আরওয়ালের কस्तুর্বা গান্ধী বালিকা আবাসিক বিদ্যালয়ে ছাত্রীদের দিয়ে অনৈতিক ও ব্যক্তিগত কাজ করানোর গুরুতর অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিও এই ঘটনাকে সামনে এনেছে, যা বালিকাদের সুরক্ষা ও শিক্ষার উপর প্রশ্ন তুলেছে।
আরওয়াল: বিহারের আরওয়াল জেলার কস্তুর্বা গান্ধী বালিকা আবাসিক বিদ্যালয়, ওলিদাদ, কেলের-এ পড়া ছাত্রীদের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে, যা শিক্ষা বিভাগ এবং স্থানীয় প্রশাসনের উদ্বেগ বাড়িয়ে তুলেছে। ভাইরাল ভিডিওতে ছাত্রীদের তাদের প্রধান শিক্ষিকা বিনিতা কুমারীকে তেল মালিশ ও মেহেদি লাগাতে দেখা গেছে। এর পাশাপাশি ছাত্রীরা প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন, ব্যক্তিগত কাজ করানো এবং স্কুলের সম্পদ অপব্যবহারের মতো গুরুতর অভিযোগ এনেছে।
ছাত্রীদের অভিযোগ, পড়াশোনার পরিবর্তে তাদের রান্না করা, কাপড় ধোয়া, থালা-বাসন পরিষ্কার করা এবং এমনকি চুল রং করার মতো কাজ করানো হয়। এই ঘটনা স্কুলের প্রশাসনিক ও শিক্ষা ব্যবস্থার দুর্বলতা প্রকাশ করেছে এবং বালিকাদের সুরক্ষার উপর গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে।
প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে জোর করে কাজের লোক বানানোর অভিযোগ
ছাত্রী প্রভা কুমারী, সুহানী কুমারী, সরস্বতী কুমারী এবং অঞ্জুর মতে, “আমরা পড়াশোনার জন্য এসেছি, কিন্তু প্রধান শিক্ষিকা আমাদের কাজের লোক বানিয়ে দিয়েছেন। ক্লাসরুমে বিছানা পেতে ম্যাসাজ করানো, রান্না করা এবং অন্যান্য ব্যক্তিগত কাজ করানো সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
ছাত্রীরা আরও অভিযোগ করেছে যে প্রধান শিক্ষিকা তাঁর পরিবার ও পুত্রকেও হোস্টেলে রাখেন এবং হোস্টেলের খাদ্য সামগ্রীর ব্যক্তিগত ব্যবহার করেন। লাগাতার নির্যাতন ও ভয়ের কারণে অনেক ছাত্রী স্কুল ছেড়ে দিয়েছে, অন্য ছাত্রীদের অভিভাবকরাও সন্তানদের বাড়ি ফিরিয়ে আনার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হলো ভিডিও
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে যে প্রধান শিক্ষিকা ছাত্রীদের দিয়ে ব্যক্তিগত কাজ করাচ্ছেন। ভিডিওতে ছাত্রীদের দ্বারা করা তেল মালিশ এবং অন্যান্য কাজ প্রধান শিক্ষিকার অনুচিত আচরণকে প্রকাশ করে।
বিদ্যালয়ের পরিবেশ সম্পূর্ণভাবে বিশৃঙ্খল এবং পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গেছে। ছাত্রীদের মতে, প্রধান শিক্ষিকা প্রায়শই ক্লাস ছেড়ে হোস্টেলে চলে যান, যার ফলে শিক্ষার মান ও স্কুলের শৃঙ্খলাজনিত পরিস্থিতি প্রভাবিত হচ্ছে।
প্রধান শিক্ষিকার উত্তর এবং শিক্ষা বিভাগের তদন্ত
প্রধান শিক্ষিকা বিনিতা কুমারী সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন যে এই অভিযোগগুলি ভিত্তিহীন এবং শুধুমাত্র স্কুলের সুনাম নষ্ট করার জন্য তাঁর বিরুদ্ধে ছড়ানো হচ্ছে।
বিভাগীয় কর্মকর্তা অঞ্জু কুমারী জানিয়েছেন যে দুই দিন আগে অভিযোগ পাওয়া গেছে এবং ঘটনার তদন্ত করা হবে। যদি অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হয়, তবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শিক্ষা বিভাগ ছাত্রীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার এবং স্কুল প্রশাসনের জবাবদিহিতা নির্ধারণ করার আশ্বাস দিয়েছে।