আররিয়ার জোকিহাটে ট্রাকের ধাক্কায় ই-রিকশা চালকের মৃত্যু। ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান এবং পুলিশের গাড়িতে ভাঙচুর করেন। বিধায়কের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে এবং যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
আররিয়া: বিহারের আররিয়া জেলার জোকিহাটে সোমবার এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় এক ই-রিকশা চালকের মৃত্যু হয়েছে, যা এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। সূত্রানুসারে, আররিয়া-সিলিগুড়ি জাতীয় সড়ক ৩৭ ই-তে একটি দ্রুতগামী ট্রাক ধাক্কা মারে ই-রিকশাটিকে, যার ফলে চালক ঘটনাস্থলেই নিহত হন। ই-রিকশায় থাকা এক মহিলা গুরুতর আহত হন, যাকে দ্রুত জোকিহট রেফারেল হাসপাতালে এবং পরে পূর্ণিয়ার একটি উচ্চতর চিকিৎসা কেন্দ্রে পাঠানো হয়।
দুর্ঘটনার পরপরই স্থানীয় জনগণ ক্ষোভে ফেটে পড়ে এবং মৃতের দেহ রাস্তায় রেখে বিক্ষোভ শুরু করে। বিক্ষোভকারীরা প্রায় চার ঘণ্টা ধরে রাস্তা অবরোধ করে রাখে, যার ফলে জাতীয় সড়কে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয় এবং সাধারণ যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
দুর্ঘটনার পর গ্রামবাসীদের পুলিশের উপর হামলা
দুর্ঘটনার পর ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা পুলিশকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে এবং ঘটনাস্থলে পৌঁছানো পুলিশের গাড়িতে ভাঙচুর চালায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, সড়ক দুর্ঘটনা রোধে প্রশাসন থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। পুলিশ এবং স্থানীয় প্রশাসনের উপস্থিতিও গ্রামবাসীদের শান্ত করতে পারেনি এবং তারা দীর্ঘক্ষণ ধরে রাস্তা অবরোধ করে রাখে।
পরিস্থিতি শান্ত হয় যখন বিহার সরকারের প্রাক্তন মন্ত্রী এবং স্থানীয় বিধায়ক শাহনাওয়াজ আলম ঘটনাস্থলে পৌঁছান। তিনি বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলে তাদের শান্ত করেন এবং মৃতের পরিবারকে ২৫,০০০ টাকা আর্থিক সাহায্য দেওয়ার ঘোষণা করেন। এরপর সন্ধ্যায় সড়ক যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়।
জোকিহাটে ফ্লাইওভার নির্মাণের দাবি ফের জোরালো
এই দুর্ঘটনার পর জোকিহাটে ফ্লাইওভার নির্মাণের দাবি আরও জোরদার হয়েছে। বিধায়ক শাহনাওয়াজ আলম জানিয়েছেন যে, জাতীয় সড়ক ৩৭ ই-এর সংলগ্ন জোকিহাট বাজার একটি অত্যন্ত জনবহুল এলাকা, যেখানে প্রায়শই দুর্ঘটনা ঘটে। তিনি আরও বলেন, ফ্লাইওভার নির্মাণের দাবি মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের উন্নয়ন যাত্রার সময়েও উঠেছিল।
বিধায়ক জানিয়েছেন, ফ্লাইওভার নির্মাণের প্রশাসনিক প্রক্রিয়া চলছে এবং শীঘ্রই এর নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাঁর মতে, ফ্লাইওভার নির্মিত হলে কেবল যোগাযোগ ব্যবস্থাই উন্নত হবে না, বরং ভবিষ্যতের দুর্ঘটনাও হ্রাস পাবে।
বিধায়কের কাছ থেকে মৃতের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা
বিধায়ক শাহনাওয়াজ আলম মৃতের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন এবং ব্যক্তিগতভাবে ২৫,০০০ টাকা আর্থিক সাহায্য দিয়েছেন। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন যে, পরিবার সরকারি সুযোগ-সুবিধা এবং অন্যান্য সহায়তাও পাবে। পুলিশও ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে এবং ট্রাক চালকের পরিচয় শনাক্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।
প্রাক্তন সাংসদ সরফরাজ আলমও ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহত মহিলার খোঁজখবর নেন। প্রশাসন এই দুর্ঘটনার পর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং সড়ক দুর্ঘটনা রোধে নিয়মকানুন কঠোরভাবে পালনের পরিকল্পনা করেছে।