গাজা যুদ্ধ: হামাসকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের শেষ সতর্কবার্তা, জিম্মি মুক্তি চেয়েছেন

গাজা যুদ্ধ: হামাসকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের শেষ সতর্কবার্তা, জিম্মি মুক্তি চেয়েছেন

আমেরিকান রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজা যুদ্ধের মধ্যে হামাসকে শেষ সতর্কবার্তা দিয়েছেন। তিনি ট্রুথ সোশ্যাল-এ বলেছেন যে জিম্মিদের মুক্তি দিতে হবে। ইসরায়েল এবং হামাস যুদ্ধের কারণে হাজার হাজার মৃত্যু হয়েছে এবং সংকট বাড়ছে।

Trump Warning: গাজা উপত্যকায় (Gaza Strip) ইসরায়েল (Israel) এবং হামাসের (Hamas) মধ্যে যুদ্ধ প্রায় দুই বছর পরও শেষ হয়নি। ৭ অক্টোবর, ২০২৩-এ হামাসের হামলার মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া এই সংঘাত এখন পর্যন্ত হাজার হাজার জীবন কেড়ে নিয়েছে। এরই মধ্যে, আমেরিকান রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump) শনিবার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যাল (Truth Social)-এ পোস্ট করে হামাসকে তাঁর শেষ সতর্কবার্তা জারি করেছেন।

ট্রাম্প স্পষ্ট বলেছেন যে এখন সময় এসেছে হামাসের সকল জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার। তিনি এটিকে তাঁর শেষ সতর্কবার্তা হিসেবে উল্লেখ করেছেন এবং বলেছেন যে এর পরে আর কোনও নতুন বিজ্ঞপ্তি বা সতর্কতা জারি করা হবে না।

ট্রাম্পের বক্তব্য

ট্রাম্প তাঁর পোস্টে লিখেছেন- 

"সবাই চায় জিম্মিরা ঘরে ফিরুক। সবাই চায় এই যুদ্ধ শেষ হোক। ইসরায়েলিরা আমার শর্ত মেনে নিয়েছে। এখন হামাসেরও মেনে নেওয়ার সময় এসেছে। আমি হামাসকে মেনে না নেওয়ার পরিণতির বিষয়ে সতর্ক করেছি। এটি আমার শেষ সতর্কবার্তা। এখন এমন কোনও সতর্কতা থাকবে না। এই বিষয়ে মনোযোগ দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।"

যুদ্ধ কীভাবে শুরু হয়েছিল

এই সমগ্র যুদ্ধের শুরু হয়েছিল ৭ অক্টোবর, ২০২৩-এ। সেই দিন হামাসের যোদ্ধারা ইসরায়েলের (Israel) সীমান্ত অতিক্রম করে একটি বড় হামলা চালায়। এই হামলায় ১,০০০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। হামাস এই সময় কেবল আক্রমণই করেনি, বরং শত শত মানুষকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে গিয়েছিল।

হামাসের এই গণহত্যা (massacre)-র নিন্দা করেছিল গোটা বিশ্ব। এরপর ইসরায়েল হামাসের বিরুদ্ধে ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করে।

এখন পর্যন্ত মৃত্যু

হামাসের পক্ষ থেকে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৬৩ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি (Palestinians) নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে, প্রায় ১,৬০,৯১৪ জন আহত হয়েছেন। অবিরাম বোমা হামলা এবং লড়াই গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে।

অন্যদিকে, ইসরায়েলের মতে, হামাসের অনেক ঘাঁটি ধ্বংস করা হয়েছে এবং তাদের সামরিক সক্ষমতা (military capability) অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়েছে। কিন্তু সংঘাত এখনও শেষ হয়নি।

জিম্মি সমস্যা

হামাস যখন ইসরায়েলে আক্রমণ করেছিল, তখন তাদের যোদ্ধারা শত শত মানুষকে জিম্মি করেছিল। এদের মধ্যে ইসরায়েলি নাগরিক সহ অন্যান্য দেশের লোকেরাও ছিল। কিছু লোককে আলোচনার মাধ্যমে এবং আন্তর্জাতিক চাপের পর মুক্তি দেওয়া হয়েছে, কিন্তু অনেকেই মারা গেছেন।

ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থাগুলির মতে, এখনও প্রায় ৪৮ জন জিম্মি হামাসের দখলে রয়েছে। এদের মধ্যে প্রায় ২০ জন জীবিত। এই সমস্যাটিই এই সমগ্র সংঘাতের সবচেয়ে বড় মানবিক সংকট (humanitarian crisis) হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ট্রাম্পের কঠোরতা

ডোনাল্ড ট্রাম্প এর আগেও বহুবার হামাসকে সতর্ক করেছিলেন। কিন্তু এবার তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন যে এটি তাঁর শেষ সতর্কবার্তা। এতে স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, যদি হামাস দ্রুত পদক্ষেপ না নেয়, তবে আমেরিকা ও ইসরায়েল উভয়েই কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারে।

আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে (international politics) এই বক্তব্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হচ্ছে। কারণ একদিকে যেখানে সারা বিশ্ব যুদ্ধবিরতির (ceasefire) দাবি করছে, অন্যদিকে জিম্মিদের বিষয়টি ক্রমাগত চাপ সৃষ্টি করছে।

বৈশ্বিক প্রতিক্রিয়া

জাতিসংঘ (United Nations) এবং বহু দেশ গাজায় চলমান সংঘাত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। মানবিক সংস্থাগুলি যুদ্ধ বন্ধ এবং নাগরিকদের নিরাপত্তার উপর জোর দিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (European Union), আরব লীগ (Arab League) এবং অন্যান্য বহু দেশ জিম্মিদের মুক্তিকে অগ্রাধিকার দিয়েছে।

কিন্তু ইসরায়েলের বক্তব্য হলো, যতক্ষণ না হামাস সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হচ্ছে, ততক্ষণ অভিযান চলবে। অন্যদিকে, হামাসের অভিযোগ, ইসরায়েল গাজার সার্বভৌমত্ব (sovereignty) পদদলিত করেছে এবং ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘন (human rights violations) করছে।

Leave a comment