থাইল্যান্ডের নতুন প্রধানমন্ত্রী হলেন অনুথিন চারনভিরাকুল। তিনি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী পেতোংটার্ন শিনাওয়াত্রার উত্তরসূরি হয়েছেন। দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কর্তব্য পালনের অঙ্গীকার করেছেন।
ব্যাংকক: থাইল্যান্ডে নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করা হয়েছে। রবিবার রাজকীয় সম্মতি প্রাপ্তির পর, বর্ষীয়ান নেতা অনুথিন চারনভিরাকুলকে দেশটির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে। এই পরিবর্তন তখনই আসে যখন তার পূর্বসূরি, পেতোংটার্ন শিনাওয়াত্রাকে আদালতের নির্দেশে পদ থেকে সরানো হয়। পেতোংটার্ন শিনাওয়াত্রা থাইল্যান্ডের সবচেয়ে তরুণ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, কিন্তু তার কার্যকাল মাত্র এক বছরের ছিল।
পেতোংটার্ন শিনাওয়াত্রাকে কেন পদ থেকে সরানো হলো
পেতোংটার্ন শিনাওয়াত্রাকে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার কারণ ছিল প্রতিবেশী কম্বোডিয়ার সিনেটর প্রধান हुन সেনের সাথে একটি ফাঁস হওয়া ফোন কল, যাকে নৈতিক নিয়মের লঙ্ঘন হিসেবে দেখা হয়েছিল। আদালত এটিকে গুরুতরভাবে নিয়ে তাকে পদ থেকে বরখাস্ত করে। এই বিতর্কের পর, পেতোংটার্ন তার পদত্যাগ করেন এবং জোট সরকার থেকে তার দলের সমর্থন প্রত্যাহার করে নেন।
এই ঘটনা থাইল্যান্ডে রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি করে। দেশের রাজনীতিতে তরুণ নেতাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং জোট সরকারের নাজুক অবস্থা এই পরিস্থিতিকে প্রভাবিত করেছে।
অনুথিন চারনভিরাকুলের রাজনৈতিক যাত্রা
৫৮ বছর বয়সী অনুথিন চারনভিরাকুল দীর্ঘকাল ধরে থাইল্যান্ডের রাজনীতিতে সক্রিয়। তিনি এর আগে পেতোংটার্ন শিনাওয়াত্রার মন্ত্রিসভায় উপ-প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তার অভিজ্ঞতা এবং রাজনৈতিক দক্ষতা তাকে এই সংকটকালে দেশের নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্য করে তুলেছে।
অনুথিন চারনভিরাকুলের নেতৃত্বে তার ভূমিজাইথাই পার্টি ব্যাংককের সদর দফতরে নিয়োগপত্র হস্তান্তর করে। এই অনুষ্ঠানে জোট সরকারে অংশগ্রহণকারী সম্ভাব্য দলগুলোর বর্ষীয়ান সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।
শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান এবং প্রধান ঘোষণা
তার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে, অনুথিন চারনভিরাকুল বলেন, "আমি শপথ করছি যে আমি আমার সাধ্যমত, সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে আমার দায়িত্ব পালনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।"
তিনি জনগণকে আশ্বাস দেন যে তার সরকার দেশের সমৃদ্ধি এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষায় কাজ করবে। এছাড়াও, তিনি জোট সরকারের সকল দলের সাথে একযোগে কাজ করে জাতীয় স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার অঙ্গীকার করেন।
থাইল্যান্ডে রাজনৈতিক পরিস্থিতি
পেতোংটার্ন শিনাওয়াত্রাকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর থাইল্যান্ডে রাজনৈতিক পরিবেশ অত্যন্ত উত্তেজনাময় ছিল। একজন তরুণ প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ এবং নতুন সরকারের গঠন দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতার ইঙ্গিত দিয়েছিল।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ফাঁস হওয়া ফোন কল এবং নৈতিক নিয়মের লঙ্ঘন—এই ধরনের ঘটনাগুলো থাইল্যান্ডে রাজনৈতিক সচেতনতাকে উৎসাহিত করেছিল। এর ফলে সরকারর দায়িত্ব এবং নেতাদের স্বচ্ছতা নিয়ে জনগণের মধ্যে আলোচনা বেড়েছে।