি ষাঁড় ৬০ ফুট উঁচু জলরক্ষা ট্যাঙ্কে উঠে যাওয়ায় পুরো এলাকায় চরম চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। যেহেতু এই ট্যাঙ্ক থেকেই গ্রামে জল সরবরাহ করা হয়, তাই এই অপ্রত্যাশিত ঘটনা প্রশাসন ও গ্রামবাসীদের উভয়ের জন্যই একটি চ্যালেঞ্জ তৈরি করে। প্রশাসন এবং সিভিল ডিফেন্স দল মিলে প্রায় ১২ ঘন্টা ধরে উদ্ধার অভিযান চালায়।
ট্যাঙ্কে ষাঁড় দেখে গ্রামে চাঞ্চল্য
সকালে গ্রামবাসীরা যখন ট্যাঙ্কে ষাঁড়টিকে দেখতে পান, তখন সবাই হতবাক হয়ে যান এবং দ্রুত চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। বিপুল সংখ্যক গ্রামবাসী ট্যাঙ্কের কাছে জড়ো হন এবং এই অভিনব পরিস্থিতি দেখে তারা অবিলম্বে প্রশাসনকে খবর দেন। গ্রামবাসীরা আশঙ্কা করছিলেন যে ষাঁড়টি ট্যাঙ্ক থেকে লাফ দিতে পারে এবং এর ফলে ষাঁড়টির পাশাপাশি ট্যাঙ্কটিরও ক্ষতি হতে পারে।
সাভার থানা পুলিশের এএসআই ওমপ্রকাশ দাইমা এবং পাটোয়ারী ভুপেন্দ্র খাঠিক ঘটনাস্থলে পৌঁছান। তারা অবিলম্বে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন এবং প্রশাসনকে রিপোর্ট পাঠান। স্থানীয় লোকেরা পুলিশের কাছে আবেদন করেন যে ষাঁড়টিকে নিরাপদে নিচে নামানো হোক যাতে কোনও বড় দুর্ঘটনা এড়ানো যায়।
সিভিল ডিফেন্স দলের ষাঁড়টিকে নামানোর প্রচেষ্টা
ঘটনার তীব্রতা বিবেচনা করে সিভিল ডিফেন্স দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। দলে ছিলেন শয়তান সিং मीणा, আয়ুষ কুমার मीणा, নওরতমল কাহার এবং সুরেশ কাহার। তারা সিঁড়ি বেয়ে ট্যাঙ্কে ওঠেন এবং ষাঁড়টিকে নিচে নামানোর চেষ্টা করতে থাকেন।
তবে, দলের সদস্যরা ষাঁড়ের কাছে যেতেই এটি হঠাৎ ভয় পেয়ে লাফ দেওয়ার চেষ্টা করে। এতে দলটি দ্রুত পিছু হটতে বাধ্য হয়। দলটি তাদের সুরক্ষা বিবেচনা করে উদ্ধার অভিযান স্থগিত করে এবং উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাহায্য চাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
আজমীর থেকে ক্রেন ডাকা হল
ঘটনার তীব্রতা বিবেচনা করে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা আজমীর থেকে ক্রেন ডাকার নির্দেশ দেন। পাটোয়ারী ভুপেন্দ্র খিঞ্চি কেকড়ি পৌরসভার ইও-কে এই বিষয়ে অবহিত করেন। তবে, ঘটনার দুই ঘন্টা পরও কোনো ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে পৌঁছাননি।
এতে গ্রামবাসীদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ে এবং তারা প্রশাসনের কাছে দ্রুত পদক্ষেপের দাবি জানায়। পরে সাভার উপ-বিভাগীয় আধিকারিক আস্থা শর্মা ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। তাঁর আগমন গ্রামবাসীদের জন্য স্বস্তির কারণ হলেও, তবুও অন্ধকার এবং ষাঁড়ের অস্থিরতার কারণে উদ্ধার অভিযান চ্যালেঞ্জিং হয়ে থাকে।
গভীর রাতে ষাঁড় নিজেই নেমে আসে
সন্ধ্যা বাড়ার সাথে সাথে এবং অন্ধকার ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে উদ্ধার অভিযানে আরও বাধা আসে। পশুচিকিৎসা বিভাগের কোনো কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে না পৌঁছানোয় ষাঁড়টিকে নিরাপদে নামানোর প্রক্রিয়া কঠিন হয়ে পড়ে।
তবে প্রায় ১২ ঘন্টা পর, গভীর রাতে তিনটের সময়, ষাঁড়টি নিজেই নিচে নেমে আসে। গ্রামবাসী এবং প্রশাসন উভয়েই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন। এই ঘটনা কেবল মানুষের জন্য একটি বিস্ময়কর দিনই তৈরি করেনি, বরং প্রশাসনের প্রস্তুতি এবং দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার উপরও প্রশ্ন তুলেছে।