ভারতের তুলনায় কম শুল্কে রেহাই বাংলাদেশের পণ্যে স্বস্তি পাকিস্তানের দিকেও 'দয়া' ট্রাম্পের!

ভারতের তুলনায় কম শুল্কে রেহাই বাংলাদেশের পণ্যে স্বস্তি পাকিস্তানের দিকেও 'দয়া' ট্রাম্পের!

ভারতের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক, চাপে মোদী সরকার

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফের একবার শুল্কের মার দিয়ে উত্তপ্ত করে তুললেন বিশ্ব বাণিজ্যের মঞ্চ। ভারত থেকে আমদানি হওয়া সমস্ত পণ্যের উপর তিনি ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপানোর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন। এতে একদিকে যেমন ভারতের রফতানি শিল্প চরম চাপে পড়বে, তেমনই আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে এ সিদ্ধান্তের তাৎপর্য নিয়ে শুরু হয়েছে জোর চর্চা।

বাংলাদেশ পেল কূটনৈতিক ছাড়, শুল্ক কমিয়ে ২০ শতাংশ

অন্যদিকে, বাংলাদেশের জন্য এলো স্বস্তির খবর। এপ্রিল মাসে যেখানে ট্রাম্প প্রশাসন বাংলাদেশের উপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক চাপানোর কথা বলেছিল, সেখানে জুলাইয়ে তা কমিয়ে আনা হয় ৩৫ শতাংশে। কিন্তু শেষমেশ ট্রাম্প জানিয়ে দেন, বাংলাদেশি পণ্যের উপর শুল্ক হবে মাত্র ২০ শতাংশ। ফলে মোট ১৭ শতাংশ শুল্ক কমানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আনন্দ প্রকাশ করে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তিকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস একে "কূটনৈতিক সাফল্য" বলে ব্যাখ্যা করেছেন।

‘অসাধারণ কৌশলগত দক্ষতা’, স্বস্তির শ্বাস ইউনূসের গলায়

শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে ইউনূস বলেন, আমাদের আলোচকরা যেভাবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কৌশলগত আলোচনায় এগিয়েছেন, তা অনবদ্য। আমাদের স্বার্থ রক্ষার বিষয়ে তাঁরা অটল থেকেছেন। ট্রাম্পের ঘোষণায় এটা স্পষ্ট যে, যুক্তরাষ্ট্র এখন বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও মজবুত করতে চাইছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এর পিছনে রয়েছে মার্কিন বাজারে সস্তা গার্মেন্টস ও তৈরি পোশাক শিল্পের উপর নির্ভরতা।

পাকিস্তানেও শুল্ক কমিয়ে ১৯ শতাংশ, জ্বালানি চুক্তির ইঙ্গিত

শুধু বাংলাদেশ নয়, পাকিস্তানও শুল্ক ছাড়ের তালিকায় রয়েছে। ২ এপ্রিল যেখানে পাকিস্তানি পণ্যের উপর ২৯ শতাংশ শুল্ক ঘোষণা করেছিলেন ট্রাম্প, ৩১ জুলাই তা কমিয়ে ১৯ শতাংশ করা হয়। অর্থাৎ ভারতের তুলনায় পাকিস্তান ৬ শতাংশ কম শুল্ক দিচ্ছে। এর পাশাপাশি ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন, পাকিস্তানে ‘তৈলভান্ডার’ গড়ে তোলার বিষয়ে। যদিও পাকিস্তান এখনও পর্যন্ত তার প্রয়োজনীয় জ্বালানি তেলের বড় অংশই অন্য দেশ থেকে আমদানি করে।

বিশেষজ্ঞদের দাবি— ‘এটা ভারতকে চাপে রাখার কৌশল’

এই ঘটনাপ্রবাহকে ঘিরে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিশেষজ্ঞদের একাংশের মত, ট্রাম্পের এই শুল্ক নীতি আসলে মোদী সরকারের উপর কৌশলগত চাপ তৈরি করতেই পরিকল্পিত। যেভাবে প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলিকে স্বল্প শুল্কের সুবিধা দিয়ে ভারতের উপর কড়াকড়ি রাখা হয়েছে, তা থেকে পরিষ্কার—ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের জায়গায় এখন ‘প্রেশার পলিটিক্স’ খেলছেন ট্রাম্প।

আফগানিস্তান ও শ্রীলঙ্কার পণ্যেও কম শুল্ক

এ তালিকায় রয়েছে আরও দুই দেশের নাম—আফগানিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। আফগানিস্তানের পণ্যের উপর শুল্ক নির্ধারিত হয়েছে ১৫ শতাংশ এবং শ্রীলঙ্কার ক্ষেত্রে তা ২০ শতাংশ। অর্থাৎ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারতই এখন সবচেয়ে বেশি শুল্ক দিচ্ছে মার্কিন বাজারে।

Leave a comment